অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের আঁচ চরমে। বিহার, উত্তরপ্রদেশে, হরিয়ানা, তেলেঙ্গানা সহ দেশের একাধিক রাজ্যে পুড়ছে ট্রেন, চলছে সড়ক অবরোধ। ভাঙচুর হহচ্ছে সরকারি সম্পত্তিতে। এই পরিস্থিতিতে হিংসা বিক্ষোভ ঠেকাতে মরিয়া পুলিশ। আইন লঙ্ঘনের জন্য উত্তরপ্রদেশ পুলিশ বালিয়ায় ৪০০ অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। সরকারি রেলওয়ে পুলিশও ১৫০ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
সার্কেল অফিসার প্রীতি ত্রিপাঠী শনিবার বলেছেন, "বালিয়া রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে, রেলওয়ে আইন, আইপিসি এবং জনসম্পত্তির ক্ষতি প্রতিরোধ আইনের অধীনে ৪০০ অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভোর সাড়ে তিনটের সময় একটি মামলা দায়ের করা হয়।" ধৃত ১০৯ জনকে সিটি ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে পেশ করা হলে অভিযুক্তদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। তাঁর সংযোজন, যারা ট্রেনের বগিতে আগুন দিয়েছে এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করেছে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাসের শেল ছুড়লে তারা বালিয়ায় একটি রেল কোচে আগুন ধরিয়েছিল।
আরও পড়ুন- দাবানলের মতো ছড়াচ্ছে ‘অগ্নিপথ’ বিক্ষোভ, রাজ্যে-রাজ্যে ভাঙচুর-আগুন, সোচ্চার যুব সমাজ
শুক্রবার দিনভর বিক্ষোভকারীরা ট্রেনে ভাংচুর করেছে, বাস ভেঙেছে এবং একটি পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। কারণ তারা অগ্নিপথ প্রকল্পের প্রতিবাদ করেছে। পুলিশের দাবি, বালিয়া, আলিগড়, গৌতম বুদ্ধ নগর এবং বারাণসী সহ রাজ্য জুড়ে ১৭টি জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে।
বালিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৌম্য আগরওয়াল বলেছেন যে জেলায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। তাঁর কথায়, 'সংবেদনশীল স্থানগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে, এবং পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনী এবং ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে পুলিশের কড়া সতর্কতা রয়েছে এবং বালিয়া রেলওয়ে স্টেশনের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত রয়েছে।'
এদিকে, আলিগড়ের জাত্তারিতে, বিক্ষোভকারীদের একটি দল পুলিশের গাড়ি এবং ফাঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেখানে এই প্রকল্পের প্রতিবাদে এক পুলিশ কর্তা আহত হন। যমুনা এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে আলিগড় শহরকে সংযোগকারী হাইওয়েও অবরুদ্ধ।
আরও পড়ুন- ‘দিশাহীন প্রকল্প’, অগ্নিপথ বিতর্কে আগুনে ঘি ঢাললেন সোনিয়া
আলিগড় পুলিশ ৩০ জনকে আটক করেছে। গৌতম বুদ্ধ নগর জেলায় ১৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
আলিগড়ে পুলিশ ফ্ল্যাগ মার্চও করেছে। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে রেল বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল করেছে।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকার সশস্ত্র বাহিনীতে চার বছরের মেয়াদের জন্য সাড়ে ১৭ থেকে সাড়ে ২১ বছর বয়সী যুবকদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রকল্পটি ঘোষমা করেচে। অগ্নিবীরদের মদ্যে২৫ শতাংশকে পরবর্তীতে ১৫ বছরের চাকরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। কেন্দ্রের দাবি, এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হল সামরিক কর্মীদের গড় বয়স কমিয়ে আনা। অগ্নিবীররা কোনও পেনশন পাবেন না। এি প্রকল্প মানতে রাজি নয় সেনা চাকরির পরীক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন- ঘরে-বাইরে চাপ বাড়ছে, ‘অগ্নিপথ’ থেকে হাত গোটাচ্ছে কেন্দ্র? রাহুলের টুইটে জল্পনা তুঙ্গে