‘নতুন প্রজন্মের বামপন্থী আন্দোলন তৈরি হয়েছে, যার মুখ হয়ে উঠেছে ঐশী ঘোষরা’, জেএনইউ-তে উপস্থিত হয়ে ছাত্র সংসদের সভানেত্রীর সঙ্গে দেখা করে এমন কথাই বললেন বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন। শুক্রবার দিল্লিতে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে ঐশী ঘোষের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক সময় কাটালেন কৌশিক। ঐশীর শারীরিক অবস্থার যেমন খোঁজ নিলেন বাংলার এই অভিনেতা, তেমনই লড়াইয়ে পাশে থাকার বার্তাও দিলেন তিনি। ঐশীর সঙ্গে কী কী কথা হয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে তা জানালেন কৌশিক সেন।
কী কথা হল?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে কৌশিক বলেন, ‘‘থিয়েটারের কাজে দিল্লিতে এসেছি। সেই সূত্রে জেএনইউ-তে গিয়ে ঐশীর সঙ্গে দেখা করি। ওর শরীর কেমন আছে খোঁজ নিই। ওকে অভিনন্দন জানাতে গিয়েছিলাম। ক্যাম্পাসে কীভাবে লড়াই করছে ওরা, একটা চাপ তো রয়েইছে, এসব নিয়েই কথা হয়েছে। ওর বাড়ির লোকেদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছি। এই আন্দোলনে গোটা দেশে কীভাবে প্রভাবিত হয়েছে, অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কী প্রভাব ফেলেছে, এ নিয়েই মূলত কথা হয়েছে’’।
আরও পড়ুন: অমিত শাহ ফোনে চারটি শব্দ বলেছিলেন! ফাঁস করলেন দিলীপ ঘোষ
ঐশীর সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে কৌশিক আরও বলেন, ‘‘বোঝা যায়, যেসব ছাত্র-ছাত্রীরা এবিভিপি করেন, একটা সময় পর্যন্ত তাঁরা ঐশীদের সঙ্গে সহমত ছিল। এবিভিপির আক্রমণ উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মনে হয় ঐশীদের। আসলে ছাত্র সংগঠনগুলোকে সেই সংগঠনের মাথায় থাকা রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে ছাত্র আন্দোলনের স্বকীয়তা বারবার নষ্ট হয়ে যায়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। মারধরের আইডিয়াটা উপর থেকেই চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মনে হয় ঐশীদের’’।
আরও পড়ুন: সেদিনের ঐশীই আজ লড়াকু নেত্রী, বিস্মিত পরিবার
এদিন কৌশিক বলেন, ‘‘নতুন প্রজন্মের বামপন্থী আন্দোলন তৈরি হয়েছে। যারা কথায় কথায় শুধু লেনিন-মার্ক্স আওড়াচ্ছে না, বরং প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারদের কথা বলছে, ভগৎ সিংয়ের কথাও বলছে, আম্বেদকরের কথা বলছে, এমনকি কখনও কখনও গান্ধীজির কথাও বলছে, হাতে জাতীয় পতাকা। এই নতুন বামপন্থী আন্দোলনের মুখ ঐশীরা। ওঁরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। এটা বড় লড়াই, আজই শেষ হবে না। এখন ঐশীকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ও যখন সুস্থ হয়ে যাবে, ব্যান্ডেজ খোলা হবে, তখন মানুষ ভুলে যাবে। আবার একটা নতুন লড়াই শুরু হবে, আমার মনে হয় তার জন্য ঐশী ও ওর বন্ধুরা প্রস্তুত রয়েছে’’।
অন্যদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে নিশানা করে এদিন কৌশিক সেন বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ একটা বদ্ধ জলাশয়ের মতো। দুর্গন্ধযুক্ত বদ্ধ জলাশয়ের সামনে দাঁড়িয়ে যদি ফুলের সুবাস আশা করি, তাহলে আমারই মুর্খামি। ওঁর থেকে কী আর আশা করা যায়। বাংলায় বিজেপিতে একটা নেতা-নেত্রীও নেই, যাঁর সঙ্গে ২-৩ মিনিট দাঁড়িয়ে কথা বলা যায়’’।