Manoj Mitra Death : মঙ্গলবার সকালে না ফেরার দেশে চলে গেলেন কিংবদন্তী শিল্পী মনোজ মিত্র। তাঁর প্রয়াণে গভীরভাবে শোকস্তব্ধ বাংলা ইন্ডাস্ট্রি। শ্যুটিং ফ্লোরের স্মৃতিতে ডুব সহ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের।
Manoj Mitra Death : মঙ্গলবার সকালে না ফেরার দেশে চলে গেলেন কিংবদন্তী শিল্পী মনোজ মিত্র। তাঁর প্রয়াণে গভীরভাবে শোকস্তব্ধ বাংলা ইন্ডাস্ট্রি। শ্যুটিং ফ্লোরের স্মৃতিতে ডুব সহ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের।
মনোজের মৃত্যুতে স্মৃতিচারণায় সাবিত্রী থেকে শতাব্দী, ঋতুপর্ণা
Manoj Mitra Passes Away: মঙ্গলবার সকালেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন কিংবদন্তী অভিনেতা ও প্রবীণ নাট্যকার মনোজ মিত্র। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত ইন্ডাস্ট্রির সতীর্থরা। বর্তমান প্রজন্ম থেকে তাঁর সহকর্মীদের প্রত্যেকেরই মনোজ মিত্রের সেই মজার কথাগুলো বড্ড বেশি মনে পড়ছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইনের তরফে মনোজ মিত্রের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন এমন বেশ কিছু তারকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কী বললেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় থেকে শতাব্দী রায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত থেকে বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের মতো সেলেবরা।
Advertisment
বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়-
আমি নিজেই কয়েকদিন ধরে খুব অসুস্থ। আজ সকালে মনোজদার খবরটা পেয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। ভীষণ ভালো একজন মানুষ ছিলেন। বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। কিন্তু, প্রকৃতির নিয়মে তো একদিন সকলকেই এই কঠিন সত্যের মুখোমুখি হতে হয়। আমারও তো বয়স হয়েছে। উনি বেঁচে থাকলে আরও কিছু ভালো কাজ আমাদেরকে উপহার দিয়ে যেতে পারতেন।
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত-
Advertisment
'ওনার কাজের ধরণটা একদম আলাদা ছিল। বেশ মজার মজার কথা বলতেন। মাঝে অনেকদিন কাজ করেননি। উনি তো নাট্যজগতের একজন দিকপাল। ওঁর মূল্যায়ণ করার মতো আমি কেউ নই। আমি যখন ইন্ডাস্ট্রি এসেছি, ওঁর সঙ্গে কাজের প্রচুর যে সুযোগ পেয়েছি তা নয়। তবে ওঁর সান্নিধ্যে আসতে পেরেছি সেটাই ভাগ্য। আমাকে আশীর্বাদ করেছেন। কাজের প্রশংসা করেছেন। একজন ভালো লেখকও ছিলেন। যে কাজগুলো করে গিয়েছেন তা আগামী প্রজন্মকে সমৃদ্ধ করবে। বাঞ্ছারামের বাগান একটা অনবদ্য ছবি। এই সিনেমা শিখিয়েছিল ভূত আর মজার মিশেলে কী ভাবে একটা সিনেমা তৈরি হয়। কৌতুকশিল্পী হিসেবে তো ওঁর কোনও তুলনাই হয় না। মনোজ মিত্রের সেন্স অফ হিউমরটাও দারুণ ছিল। উনি মজার কথা বলেই চুপ হয়ে যেতেন। দেখতেন বাকিরা হাসছে কিনা। ওঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা। যেখানেই থাকুক ভাল থাকুক। আজ সত্যিই নক্ষত্রপতন হল'।
সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়
'অত্যন্ত মর্মান্তিক একটা ব্যাপার। শিল্পী হিসেবে তো অতুলনীয়। আর মানুষ হিসেবে কিছু বলারই নেই। অত্যন্ত গুণী একজন ব্যক্তি ছিলেন। ওঁর প্রত্যেকটা কথা এত মজার ছিল যে শুনেই হাসি পেত। আমরাও খুব মজা করতাম। একজন গুণী মানুষ চলে গেলেন। একজন ভাল শিল্পীকে আমরা হারিয়ে ফেললাম। 'দম্পতি' বলে একটা নাটক করেছিলাম। সেটার জন্য ওঁর সঙ্গে আমেরিকা ট্যুর করেছিলাম। সে এক দারুণ অভিজ্ঞতা'।
রঞ্জিত মল্লিক
'মনোজ বাবুর কথা বললে দুটি ছবির কথা খুব মনে পড়ে, শত্রু ও তিন মূর্তি। শত্রুতে ওঁর অভিনয় সত্যিই দারুণ ছিল। শত্রু মানেই রঞ্জিত মল্লিকের ছবি এটা সবাই বললেও এখানে মনোজ বাবুর তুখর অভিনয় এই ছবিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল। এত ভাল পারফরম্যান্স যে চরিত্রটা একেবারে জীবন্ত হয়ে উঠেছিল। তিন মূর্তিতে আমি, মনোজ বাবু আর দীপঙ্কর একসঙ্গে কাজ করেছিলাম। পরিচালক রাজা সেন যে বিষয়টা তুলে ধরার চেষ্টা করেছিল, অবসরগ্রহণের পর সব শেষ হয়ে যায় না। শেষ থেকেও শুরু হয়। মনোজবাবু থিয়েটারের মানুষ ছিলেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেন। আউটডোর শ্যুটিংয়ে কোপাইতে গিয়েছিলাম। সেখানেও অনেক সুন্দর স্মৃতি রয়েছে। সকলকেই একদিন না একদিন চলে যেতে হবে। আর কী বলব'!
শুভাশিষ মুখোপাধ্যায়
'আমাদের পরিচয় দীর্ঘদিনের। একজন সফল মৌলিক নাট্যকার। এখন তো নাট্যকারের সংখ্যা কমছে। তবে মনোজ মিত্রের মতো নাট্য ব্যক্তিত্বের জন্ম বারবার হয় না'।
চুমকি চৌধুরী
'মনোজ জ্যেঠু খুবই রসিক মানুষ ছিলেন। হাসি-ঠাট্টা করতেন। কিন্তু, আমরা বয়সে অনেকটাই ছোট। আমাদের সঙ্গে সেখানে একটা দূরত্ব ছিল। তবে বাবার সঙ্গে খুব মজা করতেন। ওনার থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আজ এই খবরটা পেয়ে খুব খারাপ লাগছে'।
শতাব্দী রায়
'আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। খুবই ভালো অভিজ্ঞতা। ওনার থেকে অনেক কিছু শেখার সুযোগ পেয়েছি। একটা সিনেমায় চড় মারার দৃশ্য ছিল। এমন জোড়ে মেরেছিলেন যে কানের দুল ছিটকে গিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে উনি সরি বলেন। সকলের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতেন। মনোজ মিত্রের মৃত্যুটা খুবই দুঃখজনক'।