Advertisment

ফের র‍্যাপিড টেস্ট বন্ধ কেন?

আরটি পিসিআর টেস্ট হলে সাধারণভাবে যে ৮-৯ ঘন্টা সময় রেজাল্ট আসতে লাগে, তার চেয়ে কম সময়ে এই পদ্ধতিতে পরীক্ষার ফল পাওয়া যায়

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Rapid Test Off

আইসিএমআর জানিয়ে দিয়েছে নতুন আমদালি করা কিটের মান ঠিক নেই (ছবি- পার্থ পাল)

সোমবার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ র‍্যাপিড টেস্ট সম্পর্কিত সব প্রশ্নের অবসান ঘটিয়ে দিয়েছে। রাজ্যগুলি নতুন কিট নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছিল, সেগুলি সম্পর্কে আইসিএমআর জানিয়ে দিয়েছে যে গুণগত মানের পরীক্ষায় সেগুলি ব্যর্থ হয়েছে এবং তা সরবরাহকারীদের কাছে ফেরত পাঠানো হবে। 

Advertisment

এর ফলে আইসিএমআর ও রাজ্যগুলির মধ্যে কথা চালাচালি শেষ হল আপাতত। এই পরীক্ষা, আলাপআলোচনার শুরু এবং আন্তর্জাতিক স্তরে এর অবস্থান নিয়ে একবার দেখে নেওয়া যাক।

তেলেঙ্গানায় সংক্রমণ নিচের দিকে

র‍্যাপিড টেস্ট কী?

 আরটি পিসিআর টেস্ট হলে সাধারণভাবে যে ৮-৯ ঘন্টা সময় রেজাল্ট আসতে লাগে, তার চেয়ে কম সময়ে এই পদ্ধতিতে পরীক্ষার ফল পাওয়া যায়।

ভারতের পরিপ্রেক্ষিতে র‍্যাপিড টেস্ট মানে সেরোলজিকাল টেস্ট, যার কিট আনা হয়েছিল চিন থেকে, যেগুলি গুণমানের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে।

এই দুই প্রক্রিয়ার মধ্যে তফাৎ হল, আরটি পিসিআর টেস্টে নাক বা গলার সোয়াব থেকে ভাইরাস খোঁজা হয়, সেরোলজিকাল টেস্টে সাধারণভাবে রক্তের মধ্যে থেকে অ্যান্টিবডি খোঁজা হয়, যা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য শরীরে তৈরি হয়।

এই সংকটমুহূর্তে আর্থিক বৃদ্ধির কার্ভের কী হবে?

রক্তের দুটি উপাদান রয়েছেস প্লাজমা ও রক্তকোষ। প্লাজমা থেকে পুরো রক্তের অন্য উপাদানগুলি বাদ দিয়ে যে সিরাম, সেরোলজিকাল টেস্টে তাই ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

সেরোলজিকাল টেস্ট করতে ৩০ মিনিটের কম সময় লাগে, অন্যদিকে পিসিআর ভিত্তিক কিটে সেই সময়ের পরিমাণ ৯ ঘন্টা।

স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও আইসিএমআর বারংবার বলেছে ডায়াগনোসিসের আদর্শ পদ্ধতি হল আরটি পিসিআর, এবং সেরোলজিকাল টেস্ট কেবলমাত্র মহামারী সম্পর্কিত পরিসংখ্যান সংগ্রহ ও হটস্পটে নজরদারির জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।

অন্য কোনও ধরনের র‍্যাপিড টেস্ট হয়?

আরেকধরনের র‍্যাপিড টেস্ট রয়েছে যেখানে কোনো ব্যক্তির শ্বাসনালী থেকে নমুনা সংগ্রহ করে দেখা হয় যে সেখানে সার্স কোভ ২ ভাইরাসের প্রোটিনের উপস্থিতি রয়েছে কিনা। যদি থাকে, তাহলে সেখানে ভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে বলে ধরা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, "কোভিড ১৯-এর আরেক ধরনের টেস্ট প্রচলিত হয়েছে, যে পরীক্ষায় যাঁদের শরীরে কোভিড-১৯ সংক্রমণ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে তাঁদের রক্তে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি ধরা পড়ে কিনা।

এমপিল্যাড বন্ধ করে কোভিড মোকাবিলায় কতটা সুবিধে হতে পারে?

