জেল নম্বর ৭, ওয়ার্ড নম্বর ২, সেল নম্বর ১৫- তিহার জেলে এটাই এখন ঠিকানা দেশের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলেই দিনযাপন করতে হবে চিদাম্বরমকে। আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় গ্রেফতারের পর এতদিন সিবিআই হেফাজতে ছিলেন চিদাম্বরম। বৃহস্পতিবার দিল্লির বিশেষ সিবিআই আদালত এ মামলায় তাঁকে শেষ পর্যন্ত জেলেই পাঠালো। জেলে কীভাবে থাকবেন চিদাম্বরম? কী কী বন্দোবস্ত করা হয়েছে এই হেভিওয়েটের জন্য? কখন ডিনার সারবেন? কখনই বা মধ্যাহ্নভোজ করবেন তিনি?
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, তিহার জেলে অন্যান্য কমপ্লেক্সের তুলনায় ৭নং জেল অনেকটাই নিরিবিলি। এখানে প্রধানত পণে অভিযুক্ত আসামীদেরই জায়গা দেওয়া হয়। চিদাম্বরমের মতো হেভিওয়েটের কথা মাথায় রেখেই ৭নং জেলে তাঁকে রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। জেল চত্বরে নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে। সূত্রের খবর, দু’ধরনের সেল রয়েছে এই ৭নং জেলে। একটা হল, একজনের জন্য আলাদা সেল। আরেকটা সেলে থাকতে পারবেন ৩ জন। কিন্তু নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই চিদাম্বরমকে পৃথক সেলে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জেল সূত্রে খবর। ৭ নং জেলে এই মুহূর্তে মোট ৮০০ বন্দি রয়েছেন।
আরও পড়ুন: তিহারের পথেও অর্থনীতি নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ চিদাম্বরমের
জেলে কী কী সুবিধা পাচ্ছেন চিদাম্বরম?
সূত্রের খবর, ৭নং জেলে চিদাম্বরমের জন্য বরাদ্দ পৃথক সেলে থাকছে ওয়েস্টার্ন টয়লেট, ফ্যান, খাট। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর জন্য রাখা থাকছে ৬টি কম্বল। প্রাতঃরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, ডিনারের ব্যবস্থা তো থাকছেই। চাও খেতে পারবেন চিদাম্বরম। নিজের প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র বাড়ি থেকে আনিয়ে খেতে পারবেন, তবে এটা অনুমতিসাপেক্ষ। চিদাম্বরমকে বিশেষ কিছু বই দিতে পারেন তাঁর পরিজনরা। তবে তার জন্যও অনুমতি লাগবে জেল কর্তৃপক্ষের। এছাড়া রোজ পরিবারের ১০ সদস্যের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন এই কংগ্রেস নেতা।
আরও পড়ুন: ‘আমিষ বিরিয়ানি’ খাওয়ানোর অপরাধে ২৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর
জেলে চিদাম্বরমের রোজগার রুটিন
এ প্রসঙ্গে এক জেল আধিকারিক জানিয়েছেন, রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত সেলে রাখা হবে চিদাম্বরমকে। তিনি বলেন, ‘‘সকাল ৬টা থেকে সব বন্দিকে সেল থেকে বেরোতে দিই। চা-বিস্কুট দেওয়া হয়। প্রাতঃরাশের আগে যোগাসন ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ব্রেকফাস্ট দেওয়া হয়। ওই সময়ে ওদের সকালের খাবার সংগ্রহ করতে হবে লাইনে দাঁড়িয়ে। লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়ার সুযোগ পাবেন। অন্যান্য বন্দিদের পড়ানোরও সুযোগ মিলবে’’। আরেক আধিকারিক বলেন, ‘‘সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যে ওঁকে দুপুরের খাবার দেওয়া হবে। এরপর ওঁকে ফের সেলে রাখা হবে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টে পর্যন্ত। এরপর উনি সেল থেকে বেরোনোর অনুমতি পাবেন। অন্যান্য বন্দিদের সঙ্গে বিভিন্ন খেলায় অংশ নিতে পারবেন। সন্ধে ৬টা ৪৫ মিনিট নাগাদ রাতের খাবার দেওয়া হবে ওঁকে’’। তিনি আরও বলেন, রাত ৯টা পর্যন্ত বন্দিরা টিভি দেখার সুযোগ পাবেন। তারপর তাঁদের ফের সেলে রাখা হবে।
রাতের মেনুতে কী থাকবে? জবাবে এক আধিকারিক বলেন, সাধারণ রুটি, ডাল, সব্জি, ভাত দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘জেলের ক্যান্টিন থেকে জলের বোতল দেওয়া হবে। কাগজ-কলমও পাবেন। পরিজনরা ওঁকে পোশাক দিতে পারবেন’’। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, আগামী ২ সপ্তাহ চিদাম্বরমের সেলের পাশে রাখা হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের চেয়ারম্যান ইয়াসিন মালিককে।
Read the full story in English