Union Budget 2019 by Nirmala Sitharaman: মধ্যবিত্তের মুখে কি হাসি ফুটবে? আম আদমির উপর করের বোঝা কি কমবে? কোন জিনিসের দাম বাড়বে? কোন জিনিসেরই বা দাম কমবে? বাংলার জন্য কী প্রাপ্তি মিলবে? সব প্রশ্নের উত্তর পেতে আজ দেশের নজরে সাধারণ বাজেট। দ্বিতীয় মোদী সরকারের প্রথম বাজেট ঘিরে সরগরম গোটা দেশ। আজ সাধারণ বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। ইন্দিরা গান্ধীর পর প্রথম মহিলা অর্থমন্ত্রী হিসেবে বাজেট পেশ করবেন সীতারমণ।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় বাজেটের একদিন আগে বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় আর্থিক সমীক্ষা পেশ করেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। সমীক্ষা বলছে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬.৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭ শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা। আর্থিক ঘাটতিও গত অর্থবর্ষের তুলনায় বেশ খানিকটা কমবে (৫.৮ শতাংশ থেকে কমে ৩.৪ শতাংশ)। আর্থিক সমীক্ষার সামগ্রিক দায়িত্বে ছিলেন কেন্দ্রের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যম। সারা দেশ অধীর আগ্রহে তাকিয়ে রয়েছে এই কেন্দ্রীয় বাজেটের দিকে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত গত অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার কম ছিল, এবং কার্যত কর্মসংস্থানহীন বৃদ্ধি ছিল। আর্থিক সমীক্ষার তুমুল সমালোচনা করেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তিনি বলেন, ‘‘আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্টের প্রথম ভাগের প্রথম অধ্যায়ে সরকার নিজেই নিজের প্রশংসা করেছে। অথচ আর্থিক সমীক্ষায় বিভিন্ন ক্ষেত্র বিশেষে বৃদ্ধির হার কত হবে, তা জানানো হয় নি।"
আরও পড়ুন: দেশের বাজেট নিয়ে পরামর্শ দিতে চান? কান পেতে আছে টিম সীতারামন
প্রসঙ্গত, এ বছরের শুরুতে গত ফেব্রুয়ারিতে অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করেছিল প্রথম মোদী সরকার। লোকসভা নির্বাচনের জেরেই অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করেছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন অর্থমন্ত্রী তথা রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। একনজরে জেনে নিন, অন্তর্বর্তী বাজেটে কী ঘোষণা করেছিল প্রথম মোদী সরকার...
*আয়কর নিয়ে বাজেটে বড় ঘোষণা করা হয়। বেতনভোগীদের জন্য আয়কর ছাড় অপরিবর্তিত রাখা হয়। আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করা হয়। অর্থাৎ, বার্ষিক আয় ৫ লক্ষ টাকা বা তার কম হলে, কোনও কর লাগবে না। এর আগে, এই ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা ছিল ২.৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু, ৫ লক্ষ টাকার কম আয়ের ক্ষেত্রেও বিস্তারিত বিবরণ জমা করতে হবে আয়কর দফতরে।
* স্ট্যান্ডার্ড ট্যাক্স ডিডাকশন ৪০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়।
* ৮০ সি-র ক্ষেত্রে করদাতা তাঁর ব্যক্তিগত বিনিয়োগ (ইনভেস্টমেন্ট) দেখিয়ে অতিরিক্ত দেড় লক্ষ টাকার ছাড় পেতে পারেন, উচ্চ আয়ের করদাতাদের এতে খুব সুবিধা না হলেও ১০ লক্ষের মধ্যে যাঁদের বার্ষিক আয়, তাঁরা গৃহঋণ এবং টিউশন ফি বাবদ বাড়তি ছাড় পাবেন, একথা ঘোষণা করা হয়।
* ব্যাঙ্ক-পোস্ট অফিসের ফিক্সড ডিপোজিটে প্রাপ্ত সুদে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত কোনও টিডিএস লাগবে না।
* লোকসভা ভোটের আগে কৃষকদের জন্য কার্যত ‘কল্পতরু’ মোদী সরকার। বাজেটে ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’ প্যাকেজ ঘোষণা করেন পীযূষ গোয়েল। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয় মোট ৭৫ হাজার কোটি টাকা। এই প্রকল্পের টাকা সরাসরি কৃষকদের অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। বছরে প্রত্যেক কৃষক ৬ হাজার টাকা করে পাবেন। পশুপালন ও মৎস্যচাষ করেন যাঁরা, তাঁদের জন্য ২ শতাংশ সুদ ভর্তুকির কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য ২ শতাংশ সুদ ভর্তুকি ঘোষণা করেন গোয়েল। শুধু তাই নয়, যথাসময়ে কৃষি ঋণ শোধ করলে আরও ৩ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ার কথাও জানানো হয়।
আরও পড়ুন: পাঁচ বছরের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠতে পারে ভারত
* অসংগঠিত কর্মীদের জন্য ঘোষণা করা হয় ‘মেগা পেনশন যোজনা’। ৬০ বছরের বেশি বয়সী অসংগঠিত শ্রমিকদের ‘প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগ মন্ধন’ প্রকল্পে ৩ হাজার টাকার মাসিক পেনশন দেওয়া হবে।
* ’প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা’-র আওতায় ৬ কোটি এলপিজি সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী, বিনামূল্যে ৮ কোটিরও বেশি এলপিজি সংযোগ দেওয়া হবে।
* প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ৩ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি করা হয়।
* রেলের জন্য ১.৫৮ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন অন্তর্বর্তীকালীন অর্থমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ট্রেন ১৮-র সূচনা করে রেল। ট্রেন ১৮ এখন ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’।
* উত্তর-পূর্বের জন্য বরাদ্দ বাড়ায় মোদী সরকার। ২১ শতাংশ বরাদ্দ বাড়ানো হয়। মোট বরাদ্দ ৫৮ হাজার ১৬৬ কোটি টাকা।
* রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশনে বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হয় ৭৫০ কোটি টাকা।
* আগামী ৫ বছরে ১ লক্ষ ‘ডিজিটাল ভিলেজ’ তৈরি করা হবে।
* ভারতীয় সিনেমা নির্মাতাদের জন্য ‘এক জানালা’ নীতি ঘোষণা করে মোদী সরকার। এতদিন পর্যন্ত এই সুবিধা পেতেন কেবলমাত্র বিদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতারা।