Sri Lanka-Dissanayake: প্রেসিডেন্ট হওয়ার একদিন পর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকে মঙ্গলবার দ্বীপরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভেঙে দিলেন। তিনি ১৪ নভেম্বর নির্বাচনের ঘোষণা করেছেন। প্রচারের সময়ই দিসানায়েক ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে ক্ষমতায় আসার পরে, তিনি তাঁর নীতিগুলো অনুসরণ করার জন্য একটি নতুন জনাদেশ চাইবেন। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে তিনি বলেছিলেন, 'জনগণ যা চায় তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন পার্লামেন্ট চালিয়ে যাওয়ার কোনও মানে নেই।'
একনজরে:
- ২২৫ সদস্যের পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন দিসানায়েকে।
- শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নতুন প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেছেন।
- পরবর্তী নির্বাচন ১৪ নভেম্বর হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি
শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে সদস্য সংখ্যা ২২৫। ভেঙে দেওয়া পার্লামেন্টে, দিসানায়েকের নেতৃত্বাধীন সমাজতান্ত্রিক ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোট এবং তার জনতা বিমুক্তি পেরামুনা (জেভিপি) দলের মাত্র তিন জন জনপ্রতিনিধি ছিলেন। কারণ, ২০২২ পর্যন্ত এনপিপি (NPP) শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে কার্যত জনসমর্থনহীন বলেই পরিচিত ছিল। সেই ধারণাই বদলেছে শনিবার। দিসানায়েকের প্রতি জনসমর্থন স্পষ্ট হয়েছে। যাতে এনপিপির উত্থানও ঘটেছে বলেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
গণবিক্ষোভ
২০২২ সালে শ্রীলঙ্কা গণবিক্ষোভে কেঁপে ওঠে। সেই সময় এনপিপি বছরের পর বছর ধরে চলা অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাস্তার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে। প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিয়েছে। যার জেরে শক্তিশালী রাজাপক্ষে পরিবার শ্রীলঙ্কায় ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষে শ্রীলঙ্কা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। সেই পরিস্থিতিতে ২০২২ সালের জুলাইয়ে রনিল বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হন। তাঁকে রাজাপক্ষের শ্রীলঙ্কা পোড়ুজানা পেরামুনা (SLPP) পার্টি পার্লামেন্টে সমর্থন করেছিল। এই পরিস্থিতির ক্ষমতায় এলে, দিসানায়েকে যে পার্লামেন্ট ভেঙে দেবেন, আর নতুন করে নির্বাচন করাবেন, যাতে এনপিপি লাভবান হতে পারে, সেই সম্ভাবনা ছিলই।
শ্রীলঙ্কায় যেভাবে সরকার চলে
প্রযুক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হতেই পারেন। কিন্তু বাস্তবে, ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্টকে কার্যনির্বাহী ক্ষমতা দেওয়ার পর থেকে, দুটি কার্যালয় পারস্পরিকভাবে সংযুক্ত হয়ে গিয়েছে। আর তারপর থেকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী সেদেশের প্রেসিডেন্টের ডেপুটি হিসেবে কাজ করেন। আর, প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্র এবং সরকারের প্রধান। সেইসঙ্গে তিনি শ্রীলঙ্কার সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়কও। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার প্রধান। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের আছে। শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট সরাসরি ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন। শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী পদাধিকারবলে সেদেশের পার্লামেন্ট এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার প্রধান। তিনি প্রেসিডেন্টের প্রধান উপদেষ্টাও। কখনও সখনও তিনি প্রেসিডেন্টের স্থলাভিষিক্তও হন। যেমন, গোটাবায়া যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন বিক্রমাসিংহে ছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- বামপন্থী দিসানায়েকের শ্রীলঙ্কা জয়! পিছনে চিনের হাত?
এখন কী হবে?
সোমবার দিসানায়েকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে, দীনেশ গুণবর্ধনে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন। মঙ্গলবার দিসানায়েকে পার্লামেন্টের তিন এনপিপি সদস্যের একজন হরিণী অমরাসুরিয়াকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। অমরাসুরিয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার প্রধান হয়েছেন। নভেম্বরে নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে অমরাসুরিয়া সরকার চালাবেন। তারপর ভোট হলে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হবে।