Tapan Sinha-Tanuja-Adalat o Ekti Meye: বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের পরিচালক তপন সিনহা। যিনি ভারতীয় সিনেমাকে নান্দনিক নির্মাণশৈলীর মাধ্যমে সমৃদ্ধ করেছিলেন। তিনি ছিলেন সত্যজিৎ রায় ও ঋত্বিক ঘটকের সমসাময়িক। তবে নিজস্ব ভঙ্গিমায় প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক তপন সিনহার গল্পের বুনোটে ছিল আরও অন্তর্মুখী ও বাস্তববাদী। বাংলার পাশাপাশি হিন্দি ও ওড়িয়া ভাষাতেও ছবি তৈরি করে স্বনামধন্য চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে নিজের দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন কিংবদন্তী পরিচালক তপন সিনহা।
তাঁর কালজয়ী সৃষ্টির মধ্যে উল্লেখযোগ্য, 'কাবুলিওয়ালা', 'ক্ষণিকের অতিথি', 'ক্ষুধিত পাষাণ', 'ঝিন্দের বন্দি', 'গল্প হলেও সত্যি', 'আপনজন', 'সাগিনা মাহাতো', 'জিন্দেগি জিন্দেগি', 'আতঙ্ক', 'অন্তর্ধান' 'আদালত ও একটি মেয়ে', 'বৈদুর্য রহস্য', 'এক যে ছিল দেশ। পরিচালক হিসেবে দীর্ঘ কর্মজীবনে বহু তারকাকে নিয়ে কাজ করেছেন তপন সিনহা । সেই তালিকায় রয়েছেন উত্তম কুমার থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, কালী বন্দ্যোপাধ্যায়, উৎপল দত্ত, ছবি বিশ্বাস সহ বলিউডের ওয়াহিদা রহমান, সুনীল দত্ত, ফরিদা জালাল, শত্রুঘ্ন সিনহার মতো আরও অনেকে ৷
এছাড়াও দুলাল লাহিড়ী থেকে দীপঙ্কর দে, কৃষ্ণা চৌধুরী, রবি ঘোষও তাঁর ছবিতে রেখে গিয়েছেন বিরাট অবদান। তপন সিনহার অসাধারণ সৃষ্টি 'আদালত ও একটি মেয়ে'। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বঙ্গতনয়া তনুজা। এক সাক্ষাৎকারে তপন সিনহার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করেছেন এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী।
আরও পড়ুন বলিউডে 'বং কানেকশন', সোনাক্ষীর নতুন ছবির পোস্টারে কী ভাবে নজর কাড়লেন ব্যারাকপুরের মেয়ে একতা?
তনুজা বলেন, 'তপনদা একজন অসাধারণ মানুষ, যাঁর অসামান্য প্রতিভা একজন শিল্পীর অনুপ্রেরণা। আমি ওঁর কাছে সন্তানতুল্য ছিলাম। আমাদের একটা পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। একজন পরিচালক হিসেবে ওঁর কথার সঙ্গে যেন ছবিটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। সেই সঙ্গে অনুভব করা যেত উনি ঠিক কী চাইছেন।' স্মৃতিচারণ করে বলেন, 'আমার মনে আছে আমি যখন 'আদালতে একটি মেয়ে'-তে অভিনয় করছিলাম সেখানে একটি দৃশ্য ছিল গণধর্ষণের পর মানসিকভাবে বিপর্যন্ত হওয়ার একটা মুহূর্ত। কাউকে বলতে পারছি না আমার সঙ্গে কী ঘটে গিয়েছে, মনের ভিতর কোন ঝড় বয়ে যাচ্ছে। আমাকে দৃশ্যের বিবরণ দিচ্ছিলেন আর আমি অঝোরে কাঁদছিলাম। কিছুতেই কান্না থামাতে পারছিলাম না। তখন তপনদা বলেছিলেন, তনু এখন কাঁদবি না, শট দেওয়ার সময় কাঁদবি। মানে যখন ক্যামেরা অন হবে আর আমি বলব স্টার্ট-অ্যাকশন।'
আরও পড়ুন চরম আর্থিক অনটন থেকে দাম্পত্যে অশান্তি, হাটে হাঁড়ি ভাঙলেন অর্চনার স্বামী পরমিত
আরও যোগ করেন, 'কাঁদার জন্য আমাকে গ্লিসারিন ব্যবহার করতে হয়নি। চরিত্রের এতটাই গভীরে প্রবেশ করে গিয়েছিলাম যে অভিনয়ের সময়ই সেই পরিস্থিতিটা অনুভব করতে পারছিলাম। সিনেমার মাধ্যমে ধর্ষণ বা গণধর্ষণের মতো বিষয়গুলো প্রাসঙ্গিক। কারন একবিংশ শতকেও এই মর্মান্তিক ঘটনাগুলো ঘটে চলেছে।'
আরও পড়ুন কবে OTT-তে মুক্তি পাবে 'মেট্রো ইন দিনো'? জেনে নিন কোথায় কখন দেখবেন