maha kumbh 2025: ৪৫ দিনে ৩০ কোটি আয়! জেনে নিন মহাকুম্ভে কার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ল?
প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত মহাকুম্ভ মেলা সাক্ষী থেকেছে একাধিক রেকর্ডের। ৪৫ দিনের এই মহাকুম্ভমেলায় ৬৬ কোটি ৩০ লক্ষেরও বেশি পূণ্যার্থী পবিত্র স্নান সম্পন্ন করেন। একই সাথে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে এই মহাকুম্ভ। কেউ চা বিক্রি করে, কেউ আবার বাইক সার্ভিস দিয়ে, কেউ মালা বিক্রি করে প্রচুর আয় করেছেন। মহাকুম্ভের সমাপনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের গলায় ফের একবার উঠে এল মহাকুম্ভের সাফল্যের গল্প। মহাকুম্ভ কীভাবে ছোট থেকে বড় ব্যবসায়ীদের জীবন বদলে দিয়েছে সেকথা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে ২০২৫ সালের মহাকুম্ভমেলা সম্প্রতি শেষ হয়েছে, কিন্তু মহাকুম্ভ নিয়ে এখনও মানুষের মধ্যে চলছে জোর চর্চা। ২০২৫ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি মহাকুম্ভ শেষ হয়। কোটি কোটি ভক্ত বিশ্বাসের সঙ্গমে স্নান করেছিলেন। এর পাশাপাশি, এই মহাকুম্ভে অনেকেই প্রচুর টাকা আয় করেছেন। অনেকেই আছেন যারা মহাকুম্ভ থেকে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন। এবার এমনই আরেকটি কাহিনী সামনে এসেছে, যেখানে মহাকুম্ভে নৌকা চালিয়ে এক মাঝি ৩০ কোটি টাকা আয় করেছেন।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বিধানসভায় এমনই একজন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, মহাকুম্ভে এক মাঝির পরিবার ৪৫ দিনে নৌকা চালিয়ে ৩০ কোটি টাকা আয় করেছিলেন। ১৩০টি নৌকার মধ্যে প্রতিটি নৌকা ৪৫ দিনে ২৩ লক্ষ টাকা আয় করেছে। প্রতিটি নৌকা থেকে দৈনিক আয় প্রায় ৫০ থেকে ৫২ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার, বিধানসভায় মহাকুম্ভের সাফল্যের কাহিনী বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন যে, প্রয়াগরাজের এক মাঝির পরিবার ৪৫ দিনের মহাকুম্ভে থেকে ৩০ কোটি টাকা উপার্জন করেছে। কোনও নাম না নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, যে মহাকুম্ভে সেই বোটম্যানের পরিবারের আয়ে রেকর্ড গড়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী যোগীর এই বক্তব্যের পর প্রয়াগরাজের সেই পরিবার উঠে এসেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
যে পরিবারকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী এই বিবৃতি দিয়েছিলেন সেই পরিবার আদতে প্রয়াগরাজের আরাইলের বাসিন্দা পিন্টু মাহারার পরিবার। ১০০ জন সদস্য রয়েছেন পরিবারে। সব মিলিয়ে তাদের ১৩০টিরও বেশি নৌকা রয়েছে। পিন্টু বলেন, তার কাছে ইতিমধ্যেই প্রায় ১২টি নৌকা ছিল। কিন্তু মহাকুম্ভের কারণে, তিনি ৭০টি নতুন নৌকা তৈরি করিয়েছিলেন, আরও কয়েকটি নৌকা তিনি ভাড়ায় নিয়েছিলেন। যার মধ্যে সাতটি ছিল মোটর চালিত নৌকা।
পিন্টু জানিয়েছেন, পুরো পরিবার মহাকুম্ভ থেকে ভালো আয় করেছে। তিনি বলেন, যদি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মহাকুম্ভ মেলা এভাবে পরিচালনা না করতেন, তাহলে এটা কখনই সম্ভব হত না। তাঁর মতে, মহাকুম্ভ থেকে এত ভালো আয় তার পরিবারের সদস্যরাও আশা করেননি। তিনি আরও বলেন, মহাকুম্ভ থেকে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি আয় করেছে তার পরিবার। তবে তিনি ৩০ কোটি টাকার আয়ের কথা স্বীকার করেন নি। তিনি দাবি করেছেন, যে তার পরিবারের প্রত্যেকে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা আয় করেছেন।
মহাকুম্ভে নৌকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি আয়ের প্রশ্নে, পিন্টু মহারা বলেছেন যে ভিড়ের কারণে নৌকাগুলি অনেক দূর পর্যন্ত চালানো হয়েছিল, যার কারণে লোকেরা স্বেচ্ছায় বেশি ভাড়া দিয়েছেন। পিন্টু মাহারার মতে, অনেক ভক্ত উপহারও দিয়েছেন। উপহার হিসেবে টাকা, গয়না এবং পোশাকও দেওয়া হয়েছিল। তাঁর মতে, মাঝিরা কেবল প্রচুর অর্থই অর্জন করেননি, বরং মহাকুম্ভে পুণ্যও অর্জন করেছেন।
আয়ের জন্য পিন্টু মহারা প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। পিন্টু মহারা এবং তার মায়ের মতে, তারা চান প্রধানমন্ত্রী দেশের রাষ্ট্রপতি হোন এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হোন।
পিন্টু আরও বলেন যে প্রয়াগরাজের সামগ্রিক আর্থিক অবস্থা মহাকুম্ভের কারণে বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তার কথায়, মহাকুম্ভের সময় কেন্দ্রের মোদী সরকার এবং রাজ্যের যোগী সরকার যেভাবে প্রয়াগরাজের উন্নয়ন করেছে, এখানকার মানুষের উচিত কেবল বিজেপিকেই ভোট দেওয়া। যদি মুখ্যমন্ত্রীর দাবি সঠিক হয় তাহলে এখন সেই ব্যক্তিকে কর হিসেবে ৯.৩৬ কোটি টাকা দিতে হবে।