LIC Adani Investment: এলআইসি-আদানিকে জুড়ে কেন্দ্রের ভয়ংকর পরিকল্পনা মিডিয়ায় ফাঁস, সাফাই সরকারের!

LIC Adani Investment Row: ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারত সরকার এলআইসিকে আদানি গ্রুপে ৩.৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। তারপরই শুরু জলঘোলা।

LIC Adani Investment Row: ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারত সরকার এলআইসিকে আদানি গ্রুপে ৩.৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। তারপরই শুরু জলঘোলা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
LIC and Adani: এলআইসি এবং আদানি ইস্যুতে চরম বিতর্ক!

LIC and Adani: এলআইসি এবং আদানি ইস্যুতে চরম বিতর্ক!

LIC Adani Investment Row: ওয়াশিংটন পোস্টের সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট ঘিরে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে। মার্কিন সংবাদপত্রটি দাবি করেছে, ভারত সরকার নাকি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন (LIC)-কে প্রায় ৩.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আদানি গ্রুপে বিনিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। তবে, এলআইসি এবং অর্থ মন্ত্রক উভয়েই এই অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা' বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

Advertisment

রিপোর্টে কী বলা হয়েছে?

ওয়াশিংটন পোস্টের দাবি, ডিপার্টমেন্ট অব ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস (DFS), এলআইসি, এবং নীতি আয়োগ-এর যৌথ উদ্যোগে একটি বিনিয়োগ প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছিল, যা পরে অর্থ মন্ত্রকের অনুমোদন পায়। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই পরিকল্পনার মাধ্যমে আদানি গ্রুপে সরকারি তহবিলের বড় অংশ বিনিয়োগের পথ তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন- তিল দেখে নারীর স্বভাব জানুন! মেয়েদের শরীরে কোথায় তিল থাকলে তার কী অর্থ?

Advertisment

তবে, এলআইসি এর প্রেক্ষিতে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'আমাদের বিনিয়োগ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে হয়, বোর্ড অনুমোদিত নীতিমালার আওতায়। কোনও সরকারি সংস্থা বা DFS এর এতে কোনও ভূমিকা নেই।' DFS-এর এক আধিকারিক বলেন, 'আমাদের সংস্থা কখনও এলআইসিকে আদানি গ্রুপে বিনিয়োগের জন্য চিঠি দেয়নি।'

আরও পড়ুন- স্রেফ এই জিনিসটা ব্যবহার করুন, ঘরের ত্রিসীমানায় ঘেঁষবে না মশা!

LIC-এর অবস্থান

এলআইসির এক সিনিয়র নির্বাহী জানান, সংস্থার বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত দীর্ঘমেয়াদি এবং IRDAI-র নিয়ম অনুযায়ী হয়। তাঁর কথায়, 'আমাদের আদানি গ্রুপে প্রায় ৩৯,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। তবে রিলায়েন্স, টাটা ও বিড়লা গ্রুপে আমাদের বিনিয়োগ আরও অনেক বেশি। প্রতিবছর ৫-৬ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগের মধ্যে আদানির অংশ এক শতাংশেরও কম।' এছাড়াও তিনি বলেন, 'আদানি পোর্টের ৫,০০০ কোটি টাকার NCD বিনিয়োগটি পুরোপুরি আর্থিক যাচাই-বাছাইয়ের পরেই হয়েছে।'

আরও পড়ুন- গোদাবরীর তীরে রামায়ণের পঞ্চবটী! কীভাবে যাবেন রামের পদধূলিতে ধন্য এই তীর্থে?

কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া

রিপোর্ট প্রকাশের পর কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে মন্তব্য করেন, 'দেশের সাধারণ নাগরিক নয়, ‘মোদিজির সেরা বন্ধু’ই আসল Direct Benefit Transfer-এর সুবিধাভোগী।' দলীয় মুখপাত্র জয়রাম রমেশ প্রশ্ন তোলেন, 'অর্থ মন্ত্রক ও নীতিআয়োগের কর্মকর্তারা কার চাপে একটি বেসরকারি সংস্থাকে রক্ষা করতে চেয়েছিলেন?' 

আরও পড়ুন- এই রোগে অভিনেতা সতীশ শাহর মৃত্যু, বিকল হওয়ার আগে ৫ সংকেত দেয় কিডনি!

আদানি গ্রুপের প্রতিক্রিয়া

আদানি গ্রুপ ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছে, 'সরকারের কোনও নির্দেশে আমরা এলআইসি তহবিল পাইনি। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমাদের বৃদ্ধি প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বের অনেক আগেই শুরু হয়েছে।' 

বাস্তব পরিস্থিতি

২০২২ সালের ডিসেম্বরে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্টে জানা গিয়েছিল, এলআইসি সেপ্টেম্বর ২০২০ থেকে মাত্র আট কোয়ার্টারে আদানি গ্রুপের চারটি তালিকাভুক্ত সংস্থায় তার শেয়ার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে। তখন আদানি গ্রুপে এলআইসির মোট বিনিয়োগের মূল্য ছিল ৭৪,১৪২ কোটি টাকা, যা ২০২০ সালের তুলনায় ১০ গুণ বেড়েছে। তবে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে হিন্দেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশের পর আদানি গ্রুপের শেয়ার মূল্যে বড় ধাক্কা লাগে, এবং প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ বাজার থেকে উধাও হয়ে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে, সেপ্টেম্বরে SEBI আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে শেয়ার কারচুপি বা তহবিল আত্মসাতের অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে জানিয়েছে, 'সংশ্লিষ্ট পক্ষের কোনও নিয়মভঙ্গের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।' 

মূল কথা

সরকার, এলআইসি, ও আদানি— তিন পক্ষই ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টকে অস্বীকার করেছে। তবে রাজনৈতিক মহলে এই ইস্যুতে নতুন করে বিতর্ক ছড়িয়েছে। বিনিয়োগ, স্বচ্ছতা ও সরকারি সংস্থার স্বাধীনতা— এই তিনটি প্রশ্নের উত্তর এখন সময়ই দেবে।

lic Adani