Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

বাংলার বারো মাসে দেবীর ১২টি রূপ, জেনে নিন মহালয়া অনুষ্ঠানের আগেই

Zee Bangla Mahalaya: জি বাংলায় এবছর মহালয়ার অনুষ্ঠানে দেখা যাবে আদিশক্তির বারোটি রূপ যা বাংলার প্রত্যেকটি মাসের সঙ্গে সংযুক্ত। শাস্ত্রমতে কোন মাসে কোন দেবীর আরাধনা, রইল তার ঝলক।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
12 avatars of Mahashakti worshipped in 12 months in Bengal

বাঁদিকে কাত্যায়নী ও ডানদিকে দুর্গা রূপ। ছবি সৌজন্য: জি বাংলা

মহালয়া অনুষ্ঠানে প্রত্যেক বছরই দর্শকের জন্য নতুন কিছু পরিকল্পনা করে বাংলার প্রথম সারির চ্যানেলগুলি। এবছর জি বাংলা-র অনুষ্ঠানের থিম হল-- বারো মাসে বারো রূপে দেবীবরণ। আদিশক্তির বহু রূপের কথা বর্ণনা করা হয়েছে একাধিক পুরাণে। তার মধ্যে বাংলায় পূজিত বারোটি রূপ নিয়েই তৈরি হয়েছে এবছরের জি বাংলার বিশেষ অনুষ্ঠানটি। মহিষাসুরমর্দিনী রূপে এবছর দেখা যাবে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়কে। সঙ্গে মহাদেব রূপে থাকছেন নেতাজি-অভিনেতা অভিষেক বসু।

Advertisment

আর দেবীর বারোটি রূপে দেখা যাব জি বাংলা-র বিভিন্ন ধারাবাহিকের নায়িকা-অভিনেত্রীদের। যেমন দুর্গা রূপে দেখা যাবে দিতিপ্রিয়া রায়কে আবার কাত্যায়নী রূপে থাকছে সৌদামিনীর সংসার-এর সৌদামিনী অর্থাৎ সুস্মিলি আচার্য। দেবীর বারোটি রূপের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা মহিষাসুরমর্দিনী রূপটি। মহালয়ার অনুষ্ঠানে প্রত্যেক রূপেরই ব্যাখ্যা থাকবে। তার আগে এক ঝলকে দেখে নিন বাংলার কোন মাসে আদিশক্তির কোন রূপের আরাধনার কথা বলা হয়েছে--

আরো পড়ুন: সকালে মা দুর্গাকে নুন-লেবুর জল! অভিনেত্রী ঈশিতা শোনালেন চারুভবনের পুজোর গল্প

বৈশাখ-- এই মাসের আরাধ্যা দেবী হলেন গন্ধেশ্বরী। তিনি মূলত গন্ধবণিকদের আরাধ্যা। বাংলার এই ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ই দেবী গন্ধেশ্বরীর পুজোর প্রবক্তা। বলা হয় এঁর বরেই নাকি বাংলার গন্ধবণিকদের গন্ধদ্রব্যের ব্যবসার রমরমা এবং এর কৃপাতেই গন্ধদ্রব্যের প্রাচুর্য রয়েছে বাংলাতে।

জ্যৈষ্ঠ্য-- এই মাসে ফলহারিণী কালীপুজোর কথা হয়তো অনেকেই জানেন। জ্যৈষ্ঠ্য মাসে আদিশক্তির এই রূপ এখনও পূজিত হয় বাংলার কোনায় কোনায়। এই দেবী হলেন কর্মফল হরণকারিণী দেবী। এঁর আরাধনায় কর্মফলের প্রকোপ থেকে নিজেদের রক্ষা করা যায় বলেই মনে করা হয়।

Gondheswari and Foloharini বাঁদিকে গন্ধেশ্বরী ও ডানদিকে ফলহারিণী রূপ। ছবি সৌজন্য: জি বাংলা

আষাঢ়-- অনেকেই জানেন আষাঢ় মাসের গোড়ায় অম্বুবাচী তিথি পড়ে। এই সংক্রান্ত একটি ছড়াও প্রচলিত রয়েছে-- '৬ আষাঢ় অম্বুবাচী, এর নেই কোনও পাঁজিপুঁথি'। অম্বুবাচী তিথিতে মহাধুমধাম করে পূজিত হন দেবী কামাক্ষ্যা। উর্বরতার এই দেবীই হলেন বাংলার এই মাসের আরাধ্যা।

শ্রাবণ-- এই মাসের আরাধ্যা দেবী হলেন শাকম্ভরী। শ্রাবণ মাসে প্রকৃতিতে প্রাচুর্য আনেন তিনি, ওঁর কৃপাতেই বাংলার মাঠঘাট ভরে ওঠে শাকসব্জিতে, এমনটাই মনে করা হয়। আর তাই এই দেবীর সবুজবরণ। আদিশক্তির এই রূপের পুজো এখন বিরল। হয়তো বাংলার কোনও প্রত্যন্ত গ্রামে এখনও তাঁর আরাধনা হয়।

Kamakhya and Shakomvori বাঁদিকে কামাক্ষ্যা ও ডানদিকে শাকম্ভরী। ছবি সৌজন্য: জি বাংলা

আরও পড়ুন, সেরা ‘ত্রিনয়নী’, সেরা দশে ‘সাঁঝের বাতি’

ভাদ্র-- মহাদেব ও পার্বতী হলেন পুরুষ ও প্রকৃতি। তাঁদের মিলনেই পৃথিবীতে অব্যাহত থাকে জীবনধারা। পুরাণ মতে, এই মাসেই ঘটেছিল মহাদেব ও পার্বতীর প্রথম মিলন। তাই ভাদ্র মাসের আরাধ্যা দেবী হলেন পার্বতী।

