India-Fiji: রাবুকার পাশে মোদী, ভারত-ফিজি সম্পর্কে নতুন মাত্রা, বিপাকে প্রবাসী ভারতীয়রা?

India-Fiji: প্রবাসী ভারতীয়দের অবদান স্বীকার এবং ১৯৮৭ সালের অভ্যুত্থানের পর রাবুকার ক্ষমা চাওয়ার পরও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ফিজি। প্রবাসী ভারতীয়দের ওপর অত্যাচারীদের পাশে মোদী?

India-Fiji: প্রবাসী ভারতীয়দের অবদান স্বীকার এবং ১৯৮৭ সালের অভ্যুত্থানের পর রাবুকার ক্ষমা চাওয়ার পরও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ফিজি। প্রবাসী ভারতীয়দের ওপর অত্যাচারীদের পাশে মোদী?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
India-Fiji

India-Fiji: ভারত–ফিজি সম্পর্ক। সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫, নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডানে) এবং ফিজির প্রধানমন্ত্রী সিতেনি লিগামামাদা রাবুকা।

India-Fiji: ভারত ও ফিজি অভিবাসন ও গতিশীলতা বিষয়ক ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ফিজির প্রধানমন্ত্রী সিতেনি লিগামামাদা রাবুকার বৈঠকে কৃষি, মৎস্য, পর্যটন, পরিকাঠামো, প্রতিরক্ষা এবং খেলাধুলাকে কেন্দ্র করে সম্পর্ক জোরদারের বিষয়ে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফিজিতে বহু ভারতীয় থাকেন

Advertisment

ফিজিতে একসময় চিনির বাগানে ভারতীয় চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকরা কাজ করতেন। বর্তমানে কৃষিক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়লেও ভারতের সহায়তায় কৃষিতে ড্রোনের ব্যবহার, চুক্তিবদ্ধ চাষ এবং জৈব কৃষির নতুন সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে ফিজিতে। একইসঙ্গে ফিজির উর্বর মাটি এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত কৃষি উন্নয়নে ভারতীয় বিনিয়োগকে আকর্ষণ করতে পারে।

আরও পড়ুন- প্রথম দিনই দুর্দান্ত বৃদ্ধি, বিক্রম সোলারের শেয়ার নিয়ে বাজারে হইচই

Advertisment

ফিজিতে প্রতিবছর জনসংখ্যার থেকেও বেশি লোক বেড়াতে যান। কিন্তু, পরিকাঠামোর সীমাবদ্ধতায় কারণে হোটেল এবং নতুন বিমানবন্দরের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। ভারত এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে আগ্রহী। ফিজিকে বিয়ের গন্তব্য বা বলিউড শ্যুটিং ডেস্টিনেশন হিসেবেও গড়ে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন- গণেশ চতুর্থীতে আপনার মেহেন্দির ডিজাইন করবেন কেমন, জানুন পুজোর সেরা নকশা কোনগুলো?

ভারত বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম বড় চিংড়ি উৎপাদক। ফিজির টুনা এবং মুক্তা শিল্পের সঙ্গে ভারতের সহযোগিতা ভবিষ্যতে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। বিশেষত দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের মুক্তা আন্তর্জাতিকভাবে অত্যন্ত জনপ্রিয়। দুই দেশ প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ, সাইবার নিরাপত্তা, হোয়াইট শিপিং ইনফরমেশন এক্সচেঞ্জ এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তায় ভারত ফিজিকে সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ ফিজি যাবে এবং ফিজিকে দুটি অ্যাম্বুল্যান্স উপহার দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন- আপনি কি দিনে ৮ গ্লাস জল খাচ্ছেন, জানেন অতিরিক্ত জলপানে কী হয়?

খেলাধুলাও সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ভারতের পক্ষ থেকে ফিজিতে ক্রিকেট কোচ পাঠানো হবে, যা স্থানীয় প্রতিভা বিকাশে সহায়ক হবে। একইভাবে ভারতে রাগবির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। সেক্ষেত্রে ফিজি সাহায্য করবে। এভাবেই ক্রিকেট ডিপ্লোম্যাসি (Cricket Diplomacy) দুই দেশের জনগণকে আরও কাছাকাছি আনতে পারে।

আরও পড়ুন- 'মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা', গানেই বাঙালিকে সুর বেঁধে দিয়েছিলেন অতুলপ্রসাদ

ফিজিতে বিশালসংখ্যক প্রবাসী ভারতীয় বসবাস করেন। তাঁদের অনেকেই ১৮৭৯ থেকে ১৯১৬ সালের মধ্যে চিনির বাগানে কাজ করতে গিয়ে সেখানেই স্থায়ী হয়ে গেছেন। আজ তাঁরা ফিজির অর্থনীতি ও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তবে ফিজির রাজনীতিতে ইন্দো-ফিজিয়ানদের যাত্রা আজও মসৃণ নয়।

১৯৮৭ সালে এই রাবুকার নেতৃত্বেই ফিজিতে অভ্যুত্থান ঘটেছিল। যা প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। এ সময় ব্যাপক ভারত-বিরোধী দাঙ্গাও হয়েছিল। যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন প্রবাসী ভারতীয়রা। তবে, সেই গালে চড় মারার পর ক্ষমা চাওয়ার কায়দায় রাবুকা বহুবার তাঁর ভুল স্বীকার করেছেন এবং ২০২৩ সালে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছেন। তাঁর বক্তব্যে ইন্দো-ফিজিয়ানদের ফিজিতে অবদানের স্বীকৃতি প্রতিফলিত হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতেই মোদী সরকার মনে করছে, ভারত–ফিজি সম্পর্ক শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বা কূটনীতি নয়। বরং ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রবাসী ভারতীয়দের অবদানের ওপর ভিত্তি করে দৃঢ় হবে। কৃষি থেকে ক্রিকেট—বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা আগামী দিনে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।

Fiji India