scorecardresearch

কেন উত্তমকুমারের স্ত্রীর আদলে চট্টোপাধ্যায় বাড়ির লক্ষ্মী প্রতিমা তৈরি হয়?

পুজোর আগের দিন রাত্রে বাড়ির ছেলে-মেয়েরা কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা নিয়ে আসনে। সাদা-লাল পাড় তাঁতের শাড়িতেই তিনি আসেন চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে।

উত্তম কুমারের বাড়ির লক্ষ্মী পুজো। ফোটো- সংগৃহীত
উত্তম কুমারের বাড়ির লক্ষ্মী পুজো। ফোটো- সংগৃহীত

মহানায়ক উত্তমকুমার তার বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর শুরু করেন তা প্রায় চল্লিশ বছর আগে। তাঁর প্রয়াণের পরও সেই ঐতিহ্য অব্যাহত। উত্তমকুমারের নাতি-নাতনি গৌরব, নবমিতা ও মৌমিতার উপরই পুজোর সমস্ত দায়িত্ব।সময়টা ১৯৫০, ছেলে গৌতম জন্মানোর পর মহানয়ক ভবানীপুরে গিরিশ মুখার্জ্জি রোডের চট্টোপাধ্যায় পরিবারে শুরু করলেন লক্ষ্মীর আরাধনা। সেই জৌলুসে এতটুকু ভাটা পড়তে দেননি চট্টোপাধ্যায় পরিবার।

তবে এ বাড়ির লক্ষ্মী প্রতিমা মুখ কিন্তু অন্যরকম। উত্তমকুমারের স্ত্রী গৌরী দেবীর মুখের আদলে তৈরি লক্ষ্মী প্রতিমা। কিন্তু কেন? শোনা যায়, ‘যদুভট্ট’ ছবির শুটিংয়ের জন্য সরস্বতী প্রতিমা গড়ছিলেন নিরঞ্জন পাল। সেই মূর্তি বেজায় পছন্দ হয় মহানায়কের।পরে তিনি নিরঞ্জন পালকেই বায়না দেন বাড়ির লক্ষ্মী প্রতিমা গড়ার।

আরও পড়ুন, টেলিপর্দায় দেবী লক্ষ্মী চরিত্রে নজর কেড়েছেন যে অভিনেত্রীরা

”সেই কারণেই শিল্পী উত্তমকুমারের খোঁজ করতে তাঁর বাড়িতে যান এবং সেখানেই ঘোমটার আড়ালে গৌরী দেবীর মুখ দেখে মোহিত হন।তাঁর চোখে লক্ষ্মী প্রতিমার চিত্র তৈরি হয়ে যায়।পরবর্তীতে উত্তমকুমারের সঙ্গে কথা বলে চিরাচরিত ছাঁচ ভেঙে গৌরীদেবীর অবয়বে তৈরি করেছিলেন লক্ষ্মী মূর্তি,” বলছিলেন নবমিতা চট্টোপাধ্যায়।তাই উত্তমকুমার নয় প্রতিমা শিল্পীর কারণেই এই ট্রাডিশন।

উত্তমকুমারের তিন নাতি-নাতনি- মৌ (বাঁদিকে), গৌরব (মাঝে), নবমিতা (ডানদিকে)। ফোটো- সংগৃহীত

আরও পড়ুন, বিয়ে করতে চলেছেন দেবপর্ণা-শুভ্রজ্যোতি, সোশাল মিডিয়ায় বিশেষ বার্তা

এই বাড়িতে মা সাজেন সোনার গয়না ও বেনারসী শাড়িতে। আগে নিরঞ্জন পাল এই দায়িত্ব পালন করতেন, তবে বছর কুড়ি ধরে তা করেন মেক আপ শিল্পী শেখর আধিকারী। পুজোর আগের দিন রাত্রে বাড়ির ছেলে-মেয়েরা কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা নিয়ে আসনে। সাদা-লাল পাড় তাঁতের শাড়িতেই তিনি আসেন চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে।

বাড়ির কর্তাই বসেন পুজোতে। নবমিতা বললেন, ”প্রথমে দাদু ও ঠাকুমা (উত্তমকুমার-গৌরীদেবী) বসতেন পুজোয়, তারপরে তরুণ কুমার ও সুব্রতাদেবীর নামে সংকল্প হত। পরে মা-বাবা এবং এখন গৌরব পুজোয় বসে”। শোনা যায়, উত্তমকুমারের সহঅভিনেতা ও সহকর্মীরা আসতেন পুজোয়। খাওয়া, আড্ডা, গান-বাজনায় লক্ষ্মী আরাধনা হত। তাঁর বাড়ির লক্ষ্মী পুজোতেই ঢাক বাজে।

আরও পড়ুন, “ঈশ্বর যখন মানুষের শরণে”, কৌশিকের ‘লক্ষ্মী ছেলে’-র বাস্তব গল্প

নবমিতা বলেন, ”আমাদের কাছে আর পাঁচটা সাধারণ বাড়ির পুজোর মতোই লক্ষ্মীপজোর অনুভূতি।তখনও গুণী মানুষজন আসতেন এখনও আসেন।এই দিনটা ভীষণ আনন্দের”। নস্ট্যালজিয়ায় ডুব দিয়ে উত্তমকুমারের নাতনি শোনালেন মহানায়কের গল্প। ”আমার যদিও গল্পটা শোনা, একবার পুজোর পর সবাই আরাম করতে যাবে, তিনি যাবেন। সিঁড়ি দিয়ে উঠছেন এমন সময় হঠাত্ করে নেমে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে বাড়িতে ঢোকার দরজার মাটি ছুঁয়ে প্রণাম করে এলেন”। তাঁকে জিজ্ঞেস করায় বলেছিলেন, ”বাড়িতে এত মানুষ এলেন তোমরা কি জান কার মধ্যে দিয়ে কখন দেবী এসেছিলেন”।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Entertainment news download Indian Express Bengali App.

Web Title: The idol of laxmi in uttam kumars house traditionally made on the image of gouri devi