আশ্বিন-- আশ্বিন মাসে যাঁর আরাধনায় মেতে ওঠে বাংলা, তিনিই হলেন দুর্গমাসুর দমনকারিণী দেবী দুর্গা। রামায়ণে যে অকালবোধনের কথা বলা হয়েছে এবং রামচন্দ্র যাঁর আরাধনা করেছিলেন, তিনি হলেন আদিশক্তির এই রূপ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই দেবীর সঙ্গেই মহিষাসুরমর্দিনী ও চার সন্তানের জননী দেবী পার্বতীর রূপটি মিশিয়ে পুজোর প্রচলন শুরু হয় বাংলায়।

Parvati and Durga বাঁদিকে পার্বতী ও ডানদিকে দুর্গা। ছবি সৌজন্য: জি বাংলা

কার্তিক-- দেবী জগদ্ধাত্রীর আরাধনা হয় কার্তিক মাসে, এটা সর্বজনবিদিত। কাত্যায়নী তন্ত্রে বলা হয়, একবার ইন্দ্র, অগ্নি, বায়ু ও চন্দ্র-- এই চার দেবতা খুব অহংকারী হয়ে উঠলেন। মহাশক্তির শক্তিতেই যে তাঁরা বলীয়ান সেটা ভুলে গেলেন। তখনই তাঁদের সামনে উপস্থিত হন দেবী জগদ্ধাত্রী। তিনি জগতের রক্ষাকারিণী দেবী।

অগ্রহায়ণ-- আদিশক্তির কাত্যায়নী রূপের পুজোর প্রচলন রয়েছে অগ্রহায়ণ মাসে। এই দেবীকে বলা হয় বিবাহ ও সন্তানকামনা পূরণকারিণী। ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী, ব্রজের গোপিণীরা কৃষ্ণকে স্বামীরূপে পাওয়ার ইচ্ছায় এই দেবীর মূর্তি গড়ে পুজো করতেন মাঘ মাসে। কিন্তু বাংলার নবদ্বীপের রাসযাত্রায় অগ্রহায়ণ মাসেই কাত্যায়নী মাতার পুজোর প্রচলন।

Jagaddhatri and Katyayoni বাঁদিকে জগদ্ধাত্রী ও ডানদিকে কাত্যায়নী। ছবি সৌজন্য: জি বাংলা

আরও পড়ুন, শ্রুতি-নীলের ‘বাতাসে গুন গুন’, উচ্ছ্বাস সোশাল মিডিয়ায়

পৌষ-- বাংলার প্রায় সমস্ত প্রতিষ্ঠিত কালীমন্দিরে পৌষকালীর আরাধনা করা হয়। আদিশক্তির এই রূপকে বলা হয় মোক্ষদানকারিণী। পৌষ মাসে পুজো বলে এই মাসের অন্যতম প্রধান সবজি মুলো নিবেদন করা হয় দেবীকে। তাই এখনও অনেকেই এই পুজোকে মুলোকালী পুজো বলেন।

মাঘ-- পৌষের পরেই মাঘ মাসেও কালীর আর এক রূপ পূজিত হয় বাংলার কালী মন্দিরগুলিতে। মাঘ মাসের কৃষ্ণ চতুর্দশীতে হয় রটন্তীকালী পুজো। আদিশক্তির এই রূপকে গৃহশান্তির রক্ষাকারিণী বলা হয়। এঁর আরাধনায় সাংসারিক জীবন সুখের হয় বলেই মনে করা হয়।

Poushkali and Sankatmochini বাঁদিকে পৌষকালী ও ডানদিকে সঙ্কটমোচিনী। ছবি সৌজন্য: জি বাংলা

ফাল্গুন-- এই মাসের আরাধ্যা দেবী হলেন সঙ্কটনাশিনী। বসন্তের শুরুতে এই সময় বাংলার ঘরে ঘরে নানা ধরনের রোগের প্রকোপ দেখা যায়। জীবনসঙ্কট ও অন্যান্য বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য তাই সঙ্কটনাশিনী দেবীর পুজোর প্রচলন রয়েছে এই মাসে।

চৈত্র-- এই মাসে প্রকৃতিতে প্রাচুর্য আনেন ও ধরিত্রীকে শস্যপূর্ণ করেন দেবী বাসন্তী। এই পুজোর কথাও মোটামুটি সকলের জানা। অনেকে চৈত্র মাসে আদিশক্তিকে অন্নপূর্ণা রূপে পুজো করেন, আবার কেউ বাসন্তী রূপেই আরাধনা করেন। কিন্তু দুই রূপেরই সারমর্মটি এক-- বাঙালির অন্নভাণ্ডার পূর্ণ হোক, দেবীর কাছে এই আবেদন।

Rotontikali and Basanti বাঁদিকে রটন্তীকালী ও ডানদিকে বাসন্তী। ছবি সৌজন্য: জি বাংলা

আরও পড়ুন, টাটকা মাছের ঝালই মা দুর্গার ভোগ! অভিনেত্রী ত্বরিতার বাড়ির পুজোর গল্প

আর এই বারো দেবীর পরে রয়েছেন দেবী মহিষাসুরমর্দিনী যিনি অশুভ শক্তির হাত থেকে মহাবিশ্বকে রক্ষা করেন এবং যে দেবীর হাতেই বধ হতে হয়েছে মহিষাসুরকে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ভোর পাঁচটায় জি বাংলায় দর্শক দেখতে পাবেন মহিষাসুরমর্দিনী ও বাংলার বারো মাসের বারো দেবীকে মহালয়া অনুষ্ঠানে।

debi Durga Puja 2019 Kali Puja Bengali Television
Advertisment