Sri Aurobindo: 'The Most Dangerous Indian', বিপ্লবী থেকে ঋষি, কতটুকু জানেন শ্রীঅরবিন্দকে?

Sri Aurobindo: ১৫ আগস্ট জন্ম। তিনি ছিলেন ইংরেজদের চোখে 'The Most Dangerous Indian'। বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ থেকে ঋষি শ্রীঅরবিন্দে রূপান্তরের বিস্ময়কর কাহিনি জানুন।

Sri Aurobindo: ১৫ আগস্ট জন্ম। তিনি ছিলেন ইংরেজদের চোখে 'The Most Dangerous Indian'। বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ থেকে ঋষি শ্রীঅরবিন্দে রূপান্তরের বিস্ময়কর কাহিনি জানুন।

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Sri Aurobindo

Sri Aurobindo: ঋষি অরবিন্দ।

Sri Aurobindo: ১৫ আগস্ট—ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিনেই জন্মেছিলেন এমন এক বাঙালি, যাঁকে ব্রিটিশ শাসকরা ঘোষণা করেছিল, 'The Most Dangerous Indian'। তিনি আর কেউ নন, বিপ্লবী থেকে আধ্যাত্মিক মহাপুরুষে পরিণত হওয়া শ্রীঅরবিন্দ।

Advertisment

১৮৭২ সালের ১৫ আগস্ট, কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন অরবিন্দ ঘোষ। বাবা ডা. কৃষ্ণধন ঘোষ ছিলেন বিলেতফেরত চিকিৎসক। আর মা স্বর্ণলতা দেবী ছিলেন গৃহিণী। মাত্র সাত বছর বয়সে অরবিন্দকে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়। লক্ষ্য ছিল তাঁকে নিখাদ একজন ইংরেজ ভদ্রলোক বানানো। সেন্ট পলস স্কুল এবং পরে কেমব্রিজের কিংস কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি। গ্রিক, লাতিন, সাহিত্য এবং ইতিহাসে অসামান্য দক্ষতা অর্জন করেন।

আরও পড়ুন- জন্মাষ্টমী ২০২৫, কৃষ্ণের বাঁশি দিয়ে দূর করুন বাস্তু দোষ, আসবে শান্তি-সমৃদ্ধি

Advertisment

ইংল্যান্ডে পড়াশোনার সময়েই ভারতীয় স্বাধীনতার স্বপ্ন বুনতে শুরু করেন অরবিন্দ। কয়েকজন ভারতীয় ছাত্রের সঙ্গে মিলে গড়ে তোলেন, 'Lotus and Dagger' নামে একটি গোপন সংগঠন। ১৮৯৩ সালে দেশে ফিরে বরোদা রাজ্যে চাকরি শুরু করেন, কিন্তু ১৯০৬ সালে কলকাতায় এসে পুরোপুরি যুক্ত হন গোপন বিপ্লবী আন্দোলনে। ‘বন্দে মাতরম’ পত্রিকায় তাঁর লেখা তীব্র ইংরেজ বিরোধী নিবন্ধ ব্রিটিশদের উদ্বেগ বাড়িয়ে তোলে। 

বিপ্লবী বার্তা

অনুশীলন সমিতি ও যুগান্তর পত্রিকার মাধ্যমে বিপ্লবী বার্তা ছড়িয়ে দেন। ১৯০৮ সালের আলিপুর বোমা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাবাসও ভোগ করেন। এই মামলায় তাঁর হয়ে লড়েছিলেন ব্যারিস্টার চিত্তরঞ্জন দাশ। যদিও তিনি মুক্তি পান, তাঁর ভাই বারীন ঘোষ-সহ অনেকেই আন্দামানের সেলুলার জেলে বছরের পর বছর কাটান।

আরও পড়ুন- জেনে নিন স্বাধীনতা দিবসের রেসিপি, ঘরেই বানান ৪টি ত্রিবর্ণ খাবার

জেলে থাকার সময় অরবিন্দের জীবনে আসে নাটকীয় পরিবর্তন। ধ্যান ও আধ্যাত্মিক সাধনার প্রতি গভীর আকর্ষণ জন্ম নেয়। পরে তিনি লিখেছিলেন, 'জেলে থাকার সময় আমি অবিরাম শুনতে পেতাম স্বামী বিবেকানন্দের বাণী।' 
১৯১০ সালে রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে পন্ডিচেরীতে চলে আসেন। এখানে শুরু করেন যোগসাধনা ও দর্শনের গভীর অনুশীলন। ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন শ্রী অরবিন্দ আশ্রম, যা আজও যোগ ও আধ্যাত্মিক চর্চার এক প্রধান কেন্দ্র।

আরও পড়ুন-এবার কততম স্বাধীনতা দিবস? ধন্দ কাটাতে সরকারি মত জেনে নিন এখানে

শ্রীঅরবিন্দ শুধু বিপ্লবীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক ও কবি। তাঁর রচিত ‘The Life Divine’, ‘Essays on the Gita’, মহাকাব্য ‘Savitri’ আজও বিশ্ব সাহিত্যের মূল্যবান সম্পদ। ১৯৪৩ সালে সাহিত্য ও ১৯৫০ সালে শান্তির নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ন- বর্ষায় জল জমে, যাত্রীদের জন্য অভিনব সমাধান টোটোচালকের! ভিডিও ভাইরাল

১৯৫০ সালের ৫ ডিসেম্বর প্রয়াত হন শ্রীঅরবিন্দ। তাঁর দেহ সমাধিস্থ করার আগে চার দিন ভক্তদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা হয়েছিল। আশ্চর্যের বিষয়, ভক্তরা জানিয়েছেন এই সময় তাঁর দেহে পচন ধরেনি। আজও পন্ডিচেরির বা পুদুচেরির শ্রীঅরবিন্দ আশ্রমে দেশি-বিদেশি অসংখ্য মানুষ আসেন, তাঁর শিক্ষা ও দর্শন গ্রহণ করতে। শ্রীঅরবিন্দের জীবন যেন এক সেতু। যা বিপ্লবের আগুন থেকে আধ্যাত্মিক শান্তির পথে নিয়ে যাওয়ার পথ। তিনি প্রমাণ করে গেছেন, সত্যিকারের স্বাধীনতা শুধু রাজনৈতিক নয়। তাতে আত্মারও মুক্তি হয়ে থাকে।

India Aurobindo