AI-Article Scam: সাংবাদিকতায় ভয়ংকর কেলেঙ্কারি ! মুখ পুড়তেই ঘেমে অস্থির নামী প্রকাশনাগুলো, কাঠগড়ায় বিশ্বখ্যাত সাংবাদিক

AI Generated Article Scam: ধরা পড়তেই লজ্জায় কেঁপে উঠেছে সাংবাদিকতার দুনিয়া। এ যেন ১০ দিনের চুরির একদিনে সাজা মেলা। লজ্জা ঢাকতে রাতদিন জেগে একের পর এক প্রতিবেদন মুছছে নামী সংবাদ সংস্থাগুলো।

AI Generated Article Scam: ধরা পড়তেই লজ্জায় কেঁপে উঠেছে সাংবাদিকতার দুনিয়া। এ যেন ১০ দিনের চুরির একদিনে সাজা মেলা। লজ্জা ঢাকতে রাতদিন জেগে একের পর এক প্রতিবেদন মুছছে নামী সংবাদ সংস্থাগুলো।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
AI-Article Scam

AI-Article Scam: যে বাস্তব খবরের ওপর নির্ভর করে সাংবাদিকতার প্রতি জনগণের আস্থা, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে এই বিতর্ক।

Article Scam: সাংবাদিকতাটা ঘরে বসে হয় না। ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে দেখে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান, প্রশাসনের বক্তব্য শুনে করতে হয়। এটা সাংবাদিকতার গোড়াতেই শেখানো হয়। কিন্তু, নানা সুযোগের অপব্যবহার করে ঘরে বসে সাংবাদিকতা চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। তাঁদের অনেকে এতটাই ক্ষমতাশালী যে অনেক সাংবাদিকই এসব দেখেও ঘাঁটাতে সাহস পান না। কারণ, সাংবাদিকতাও একটা পেশা। বলতে গেলে, সেটাই ব্যুমেরাং হয়ে সেই রোজগার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। প্রতিষ্ঠানগুলোও সহজে অনেক লেখা পাওয়ায় সব জেনেও মুখ বন্ধ করে বসে থাকে। AI আসার পর এই ঘরে বসে সাংবাদিকতার এই খারাপ দিকটা আরও বেড়েছে।

Advertisment

ঘোরাঘুরির দরকার নেই। হাতের নাগালে যাবতীয় তথ্য। এবার শুধু গুছিয়ে লিখে দিলেই হল! কিন্তু, সবটা কি আর এভাবে ফাঁকিবাজি মেরে সম্ভব? AI তো আর, বাস্তব তথ্য ঘটনাস্থলে গিয়ে তুলে আনতে পারে না। হাজার হোক সে যন্ত্র। আর, এই ফারাকেই ধরা পড়ে গেলেন বিশ্বখ্যাত এক সাংবাদিক। ধরা পড়তেই তুমুল কাণ্ড সাংবাদিকতার অন্দরমহলে, ব্যাপক হইচই। কথায় বলে, ১০ দিনের চুরির একদিন সাজা। তড়িঘড়ি ওই নামী সাংবাদিকের একের পর এক লেখা বেছে ওড়াতে গিয়ে এখন কালঘাম ছুটছে বিশ্বখ্যাত প্রকাশনা সংস্থাগুলোর।

আরও পড়ুন- সাবধান! সামনে সূর্যগ্রহণ, ভারত থেকে দেখা যাবে? জানুন, কী করবেন না

বিতর্কের জন্ম দিয়েছে সাংবাদিকতার এই অন্ধকার দিক

Advertisment

এটা ঠিকই যে, সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিকতার জগতে এক চাঞ্চল্যকর বিতর্কের জন্ম দিয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-ভিত্তিক লেখা। আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত দুই সংবাদমাধ্যম — Wired এবং Business Insider তারই শিকার। সংস্থাগুলো তাদের ওয়েবসাইট থেকে একাধিক ফ্রিল্যান্স রিপোর্ট সরিয়ে দিয়েছে, কারণ এগুলো সম্ভবত AI Generated Articles।

আরও পড়ুন- বাড়ির কারও ধূমপান ছাড়াতে চান? এগুলো চুপচাপ করে দেখুন, হাতেনাতে ফল পাবেন!

