Riya Ganguly Divorce : বাংলা টেলিভিশনের পরিচিত মুখ রিয়া গঙ্গোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে নিজেই বিবাহবিচ্ছেদের কথা জানিয়েছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইনের তরফে রিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে কেন এত বড় সিদ্ধান্ত অভিনেত্রীর? রিয়া বলেন, 'একটা বাচ্চাকে বড় করতে মা-বাবার সমান ভূমিকা দরকার। সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় একটা সিস্টেমের মধ্যে দুজনকে চলতে হয়। যেটা বাচ্চারা ছোট থেকে ফলো করে বড় হয়। সেই সিস্টেমটাই যদি ভেঙে যায় তাহলে জীবনে পরিস্থিতি বুঝে কঠিন হলেও নিতে হয়'।
আরও বলেন, 'ওরা আমাদের পরবর্তী জেনারেশন। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে আমাদের কাছে কিন্তু, অনেক অপশন আছে। ওদের কাছে কমিটমেন্ট, রিলেশনশিপ, পেরেন্টহুডের ডেফিনেশনটাই বদলে যাবে। আমি নয়ের দশকের মেয়ে হয়ে মা-বাবার মধ্যে বন্ডিং দেখেছি। ভেবেছিলাম আমাদের মধ্যেও সেটা থাকবে। কিন্তু, মতোবিরোধের জন্য সেটা সম্ভব হল না। তাই পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় রেখেই সম্পূর্ণভাবে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আলোচনার মাধ্যমেই হবে। পরিবারের কাউকে আমরা এই বিষয়ে জড়াতে চাই না। প্রেমের সময় তো আমরা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তাই এখনও নিজেদেরটা নিজেরাই সামলাব'।
রিয়ার সংযোজন, 'ডিভোর্স না পাকাপাকি সেপারেশন সেই বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নিই নি। যা হবে সন্তানের কথা ভেবেই হবে। বাচ্চাদের নিয়ে আমি সাত বছর আলাদাই থাকি। সেটা অবশ্য আমার কাজের জন্য। শ্বশুরবাড়ি থেকে কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতটা সম্ভব হত না। ও দেখা করে যেত। শ্বশুরবাড়িতে কিছু সমস্যাও ছিল। মেয়েরা বিয়ের পর কাজ করবে এটা মেনে নিতে পারে না। বাড়ির বউ মানেই বাচ্চা মানুষ করবে। আমিও তো নিজের এই জায়গাটা ১৪ বছর পরিশ্রম করে তৈরি করেছি। জীবনে নিজে ভাল না থাকলে কাছের মানুষকে ভাল রাখা যায় না'।
সম্পর্ক প্রসঙ্গে রিয়ার মত, 'সম্পর্ক ভাল রাখতে গেলে পরস্পরকে সময়, সম্মান দিতে হয়। আরল যেটা সবচেয়ে জরুরি তা হল ভালোবাসা। যেটার অভাব আমি বুঝেছি। জীবনটা কম্প্রোমাইজ করে চলে না, স্যক্রিফাইজ করা যায়, যা আমি করেছি। কিন্তু, কিছু লাভ হল না। তিক্ততার চরম পর্যায়ে যাওয়ার আগেই শেষটা ভালো হোক, সেটাই চাই'।
অভিনেত্রীর রিয়া তাঁর স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে পালটা কয়েকটি জিনিস জানতে চেয়েছেন। 'প্রথমত, আমার স্বামী অনেক অভিযোগ এনেছে যে আমি নাকি মানসিক রোগী। যদি সত্যিই সেটা হত তাহলে এত বছর কর্মক্ষেত্রে কেউ কখনও সেটা বোঝেনি? দ্বিতীয়ত, আমার যদি সত্যিই মাল্টিপল ডিসঅর্ডার থাকত তাহলে সন্তানদের কী করে আমার ভরসায় এতগুলো বছর উলটো দিকের মানুষটা রেখে দিল? তৃতীয়ত, যদি মানসিক সমস্যা থাকত তাহলে একজন জীবনসঙ্গী হিসেবে স্ত্রীর চিকিৎসা কেন করাল না? মিথ্যে দিয়ে তো জীবন চলে না'।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ দুপক্ষেরই হতে পারে তবে অপরাধপ্রবণতা পুরুষদের অনেক বেশি থাকে : সুজয় প্রসাদ
'বাবা হিসেবে বাচ্চাদের যে সময় দিত সেটা মোটেই পর্যাপ্ত ছিল না। যাদের বাবা বাইরে থাকে সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু, বাবা থেকেও নেই, এটা মেনে নেওয়া যায় না। দায়িত্ব দুজনকেই নিতে হয়। শুধু মোটা টাকা দিলেই বাবার দায়িত্ব পালন করা হয় না। সন্তানকে সুন্দর জীবন দিতে গেলে বাবা-মায়ের জীবনটা সুন্দর হতে হয়। একটা ছেলে তাঁর বাবাকে দেখেই নারীদের সম্মান করতে শেখে। আমি চাই না আমার সন্তান বড় হয়ে কোনও মেয়ের আঁচল টানুক'।