অ্যান্টিবডি ভাইরাস সংক্রমণের কয়েকদিন বা সপ্তাহ পরে তৈরি হয়। অ্যান্টিবডির ক্ষমতা বয়স, পুষ্টির পরিমাণ, রোগ কতটা মারাত্মক এবং এইচআইভি-র মত সংক্রমণ বা কিছু ওষুধের উপর নির্ভর করে। কোভিড-১৯ সংক্রমিত কিছুজনের আরটি পিসিআর পরীক্ষায় সংক্রমণ ধরা পড়লেও র‍্যাপিড পরীক্ষায় দুর্বল, বিলম্বিত অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে, বা পরিলক্ষিত হয়ইনি।"

ভারতে এই টেস্ট কিটই আমদানি করা হয়েছিল।

র‍্যাপিড টেস্ট নিয়ে ভারতের অবস্থান কী, এবং তা কীভাবে কার্যকর হল?

কেরালায় প্রথম র‍্যাপিড টেস্ট শুরু হয়। তামিলনাড়ু ও ছত্তিসগড়ের মত রাজ্যেও আইসিএমআরের নির্দেশানুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়া চিন মডেলে র‍্যাপিড টেস্ট শুরু হয়। ৪ এপ্রিল র‍্যাপিড টেস্ট নিয়ে আইসিএমআর বলে, এগুলি কেবল মাত্র কনটেনমেন্ট জোন বা বড় আকারের পরিযায়ী অংশের মধ্যে ব্যবহার করা যাবে।

তবে চিন থেকে কিট এসে পৌঁছবার পরই বিভিন্ন রাজ্য থেকে অভিযোগ আসতে শুরু করে। ২১ এপ্রিল, বিভিন্ন রাজ্য এই কিটের মাধ্যমে পরীক্ষা স্থগিত করে দেবার পর আইসিএমআরের ডক্টর আর আর গঙ্গাখেড়েকর বলেন, "আমরা অভিযোগ পাচ্ছি আরটি পিসিআর পরীক্ষায় যাঁদের পজিটিভ এসেছে, তাঁদের কিটের মাধ্যমে পরীক্ষায় সঠিকতার রেঞ্জ ৬ থেকে ৭১ শতাংশ। এটার তদন্ত হওয়া উচিত।"

কিডনির কতটা ক্ষতি করতে পারে করোনাভাইরাস?

তিনি আরও বলেন, "মাত্র সাড়ে তিন মাসের মধ্যে এই কিট তৈরি হয়েছে, এর আরও সূক্ষ্ণতার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা আটটি কেন্দ্র থেকে এই কিট পরীক্ষার জন্য প্রতিনিধি পাঠাব। ইতিমধ্যে রাজ্যগুলির কাছে আমাদের পরামর্শ পরবর্তী দুদিন যেন কিট ব্যবহার না করা হয়।"

র‍্যাপিড টেস্টের সারা বিশ্বের অভিজ্ঞতা কেমন?

সিঙ্গাপুরে প্রথম র‍্যাপিড টেস্ট করা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ায় দুর্ধর্ষ উদাহরণ তৈরি করে। সেখানে সংক্রমণ সংখ্যা কমাবার জন্য ব্যাপকহারে জন পরীক্ষা করা হয়, তার মধ্যে ছিল সেরোলজিকাল টেস্টও।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাঁরা সার্স ও মার্সের অভিজ্ঞতা থেকে দ্রুত ও সিদ্ধান্তমূলক অ্যাকশন নিয়েছেন। সারা পৃথিবীতেই এই টেস্ট ব্যাপক প্রশংসিত, দক্ষিণ কোরিয়ার সাফল্যের পিছনে হাসপাতাল পরিকাঠামোর সঙ্গে এই কিটকেও সাফল্যের ভাগ দেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অবশ্য র‍্যাপিড টেস্টিং নিয়ে সাবধানী পা ফেলেছে। ৮ এপ্রিল তাদের তরফ থেকে বলা হয়, "এই টেস্টের সুপারিশ করবার আগে তা যেন যথাযথ জনসংখ্যা ও পরিস্থিতির মধ্যে যাচাই করে নেওয়া হয়।

উপসর্গবিহীনরা কতদূর কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়াতে পারেন?

যথাযথ পরীক্ষা না হলে সংক্রমিতরা বাদ পড়ে যেতে পারেন বা অসংক্রমিতরা রোগী হিসেবে চিহ্নিত হতে পারেন, যার জেরে নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।  বর্তমানে সাম্প্রতিক প্রমাণাদির উপর ভিত্তি করে, বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থার সুপারিশ এগুলি কেবলমাত্র গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হোক। এগুলি ক্লিনিকাল সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে ব্যবহার করা উচিত নয়।"

হুয়ের এই বক্তব্যে ভাইরাস ও অ্যান্টিবডি চিহ্নিত করণ, উভয় র‍্যাপিড টেস্টের সম্পর্কেই বলা হয়েছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

WHO coronavirus COVID-19
Advertisment