মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ করেছিলেন বহুরূপী। শিব সেজে বাইক চালিয়ে পথনাটিকা করেছিলেন। কিন্তু সেটাকেই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের নাম দিয়ে শনিবার বহুরূপীকে আটক করে পুলিশ। তবে রবিবার তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, এই ঘটনার পুলিশকে একহাত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিবাদ যে কেউ করতে পারেন, তাই বলে আটক করাকে সমর্থন করেননি মুখ্যমন্ত্রী।
নগাঁওয়ের বিরিঞ্চি বোরা পেশায় একজন সমাজকর্মীও। ননৈ গ্রামে তাঁকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং যুবা মোর্চার অভিযোগে আটক করে পুলিশ। এর পর তাঁর বিরুদ্ধে নগাঁও থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫ এ ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ ওঠে।
বিরিঞ্চি একরাত থানার লকআপে কাটান। তবে রবিবার একটি নোটিস দিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। নগাঁওয়ের পুলিশ সুপার লীনা দোলে জানিয়েছেন, তাঁকে পরে থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, পথনাটিকায় বিরিঞ্চি শিব সেজেছিলেন। তাঁর সঙ্গে পার্বতী সেজে বাইকে চড়ে যাচ্ছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, বাইকের তেল ফুরিয়ে যাওয়ায় পার্বতীর সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়। কারণ শিব তাঁকে বলেন, মূল্যবৃদ্ধির কোপে বাইকে পেট্রল ভরাতে পারছেন না তিনি।
আদতে এই পথনাটিকার মধ্যে দিয়ে মূল্যবৃদ্ধির জেরে মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস অবস্থা দেখাতে চেয়েছিলেন বিরিঞ্চি। তিনি বলেন, "কারও ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল না। আমি এই রূপক ব্যবহার করি এটা বোঝাতে যে মূল্যবৃদ্ধি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে স্বয়ং ঈশ্বরও মর্ত্যে থাকলে বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল হতেন।"
আরও পড়ুন ‘এবার মা ও মা বলার ফল মিলবে…!’, কালী মন্তব্য নিয়ে মালব্যর খোঁচার পাল্টা মহুয়ার
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি এটাও বলেছেন, "অহমিয়া নাটকে দেব-দেবীর রূপ নিয়ে অভিনয় করা নতুন কিছু নয়। কিন্তু পরিস্থিতি এখন এমন যে বাকস্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। শাসকের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না।"
আরও পড়ুন মা কালীর স্তুতি প্রধানমন্ত্রীর গলায়, শক্তির দেবী নিয়ে মন্তব্যে ধুয়ে দিলেন মহুয়াকে?
উল্লেখ্য, এই খবর চাউর হতেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানান, "সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে পথনাটিকা মোটেও ধর্ম অবমাননা নয়। পথনাটিকায় দেব-দেবীর মতো সাজও অন্যায় নয়। যদি না আপত্তিকর মন্তব্য বা জিনিস ব্যবহার করা হয়। নগাঁও পুলিশকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।" এদিকে, অভিযোগকারী যুবা মোর্চার নেতা অনুপম বোরা বলেছেন, "মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু প্রতিবাদের জন্য ঈশ্বরকে ব্যবহার করা ভুল।"