/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/21/qwedwq-2025-09-21-18-26-50.jpg)
মর্মান্তিক মৃত্যু
Geeta Bali Death: ১৯৪০ ও ১৯৫০-এর দশকে অভিনয় পেশাকে খুব একটা সহজভাবে দেখা হত না। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য খুব একটা সম্মানজনক কর্মক্ষেত্র ছিল না। কিন্তু সেই সময়ের অনেক বড় বড় তারকার কিশোরী বয়সেই চলচ্চিত্র জগতে অভিষেক ঘটেছিল। এর নেপথ্যে ছিল একটি বিশেষ কারণ। অনেকেই দেশভাগের শিকার হয়েছিলেন। যার ফলস্বরূপ কাঁধে এসে পড়েছিল সংসারের দায়িত্ব। তাই পেশা হিসেবে অনেকেই অভিনয়কে বেছে নিতেন এবং সাফল্যের মধ্যগগনে পৌঁছেছিলেন। যাঁদের নাম দর্শকের হৃদয়ে খোদাই করা আছে। সেই দলেরই সদস্য গীতা বালি। মাত্র ১২ বছর বয়সে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ। প্রকৃত অর্থে তারকা হয়ে ওঠেন কেদার শর্মার ছবি সোহাগ রাত-এ অভিনয়ের মাধ্যমে।
রাজ কাপুর, মধুবালা ও ভরত ভূষণের মতো লেজেন্ডারি শিল্পীদের সাফল্য আসে কেদার শর্মার হাত ধরেই। গীতা বালির ছেলে আদিত্য রাজ কাপুর টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, মায়ের কেরিয়ার রাতারাতি পালটে যায় যখন কেদার শর্মা তাঁকে 'সোহাগ রাত'-এ কাজের সুযোগ দেন। তিনি আরও জানান, মায়ের পরিবারের খোঁজ করতে গিয়ে অনেক অজানা তথ্যের মুখোমুখি হয়েছিলেন।
আদিত্যের কথায়, গীতার বাবা ছিলেন একদিকে পণ্ডিত অন্যদিকে শিখ। কারণ তিনি হিন্দু পরিবারে জন্ম নিয়ে পরে শিখ ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি স্বর্ণমন্দিরে ভজন গেয়ে দার্শনিক হয়েছিলেন। তিনি কারও বাড়িতে সৎসঙ্গে গেলে গীতাও সঙ্গে যেতেন। একজন দার্শনিক কতই বা আয় করতেন? তাই তাঁকে অভিনয় শুরু করতে হয়েছিল। প্রথমে তিনি নাটক করতেন। তাঁর সম্প্রদায় গীতা বালিকে বয়কট করে। তাই তিনি লাহোরে পালিয়ে যান এবং আকাশবাণীতে ১৩-১৪ বছর বয়সে গায়িকা হিসেবে যোগ দেন।
তিনি আরও জানান, লাহোরে গীতা দু'টি ছবিতে কাজ করেছিলেন। এরপর মুম্বাই চলে আসেন এবং কেদার শর্মার সঙ্গে পরিচয় হয়। কয়েকটি ছবিতে অভিনয়ের পরই সাফল্যের শিখরে পৌঁছে যান। সেই সময়ই শাম্মি কাপুর তাঁর প্রেমে পড়েন। সেই সময় শাম্মি কাপুরের পরপর ১৫টি ছবি ফ্লপ। সাফল্যের শীর্ষে থেকেও সংসার করার সিদ্ধান্ত নেন। তারকাখ্যাতি ছেড়ে সংসার ধর্মে মন দেন।
কেদার শর্মা নিজেও বলেছিলেন, 'গীতা ছিল আমার প্রিয়জনদের মধ্যে একজন। তিনি শিক্ষিত ছিলেন না। সম্বল বলতে কিছুই ছিল না। কিন্তু জানতেন কঠোর পরিশ্রম করলে কেউ তাঁকে আটকাতে পারবে না। এক নৃত্যগুরু ছিলেন, পণ্ডিত জ্ঞানশঙ্কর। তিনি একদিন আমার কাছে এসে বললেন, শর্মাজি, গীতা নামে একটি গরিব মেয়ে আছে। সে আর তাঁর অন্ধ বাবা রেললাইনের ধারে একটা বাড়িতে থাকে। অনুগ্রহ করে একবার ওকে দেখে যান সে আমার সন্তানের মতো।'
আরও পড়ুন স্কুবা ডাইভিংয়ের সময় অকাল প্রয়াণ জুবিনের! মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশার মাঝে চাঞ্চল্যকর তথ্য গায়কের স্ত্রীর
কেদার শর্মা গীতা বালির বাড়িতে যান এবং অবাক হন ওখানকার অভাব-অনটন দেখে। তাঁর কথায়, 'আমার বসার মতো জায়গাই ছিল না। কাঠের একটি স্ল্যাবের উপর কাপড় বিছিয়ে আমাকে বসতে দিল। আমি বসতেই যাকে দেখতে এসেছি সে আমার সামনে এল। সেই ছিল গীতা। আমি ওকেই বেছে নিলাম'। পরে তিনি রাজ কাপুরের সঙ্গে 'বাওরে নয়ন' ছবিতেও গীতাকে নেন। গীতা বালি শাম্মি কাপুরকে বিয়ে করেন। কিন্তু মাত্র ৩৪ বছর বয়সে গুটিবসন্তে তাঁর মৃত্যু হয়।