Advertisment

টয়লেট ফ্লাশ করলে করোনা সংক্রমণ হতে পারে?

পাবলিক টয়লেটে ফ্লাশ করার সময় ভাইরাসের কণা বেরোতে পারে, যা সহজেই মানবশরীরে প্রবেশ করতে পারে। গবেষকরা টয়লেট প্রস্তুতকারীদের কাছে এমন টয়লেট বানানোর আবেদন করেছেন যাতে ফ্লাশ করার আগে লিড স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে য়ায় এবং ফ্লাশের আগে পরে সাফ হয়ে যায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Coronavirus Toilet

ব্রিটেনের স্টার্লিং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর রিচার্ড কুইলিয়ম গত মাসে এক বিবৃতিতে বলেছেন কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসার ৩৩ দিন পরেও মনুষ্যবিষ্ঠায় ভাইরাসের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে

ফিজিক্স অফ ফ্লুইড জার্নালে নতুন প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে বিষ্ঠা থেকে মুখে সংক্রমণ, যা সাধারণত শৌচাগার ব্যবহারের সময়ে ঘটে থাকে, তা আটকাতে পারলে করোনা সংক্রমণ ছড়ানো অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। গবেষণায় এও জানা গিয়েছে, পাবলিক টয়লেটে ফ্লাশ করার সময় ভাইরাসের কণা বেরোতে পারে, যা সহজেই মানবশরীরে প্রবেশ করতে পারে। সে কারণে পাবলিক শৌচাগার ব্য়বহারের সময় মাস্ক পরা বাধ্য়তামূলক করা হোক বলে দাবি করা হয়েছে।

Advertisment

গবেষণায় কী বলা হয়েছে?

গবেষণায় বলা হয়েছে টয়লেট ফ্লাশ করলে বাওলের মধ্যে ব্যাপক স্রোত তৈরি হয়। প্রশ্ন হল এর ফলে তা থেকে ভাইরাসসমৃদ্ধ এয়ারোসোল কণাও নির্গত হয় কিনা।

গবেষকরা বলছেন ফ্লাশ করার সময়ে উপরদিকে ৫ মিটার প্রতি সেকেন্ড গতিবেগ সৃষ্টি হয়, যার ফলে টয়লেট বাওলের বাইরে এয়ারোসোল কণা বেরিয়ে আসতে পারে। তাঁরা আরও বলছেন, সব কণার ৪০-৬০ শতাংশ টয়লেট সিটের উপরে বেরিয়ে এসে বড় এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং সেসব কণা মেঝে থেকে ১০৬ সেন্টিমিটার পর্যন্ত উপরে উঠতে পারে। এমনকি ফ্লাশ করার ৩৫-৭০ সেকেন্ড পরেও এই কণা উপরে উঠতে থাকে।

আরও পড়ুন, ঘুমের সময় বাড়লেও সুনিদ্রা হয়নি লকডাউনে

গবেষণায় বলা হচ্ছে কোনও সংক্রমিত ব্যক্তি টয়লেট ব্যবহার করার পরে তাতে ব্যাপক পরিমাণ ভাইরাস থাকতে পারে এবং সে কারণে শৌচাগারকে সংক্রমণের উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত। শৌচাগার যথাযথভাবে ব্যবহার না করলে সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।

সংক্রমিত ব্যক্তি আইসোলেশন পর্যায়ে সাধারণভাবে বাড়িতে থাকেন, ফলে বাথরুম শেয়ার করতেই হবে। সাধারণ শৌচাগারের ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে- ফলে, কোনও সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। এইসব কারণে মহামারী প্রতিরোধের জন্য শৌচাগার পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

বিষ্ঠা-মুখ সংক্রমণ কী এবং এ সম্পর্কে আমরা কতটা জানি?

একজন সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে যেসব পদ্ধতিতে সংক্রমণ ছড়াতে পারে এটি তার মধ্যে একটি। এর অর্থ হল সংক্রমিত ব্যক্তির বিষ্ঠা বা মূত্র থেকে সংক্রমণ।

সার্স কোভ ২ ভাইরাস বিষ্ঠায় দেখা গেলেও তা যে বিষ্ঠার মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে এমন কথা নিশ্চিত করে বলা যায় না। ব্রিটেনের স্টার্লিং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর রিচার্ড কুইলিয়ম গত মাসে এক বিবৃতিতে বলেছেন কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসার ৩৩ দিন পরেও মনুষ্যবিষ্ঠায় ভাইরাসের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। তিনি বলেছেন পরিপাক যন্ত্রের ভাইরাল শেডিং শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাল শেডিংয়ের চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

আরও পড়ুন, র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কী?

ভারতে স্বাস্থ্যমন্ত্রক বলেছে নভেল ককোরনাভাইরাস এই প্রকোপের সময়ে বিষ্ঠা-মুখ চক্রপথে সংক্রমণ ঘটায়নি, প্রাথমিকভাবে সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির সঙ্গে নির্গত ড্রপলেটের মাধ্যমে তা ঘটেছে।

তাহলে এই সংক্রমণ পথ নিয়ে উদ্বেগ কেন?

সার্স কোভ ও মার্স ভাইরাস এ পথে ছড়িয়েছিল। নরোভাইরাস ও রোটাভাইরাসের ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটে থাকে। গবেষকরা বলছেন সে কারণেই সংক্রমণের এই পথ রোধ করতে পারলে এলাকায় ক্রস-ইনফেকশনের সম্ভাবনা কমবে, একই সঙ্গে কমবে দুনিয়া জুড়ে ভাইরাসের ফের উদয় হওয়ার সম্ভাবনাও।

 এই পথে সংক্রমণ আটকানোর জন্য কী করা যেতে পারে?

গবেষকরা বলছেন ফ্লাশ করার আগে টয়লেট সিট বন্ধ করে দিতে এবং টয়লেট ব্যবহারের আগে সিট পরিষ্কার করে নিতে, কারণ অনেক সময় ভাইরাসের পার্টিকল সারফেসেও থেকে যেতে পারে। গবেষকরা টয়লেট প্রস্তুতকারীদের কাছে এমন টয়লেট বানানোর আবেদন করেছেন যাতে ফ্লাশ করার আগে লিড স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায় এবং ফ্লাশের আগে পরে সাফ হয়ে যায়। বিকল্প হিসেবে জলবিহীন টয়লেট ডিজাইন করা যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।

coronavirus
Advertisment