পরিবারের সদস্যদের পর পর 'চলে যাওয়া' এক ভারাক্রান্ত আবহ তৈরি করেছে বিজেপির সদর দফতরে। সুষমা স্বরাজের পর অরুণ জেটলির এই প্রয়াণে কার্যত শোকস্তব্ধ দীন দয়াল উপাধ্যায় মার্গে ভারতীয় জনতা পার্টির সদর দফতর। পরিবারের একজন সদস্যর চলে যাওয়া যে কতটা অপূরনীয় ক্ষতির সামনে দাঁড় করিয়ে দেয় সেই সুরই শোনা গেল ভারতীয় জনতা পার্টির অন্দরে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অমিত শাহ, এল কে আদবানি, জয়প্রকাশ নাড্ডা, রাজনাথ সিং, নির্মলা সীতারমণ, প্রকাশ জাভেদকর সকলের গলায় ছিল বিষাদের সুর এবং স্মৃতি রোমন্থন।
আরও পড়ুন- বিদায় অরুণ জেটলি…আজ নিগমবোধ ঘাটে শেষকৃত্য
সুদূর বাহরিন থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রিয় বন্ধু অরুণ জেটলিকে স্মরণ করে বলেন, ‘‘অরুণ জেটলি ছিলেন রাজনৈতিক মহীরূহ। আইন দুনিয়ায় নক্ষত্র ছিলেন। সুবক্তা ছিলেন। ওঁর দারুণ রসবোধ ছিল, যা সহজেই সাধারণ মানুষকে মুগ্ধ করত। অরুণ জেটলির মৃত্যুতে মনে হল আমি আমার একজন মূল্যবান বন্ধুকে হারালাম। ওঁর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। ’’ প্রিয় বন্ধু এবং সহকর্মীর মৃত্যুর খবর পেয়েই আবু ধাবি থেকেই অরুণ জেটলির স্ত্রী সঙ্গীতা এবং ছেলে রোহনকে ফোন করেন মোদী। বিজেপি সূত্রে খবর, মোদী দেশে ফেরার কথা জানালে তাঁরা দুজনেই মোদীকে বারণ করেছেন তাঁর বিদেশ সফর বাতিল করতে।
আরও পড়ুন- ভারতের অর্থনীতিতে জেএসটি এবং দেউলিয়া বিধি এসেছিল জেটলির হাত ধরেই
অন্যদিকে, বিজেপির সভাপতি তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জেটলির মৃত্যু প্রসঙ্গে বলেন, "অরুণ জেটলির মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে দুঃখিত। ওঁর চলে যাওয়া আমার ব্যক্তিগত ক্ষতি। আমি কেবল একজন প্রবীণ নেতাকেই নয়, পরিবারের একজন অবিচ্ছেদ্য সদস্যকেও হারিয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে ওনার সাহায্য এবং অনুপ্রেরণা পেয়ে গেছি।" অন্যদিকে, বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা এল কে আদবানি তাঁর সতীর্থের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। একটি বিবৃতিতে আদবানি বলেন, "কয়েক দশক ধরে অরুণ জেটলি ছিলেন দলের প্রতি নিবেদিত প্রাণ একজন কর্মী। আমি দলের সভাপতি থাকাকালীন ওঁকে দলের কার্যনির্বাহী কমিটিতে যোগদান করিয়েছিলাম। সেখান থেকেই দলের অন্যতম যোগ্য নেতা হিসেবে তৈরি হয়েছিল অরুণ জেটলি"।
আরও পড়ুন- বিদায় জেটলি: এক লড়াকুর অবসান
অরুণ জেটলির প্রয়াণে সংসদে জেটলির উপস্থিতি নিয়ে স্মৃতিবিজরিত বিজেপির কার্যনিবার্হী সভাপতি জে পি নাড্ডা বলেন, "ওঁর উপস্থিতিই আমাদের পথ প্রদর্শক ছিল। অরুণ জেটলির মৃত্যুতে ভারতের রাজনীতিতে যে বিরাট শূন্যস্থান তৈরি হল তা অপূরণীয়। অর্থনীতি হোক কিংবা প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে ভারতকে বিশ্বের প্রথম সারিতে আনার পিছনে ওনার অবদান অনস্বীকার্য"। বিচ্ছেদের সুর আরও স্পষ্ট শোনা গেল বর্তমান অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের গলায়। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী প্রসঙ্গে 'বর্তমান' বললেন, "অরুণ জেটলি ছিলেন আমাদের পরামর্শদাতা, পথ প্রদর্শক এবং শক্তির আধার। তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। এমন একজন মানুষ ছিলেন যিনি প্রত্যেককে সাহায্য করার জন্য সদা প্রস্তুত থাকতেন। তাঁর বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা, যে কোনও বিষয়ে গভীরতা ছিল শিক্ষণীয়"।
Read the full story in English