পাকিস্তানে বিমান দুর্ঘটনায় নয়া তথ্য় সামনে এল। অবতরণের আগে বিমানের উচ্চতা ও গতি নিয়ে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের তিনটি সতর্কতাবাণী উপেক্ষা করেছিলেন পাকিস্তান ইন্টারন্য়াশনাল এয়ারলাইন্সের পাইলট। পরিস্থিতি তিনি নিয়ন্ত্রণ করবেন বলে জানিয়েছিলেন পাইলট, সোমবার একটি রিপোর্টে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য়, গত শুক্রবার ভেঙে পড়ে পিকে-৮৩০৩ বিমান। এই দুর্ঘটনায় ৯৭ জনের মৃত্য়ু হয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে গিয়েছেন ২ জন।
Advertisment
এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) রিপোর্ট উদ্ধৃত করে জিও নিউজ জানিয়েছে, লাহোর-করাচি এয়ারবাস এ-৩২০ যখন জিন্না ইন্টারন্য়াশনাল বিমানবন্দর থেকে ১৫ নটিক্য়াল মাইল দূরে ছিল, সেসময় ১০ হাজার ফিট উচ্চতায় ছিল। ওই সময় বিমানটির উচ্চতা থাকার কথা ছিল ৭ হাজার ফিট। এ সময় এটিসি-র তরফে সতর্কতা করা হয়েছিল পাইলটকে।
বিমানটির উচ্চতা কমানোর পরিবর্তে পাইলট জানিয়েছিলেন, তাঁর আয়ত্তেই রয়েছে গোটা পরিস্থিতি। যখন বিমানবন্দর থেকে ১০ নটিক্য়াল মাইল দূরে ছিল, সেসময় তার উচ্চতা ছিল ৭ হাজার ফিট, অথচ ওই সময় বিমানটির উচ্চতা থাকার কথা ছিল ৩ হাজার ফিট। এ সময় ফের পাইলটকে সতর্ক করা হয়েছিল। এবারও বিমান চালক জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতি তাঁর আয়ত্তে রয়েছে।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২ ঘণ্টা ৩৪ মিনিট ওড়ার জন্য় বিমানটিতে যথেষ্ট পরিমাণে জ্বালানি ছিল। বিমানটির ফ্লাইং টাইম রেকর্ড করা হয়েছে ১ ঘণ্টা ৩৩ মিনিট। কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি নাকি পাইলটের ভুলে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ''বিমানটিকে ৩ হাজার ফিট উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য় পাইলটকে নির্দেশ দিয়েছিল এটিসি। কিন্তু ১৮০০ ফিট পর্যন্ত বিমানটিকে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন পাইলট। যখন ককপিটে ৩ হাজার ফিটের কথা ফের বলা হয়, তখন প্রথম অফিসার বলেছিলেন, ''আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি''।
শুক্রবার বিকেলে করাচির জিন্না ইন্টারন্য়াশনাল বিমানবন্দরে অবতরণের কয়েক মিনিট আগে মালিরে মডেল কলোনির কাছে জিন্না গার্ডেনে ভেঙে পড়ে বিমানটি। ১১ জন জখম হয়েছেন। এয়ারক্র্য়াফ্ট অ্য়াক্সিডেন্ট অ্য়ান্ড ইনভেস্টিগেশন বোর্ডের প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি ৩ মাসের মধ্য়ে দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করবে।
পাকিস্তান ইন্টারন্য়াশনাল এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্য়ান্ড মেনটেনেন্স দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বিমানটির শেষ রক্ষণাবেক্ষণ খতিয়ে দেখা হয়েছিল চলতি বছরের গত ২১ মার্চ। বিমান দুর্ঘটনার জেরে ঘরোয়া বিমান পরিষেবা বন্ধ রেখেছে পিআইএ।