‘মার্গাক্স ব্লানচার্ড’ নামে এক ফ্রিল্যান্স লেখক একাধিক সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন বিশেষ ফিচার লিখেছিলেন। তবে তদন্তে দেখা যায়, তাঁর রিপোর্টে উল্লেখিত ব্যক্তিদের অনেকেই আসলে অস্তিত্বহীন। এমনকী যেসব বিশেষজ্ঞ বা সাক্ষাৎকারভিত্তিক তথ্য দেওয়া হয়েছিল, সেগুলিও অনলাইনে যাচাই করা যায়নি।

আরও পড়ুন- সোনা পরা অশুভ, এই ব্যক্তিদের জন্য সোনা ধারণ হতে পারে বিপদজনক!

মে মাসে Wired প্রকাশ করেছিল এক ফিচার—যেখানে দাবি করা হয়, এক দম্পতি Minecraft খেলার সময় একে অপরকে ভালোবেসে ফেলেন এবং পরে সেই গেমের ভেতরেই তাদের ‘বিয়ে’ হয়। গল্পটি সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু দুই সপ্তাহের মধ্যেই Wired পুরো প্রবন্ধটি সরিয়ে নেয় এবং সম্পাদকীয় নোটে জানায় যে এটি তাদের সাংবাদিকতার মান পূরণ করছে না।

আরও পড়ুন- ঘরেই বানান রেস্তোরাঁর স্বাদের পালং পনির, ধন্যধন্য করবে ঘরের লোক

Business Insider-এ প্রকাশিত হয়েছিল ব্লানচার্ডের দুটি লেখা। সেগুলো হল- দূরের কাজ অভিভাবক হিসেবে আমার জন্য ভালো, কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে খারাপ, ৪৫ বছর বয়সে আমার প্রথম সন্তান, আর্থিক স্থিতি আমাকে সহায়তা করছে। প্রেস গেজেট নামে একটি প্রকাশনা বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর Insider তাৎক্ষণিকভাবে দুটি লেখা সরিয়ে দেয় এবং জানায়, এগুলো তাদের নীতিমালা পূরণ করছে না।

মূল বিতর্কের জায়গা হল— সাংবাদিকতার ঘাটতি কি AI দিয়ে পূরণ করা সম্ভব? বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ছোট-বড় অনেক প্রকাশনা সংস্থাই এখন খরচ কমানোর জন্য দ্রুত কনটেন্ট প্রকাশ করতে চায়। সেটা এআইয়ের মাধ্যমে সম্ভব। কিন্তু AI-generated লেখা মানুষের প্রকৃত অভিজ্ঞতা, বাস্তব সাক্ষাৎকার এবং গ্রাউন্ড জিরো থেকে রিপোর্টিং কখনও দিতে পারে না। আর, এই কারণেই Dispatch ম্যাগাজিনের সম্পাদক জ্যাকব ফুরেদি এআই জেনারেটেড লেখাকে, 'পুরোপুরি বোকামি' বলে তোপ দেগেছেন। তিনি বলেছেন, 'আপনি কোনও শহর বা মানুষ তৈরি করে ফেলতে পারবেন না। সাংবাদিকতার মূল হল মাঠে নেমে রিপোর্টিং করা।'

AI দিয়ে লেখা ফিচারগুলো এমনিতে আকর্ষণীয় হলেও, সেগুলোতে প্রায়শই ভুয়ো নাম, মনগড়া কাহিনি এবং যাচাইযোগ্য নয়, এমন সব তথ্য থাকে। এতে পাঠকদের আস্থা নষ্ট হয় এবং সাংবাদিকতার মৌলিক মানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর, সেই কারণেই এখনও পর্যন্ত Wired, Business Insider, Index on Censorship-সহ অন্তত ছয়টি প্রকাশনা সংস্থা ব্লানচার্ডের লেখা সরিয়ে ফেলেছে। তারা জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে তারা কড়া পদক্ষেপ নেবে। স্থাগুলো মনে করিয়ে দিয়েছে, সাংবাদিকতা কোনো গল্পদাদুর আসর নয়। এটি নির্ভর করে তথ্যের বিশ্বাসযোগ্য উৎসের ওপর। AI-generated নিবন্ধ হয়তো দ্রুত কনটেন্ট তৈরি করতে পারে, কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে তার মিল না থাকলে তা পাঠক ও প্রকাশক উভয়ের জন্যই দীর্ঘস্থায়িত্বের দিক থেকে ক্ষতিকর। Wired ও Business Insider-এর ঘটনা সাংবাদিকতাকে এক নতুন সতর্কবার্তা দিয়েছে। যা বুঝিয়ে দিয়েছে, সত্য যাচাই ছাড়া খবর প্রকাশের দিন ক্রমশ শেষ হতে চলেছে।

Scam Article