/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/14/telangana-phone-tapping-2025-08-14-17-20-20.jpg)
Telangana Phone Tapping: তেলেঙ্গানায় ফোন ট্যাপিং কেলেঙ্কারি।
Telangana Phone Tapping: তেলেঙ্গানায় অবৈধ ফোন ট্যাপিং ও নজরদারি কেলেঙ্কারিতে নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এ রেবন্ত রেড্ডি যখন বিরোধী দলের নেতা এবং তেলেঙ্গানা প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি ছিলেন, তখন তাঁর পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের ওপর দীর্ঘ সময় ধরে নিয়মিত নজরদারি চালানো হয়েছিল।
তদন্তকারীদের দাবি, ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রেবন্ত রেড্ডি ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের ফোন কল, চলাফেরার তথ্য এবং ব্যক্তিগত তথ্য গোপনে সংগ্রহ করা হয়েছিল। এ সময়ে তেলেঙ্গানায় ক্ষমতায় ছিল ভারত রাষ্ট্র সমিতি (BRS)। তারা ২০১৪ সালে রাজ্য গঠনের পর থেকেই তেলেঙ্গানা শাসন করছিল। তদন্তের নথি অনুযায়ী, তেলেঙ্গানা পুলিশের স্পেশাল ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ (SIB) এই নজরদারি অভিযানে জড়িত ছিল। শুধু রেবন্ত রেড্ডিই নয়, আরও প্রায় ৬০০ জন রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ী, বিচারপতি ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও টার্গেট করা হয়েছিল। তাঁদের ওপরও চলত নজরদারি।
আরও পড়ুন- জেনে নিন সৌন্দর্যের গোপন রহস্য! ত্বক আর চুল হবে উজ্জ্বল, ঝলমলে
'RR Module' নামে বিশেষ অপারেশন
তদন্তে জানা গিয়েছে, রেবন্ত রেড্ডির জন্য একটি আলাদা 'মডিউল' তৈরি করা হয়েছিল। যার নাম দেওয়া হয়েছিল, 'RR Module'। এর মাধ্যমে তাঁর পরিবারের সদস্য, বন্ধু, গাড়িচালক এমনকী শৈশবের সঙ্গীদেরও প্রোফাইল তৈরি করা হয়েছিল। এসব প্রোফাইলের নাম, ঠিকানা, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ভ্রমণের সময়সীমা, তারিখ এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগের তথ্য নথিভুক্ত রাখা হয়েছিল। এই কাজের নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন ডিএসপি প্রণীত রাও। তিনি বর্তমানে জামিনে মুক্ত। অভিযোগ, তিনি তৎকালীন এসআইবি (SIB) প্রধান প্রভাকর রাওয়ের নির্দেশে কাজ করছিলেন।
আরও পড়ুন- স্বাধীনতা দিবসে আপনার অফিস, ঘর এভাবে সাজান, মুগ্ধ হবে সবাই
তদন্তকারীদের মতে, এই নজরদারির অন্যতম মূল লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের নির্বাচনী তহবিল ও কাজে বাধা সৃষ্টি করা। নির্বাচনের সময় বিরোধী দলের অর্থ বাজেয়াপ্ত করার জন্য নজরদারির তথ্য ব্যবহার করা হত। উদাহরণ হিসেবে, ২০২২ সালের মুনুগোড উপনির্বাচনে বিজেপি নেতাদের কাছ থেকে ১ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সেটা এই নজরদারির ফলেই সম্ভব হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- বিপ্লবী থেকে ঋষি, কতটুকু জানেন শ্রীঅরবিন্দকে?
রেবন্ত রেড্ডি নিজেও বহুবার প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছিলেন যে তাঁকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তবে, বিআরএস (BRS)-এর পক্ষ থেকে এমএলসি ও মুখপাত্র দাসুজু শ্রাবণ কুমার দাবি করেছেন, 'বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পুলিশকে ব্যবহার করে একটি ভিত্তিহীন তদন্ত চালাচ্ছেন।' অন্যদিকে, অভিযুক্ত প্রভাকর রাওয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন যে তাঁর মক্কেল একজন সৎ আধিকারিক। আর, কোনও এবং অবৈধ নজরদারিতে জড়িত ছিলেন না।
আরও পড়ুন- জন্মাষ্টমী ২০২৫, কৃষ্ণের বাঁশি দিয়ে দূর করুন বাস্তু দোষ, আসবে শান্তি-সমৃদ্ধি
তেলেঙ্গানা পুলিশ ইতিমধ্যে পাঁচজন প্রবীণ পুলিশ আধিকারিক ও একজন টিভি চ্যানেল অপারেটরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। অন্তত ১১ জন সাক্ষী দাবি করেছেন, তাঁরা রাজনৈতিক নেতাদের কথোপকথন শোনার কাজে যুক্ত ছিলেন। এই সাক্ষীদের মূলত বামপন্থী চরমপন্থীদের পর্যবেক্ষণের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু, পরবর্তীতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের টার্গেট করতে বলা হয়। এই তদন্ত এখনও চলছে এবং শিগগিরই চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
তেলেঙ্গানার এই ফোন ট্যাপিং কেলেঙ্কারি শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনেই নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে এটি ভারতের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নজরদারির ঘটনা হয়ে উঠতে পারে।