Mahakumbh Stampede: মহাকুম্ভে ভয়াবহ বিপর্যয়! পদপিষ্ট হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৭। ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে লিখেছেন, 'মহাকুম্ভে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিপর্যয়ে যারা তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন তাদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা'। দুর্ঘটনার জেরে বেশ কিছুসময় পূণ্যস্নান প্রক্রিয়ায় বিরতি দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে আবার মহাকুম্ভে পূণ্যস্নান সুষ্ঠুভাবে শুরু হয়েছে।
দিল্লিতে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন যে আজকের নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেওয়ার আগে, আমি এখানে উল্লেখ করতে চাই যে মহাকুম্ভে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা বেশ কয়েকজন ধার্মিক মানুষকে হারিয়েছি। অনেকে আহতও হয়েছেন। আমি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, আমি উত্তরপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সাহায্যের সব রকম আশ্বাস দিয়েছি। তিনি বলেন, মৌনী অমাবস্যার কারণে আজ কোটি কোটি ভক্ত প্রয়াগরাজে পৌঁছেছেন। দুর্ঘটনায় কিছু সময়ের জন্য পূণ্যস্নান প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল, এখন ফের সুষ্ঠুভাবে পূণ্যস্নান শুরু হয়েছে। আমি আবারও সেই পরিবারগুলির প্রতি আমার সমবেদনা জানাচ্ছি।
মহা কুম্ভে মৌনী অমাবস্যায় ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। মঙ্গলবার ভোররাতে শাহী স্নানের সময় হুড়োহুড়িতে পদপিষ্টের ঘটনায় ১৭জনের মৃত্যু, জখম অনেক পুণ্যার্থী। প্রয়াগরাজ স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, আশঙ্কাজনক অবস্থায় অনেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই অবস্থায় সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ফোন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদীর পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও যোগীকে ফোন করে পরিস্থিতি সম্পর্কে আপডেট নিয়েছেন।
মহাকুম্ভে পদদলিত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে
মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে, সঙ্গমে স্নান করতে বিপূল সংখ্যক মানুষ জড়ো হন। ভিড়ের প্রবল চাপে গতকাল রাত ১টা নাগাদ পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার জেরে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো অনেকে।
স্বাধীনতার পর বারে বারে ঘটেছে পদপিষ্টের ঘটনা
৭০ বছর আগেও বিপর্যয় হয় কুম্ভমেলায়, পদপিষ্টে নিহত হন ৮০০ পুণ্যার্থী। ১৯৫৪ সালে অনুষ্ঠিত মহাকুম্ভেও মৌনী অমাবস্যার দিনে ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। স্বাধীন ভারতের প্রথম মহাকুম্ভ এলাহাবাদে, অর্থাৎ আজকের প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৫৪ সালে আয়োজিত এই মহাকুম্ভে, মৌনী অমাবস্যার দিন ৩ ফেব্রুয়ারি শাহী স্নানের জন্য সঙ্গমের নগরীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ জড়ো হয়েছিলেন।
সেদিন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। জানা যায়, তাঁকে দেখার জন্য জড়ো হন প্রচুর মানুষ। যে কারণেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। তবে, সেই সময়ের একাধিক সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে দাবি করা হয় দুর্ঘটনার পিছনে ছিল ভিন্ন কারণ। একাধিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে ২রা ও ৩রা ফেব্রুয়ারি রাতে গঙ্গার জলস্তর হঠাৎ করেই বেড়ে যায়।
সঙ্গমের তীরে অবস্থিত ঋষি-সন্তদের আশ্রমে জল উঠতে শুরু করে। ফলে মানুষ প্রাণভয়ে পিছু হটতে শুরু করে যার কারণে ঘটে যায় বড় দুর্ঘটনা। সে বছর প্রায় ৫০ লক্ষ ভক্ত মেলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। ভারতের স্বাধীনতার পর এটিই ছিল প্রথম কুম্ভমেলা।
১৯৫৪ সালের পর ফের ১৯৮৬! সেবার হরিদ্বারের কুম্ভমেলায় এক মর্মান্তিক পদপিষ্টের ঘটনা হয়ে কমপক্ষে ২০০ জনের মৃত্যু হয়। ঘটে। উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর সিং, বিভিন্ন রাজ্যের বেশ কয়েকজন মুখ্যমন্ত্রী এবং সাংসদদের সঙ্গে নিয়ে হরিদ্বারে পৌঁছালে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। নিরাপত্তা কর্মীরা গঙ্গার ধারে সাধারণ মানুষকে প্রবেশে বাধা দেয়, ফলে নিয়ন্ত্রণহীন ভিড়ের কারণে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে।
২০০৩ সালে, মহারাষ্ট্রের নাসিকে কুম্ভমেলা চলাকালীন পবিত্র স্নানের জন্য গোদাবরী নদীতে হাজার হাজার পূণ্যার্থী জড়ো হওয়ার ঘটনায় পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে । ৩৯ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হন।
১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ তারিখে কুম্ভমেলা চলাকালীন এলাহাবাদ রেলস্টেশনে একটি ওভার ব্রিজ ভেঙে পড়ার জেরে ব্যাপক আতঙ্কের জেরে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ৪২ জন নিহত এবং ৪৫ জন আহত হন।