মঙ্গলবার ২৮ এপ্রিল স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সাঞ্চেজ সে দেশের লক ডাউন শেষ করবার চার পর্যায়ের পরিকল্পনা করেছেন। স্পেনে সংক্রমণের সংখ্যা আমেরিকার ঠিক পরেই, ২ লক্ষ ১০ হাজারের বেশি। সে দেশে ২০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন, এবং লকডাউন চলছে ১৪ মার্চ থেকে।
এক ভাষণে সাঞ্চেজ বলেছেন লকডাউন শিথিল করা হব পর্যায়ক্রমে এবং দেশ নতুন ধরনের স্বাভাবিকতায় প্রবেশ করবে জুনের শেষে। ইউরোপের অন্য দেশগুলিও সংক্রমণ শ্লথ হওয়ার পর লকডাউন শেষ করার কৌশল স্থির করছে। তাদের পদ্ধতি বিশ্বের অন্য দেশগুলির কাছে শিক্ষণীয় হতে পারে।
ভাইরাস কার্ভে লকডাউনের প্রভাব
স্পেন ছাড়া ফ্রান্সও ১১ মে থেকে লকডাউন শিথিল করার পরিকল্পনা করছে, তবে কঠোর নিষেধাজ্ঞা সে দেশের আরও সংক্রমণজনিত রেড জোনে লাগু থাকবে।
স্পেনের কৌশল
০ তম পর্যায় দিয়ে ৪ মে থেকে সারা স্পেনে লকডাউন শিথ্ল করার কাজ শুরু হবে, যার আওতা থেকে কয়েকটি দ্বীপ বাদ পড়বে, যারা ইতিমধ্যেই প্রথম পর্যায়ে রয়েছে। এক সপ্তাহ পরে ১১ মে থেকে শুরু হবে প্রথম পর্যায়, যা দু সপ্তাহ বহাল থাকবে এবং বাকি পর্যায়গুলিও ২ সপ্তাহের হবে। সব মিলিয়ে গোটা প্রক্রিয়ায় অন্তত ৬ সপ্তাহ সময় লাগবে।
০ তম পর্যায়, প্রস্তুতি পর্যায়: এই পর্যায়ে রেস্তোরাঁগুলিতে টেক অ্যাওয়ে সার্ভিস চালু হবে এবং সালোঁগুলিও খুলবে। ২ মে থেকে নাগরিকরা একা বা তাঁরা যাঁদের সঙ্গে থাকেন, তাঁদের নিয়ে বাইরে এক্সারসাইজ করতে পারবেন। এই পর্যায়ে পেশাদার খেলোয়াড়েরা ব্যক্তিগত ট্রেনিং সেশনে যোগ দিতে পারবেন। ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের ২৬ এপ্রিল থেকে হাঁটার জন্য বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
শিশুদের মধ্যে কোভিড জাতীয় সংক্রমণ নিয়ে ইউরোপে উদ্বেগের কারণ কী?
প্রথম পর্যায়, প্রাথমিক পর্যায়: শুরু ১১ মে থেকে। ছোট ব্যবসা কঠোর নিরাপত্তা বিধি মেনে খোলা যাবে। যেমন কেবলমাত্র ব্যক্তিগত অ্যাপয়েন্টমেন্টের ভিত্তিতে জিম খোলা যাবে । এ ছাড়া হোটেল ও পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থাগুলিও খোলা যাবে, তবে কমন এরিয়া বন্ধ থাকবে এবং কিছু নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ থাকবে।
উপাসনাস্থল খোলা যাবে, তবে সেখানে যত লোক ঝরে, তার এক তৃতীয়াংশ উপস্থিত হতে পারবেন। ছাদের উপর বার খোলা যাবে, তবে সেখানে মোট যতজন যেতে পারেন তার ৩০ শতাংশ মানুষ উপস্থিত হতে পারবেন। এই পর্যায়ে সীমিত সংখ্যক মানুষের মধ্যে কিছুটা পরিমাণ সামাজিক সংস্রব চালু করতে হবে, সেটাও তৎকালীন পরিস্থিতি বুঝে।
দ্বিতীয় তথা অন্তর্বর্তী পর্যায়: ২৫ মে থেকে শুরু। এই পর্যায়ে শিকার ও ক্রীড়ামূলক মাছ ধরা শুরু হবে, এক তৃতীয়াংশ দর্শক নিয়ে খুলবে সিনেমা ও অডিটোরিয়াম। স্মৃতিসৌধ ও সাংস্কৃতিক স্থানগুলি, যথা প্রদর্শনী ও সেমিনার এক তৃতীয়াংশ উপস্থিতি নিয়ে শুরু হবে। ৫০ জনের কম জনকে নিয়ে বন্ধ জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে। আউটডোরে কোনও অনুষ্ঠানের শর্ত, সেখানে ৪০০-র কম দর্শক-শ্রোতা থাকবেন এবং তাঁরা উপবিষ্ট থাকবেন। সমস্ত উপাসনাস্থলে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মানুষ উপস্থিত থাকতে পারবেন।
সেক্স হরমোনের কারণেই কি কোভিড সংক্রমণে মহিলাদের মৃত্যুহার কম?
তৃতীয় তথা অন্তিম পর্যায়: শুরু হবে ৮ জুন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে সাধারণ চলাচল আরও খোলামেলা হবে। কেউ বাইরে গেলে,বিশেষ করে গণপরিবহণ ব্যবহার করলে মাস্ক পরার সুপারিশ করা হয়েছে। বাণিজ্যিক স্থানে মোট যত লোক ধরে তার ৫০ শতাংশ উপস্থিত হতে পারেন। এই পর্যায়ে সমুদ্রসৈকতও খোলা যাবে। অন্য প্রদেশ বা দ্বীপে যাওয়া এই পর্যায় সম্পূর্ণ হওয়ার আগে পর্যন্ত বন্ধই থাকবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন