বিচারপতি ধনঞ্জয়া ওয়াই চন্দ্রচূড় আজ ভারতের ৫০তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি ভবনে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান। বিচারপতি চন্দ্রচূড় দু বছরের জন্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের স্থলাভিষিক্ত হন, যিনি ৭৪ দিনের স্বল্প মেয়াদে প্রধান বিচারপতি পদে আসীন হন।
শপথ বাক্য পাঠ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখর, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সহ বিশিষ্ট অথিতিবর্গ । অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের স্থলাভিষিক্ত হলেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। ২ বছরের জন্য প্রধান বিচারপতির আসনে বসলেন ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তাঁর মেয়াদ শেষ হবে ১০ নভেম্বর, ২০২৪।
কলেজিয়াম ব্যবস্থাকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা উচিত এবং প্রয়োজনে সংস্কারের চেষ্টা করা উচিত। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরন রিজিজুর বক্তব্য প্রসঙ্গে বিচারপতি চন্দ্রচূড় একথা বলেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, "গণতন্ত্রে কোনো প্রতিষ্ঠানই নিজেকে নিখুঁত বলে দাবি করতে পারে না, যদিও আমরা সেই ব্যবস্থার আওতায় কাজ করি। সেখানেও প্রয়োজনে আনেক সংস্কার আনা যেতে পারে"।
বুধবার ভারতের ৫০ তম প্রধান বিচারপতি (CJI) হিসেবে শপথ নিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। বিচারপতি চন্দ্রচূড় ১৩ই মে, ২০১৬-এ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে নিযুক্ত হন, সিজেআই হিসাবে তিনি দুই বছরের মেয়া্দে থাকবেন। ১০, নভেম্বর ২০২৪-এ তাঁর অবসর নেওয়ার কথা। বিচারপতি চন্দ্রচূড় সিজেআই হিসাবে ভারতের বিচার ব্যবস্থায় কী পরিবর্তন আনবেন তা নিয়েও জল্পনা চলছে। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি ভবনে দেশের ৫০ তম প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়কে শপথবাক্য পাঠ করান।
বিচারপতি ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড় ১১ নভেম্বর ১৯৫৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা যশবন্ত বিষ্ণু চন্দ্রচূড় ছিলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং তাঁর মা প্রভা দেবী একজন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী। তিনি জাতীয় রাজধানীর সেন্ট স্টিফেন কলেজ থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স করেন। এরপর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি করেন। এরপর তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ল স্কুল থেকে ফরেনসিক বিজ্ঞানে এলএলএম এবং ডক্টরেট অর্জন করেন।
আরও পড়ুন: < কাতারে আটক আট নৌসেনা আধিকারিককে দেশে ফেরাতে তৎপর দিল্লি, দফায় দফায় আলোচনা >
বিচারপতি চন্দ্রচূড় ২৯ মার্চ ২০০০ থেকে ৩১ অক্টোবর ২০১৩ পর্যন্ত বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি ছিলেন। এরপর তিনি এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। বিচারপতি চন্দ্রচূড়কে ১৯৯৮ সালের জুন মাসে বম্বে হাইকোর্ট কর্তৃক সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনোনীত করা হয় এবং একই বছরে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল হিসাবে তাঁকে নিযুক্ত করা হয়।
'আমার অনেক দায়িত্ব আছে'
বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, যিনি ভারতের ৫০ তম প্রধান বিচারপতি পদে আজই শপথ নেন। তার আগে তিনি সোমবার এক ভাষণে বলেন, “বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের উত্তরসূরি হিসাবে, তাঁর কাঁধে বিরাট দায়িত্ব রয়েছে এবং তিনি যে "ভাল কাজ" শুরু করেছিলেন তা চালিয়ে যাওয়ারও আশা রাখেন তিনি"।
বিচারপতি চন্দ্রচূড় দু বছরের জন্য এই পদে আসীন থাকবেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা ৬৫ বছর বয়সে অবসর নেন। তিনি বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের স্থলাভিষিক্ত হবেন, যিনি ১১ অক্টোবর তাঁকে তাঁর উত্তরসূরি হিসাবে সুপারিশ করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ১৭ অক্টোবর তাকে পরবর্তী CJI হিসাবে নিযুক্ত করেন।
আরও পড়ুন: < ভোর রাতে ভয়াবহ ভূমিকম্প নেপালে, বাড়ি ভেঙে অন্তত ৬ জনের মৃত্যু >
'গণতন্ত্রে কোনো প্রতিষ্ঠানই নিজেকে নিখুঁত বলে দাবি করতে পারে না'
বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূদ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "গণতন্ত্রে কোনো প্রতিষ্ঠানই নিজেকে নিখুঁত বলে দাবি করতে পারে না, যদিও আমরা সেই ব্যবস্থার আওতায় কাজ করি…। এখনও, সেখানে অনেক সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। যা আনা সম্ভব। সাংবিধানিক গণতন্ত্রে কোন প্রতিষ্ঠানই নিজেকে নিখুঁত বলে দাবি করতে পারে না। তাই আমি মনে করি এটি একটি চির-পরিবর্তনশীল একটি প্রক্রিয়া"।