নির্ভয়ার ধর্ষকের প্রাণ ভিক্ষার আর্জি খারিজ করলেন রাষ্ট্রপতি। শেষ ভরসা হিসেবে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়েছিল নির্ভয়াকাণ্ডের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী মুকেশ। শুক্রবার সেই আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। প্রাণ ভিক্ষার আবেদনটি খারিজ করা জন্য সুপারিশ করেছিল কেন্দ্র।
নির্ভয়াকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত পবন গুপ্তা, বিনয় শর্মা অক্ষয় ঠাকুর সিং ও মুকেশ সিং।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক আধিকারিকের কথায়, 'মন্ত্রক মুকেশ সিংয়ের প্রাণ ভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছে। দিল্লির উপরাজ্যপাল এর আগে দোষীদের মৃত্যদণ্ডের আদেশ বহাল রাখার জন্য সুপারিশ করেছিলেন। এদিন রাষ্ট্রপতির কাছে সেই সুপারিশেরই পুনরাবৃত্তি করা হয় মন্ত্রকের তরফে।' বৃহস্পতিবারই দিল্লির উপরাজ্যপাল মুকেশের আবেদন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পাঠিয়েছিল।
আরও পড়ুন: নির্ভয়াকাণ্ডে ফাঁসি প্রক্রিয়ার হাল হকিকৎ জানতে চেয়ে তিহার জেলকে রিপোর্ট তলব আদালতের
আগামী ২২ জানুয়ারি আদালত নির্ভয়াকাণ্ডে চার দোষীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু ওই দিন তা কার্যকর করা নিয়ে আইনি জটিলতা সামনে এসেছে। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলিকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন নির্ভয়ার মা। সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের রিপোর্ট অনুসারে, 'রাজনৈতিক ফায়দা' লাভের জন্যই ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁসি কার্যকরে 'দেরি' করা হচ্ছে। দিল্লি কোর্টের রায় মেনে নির্ধারিত দিনেই যাতে দোষীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় তারর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন নির্ভয়ার মা আশাদেবী। এ ক্ষেত্রে তিনি ২০১৪ সালে মোদীর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি 'নারী সুরক্ষার' কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, '২০১২ সালে গণধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে বহু মানুষ পথে নেমেছিলেন। এখন আমার মেয়ের মৃত্যু নিয়ে যা হচ্ছে তা সবটাই রাজনৈতিক ফায়দার জন্য। আমরা এর মাঝে আটকে পড়েছি।'
আরও পড়ুন: নির্ভয়ার দোষীদের ফাঁসির টাকায় শেষ কর্তব্য পালন করব, জানালেন ফাঁসুড়ে পবন
গত ৭ জানুয়ারি তিহার জেলে নির্ভয়া মামলায় চার দোষীর ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। আগামী ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায় তিহার জেলে দোষীদের ফাঁসির নির্দেশ দেয় আদালত। এরপরই প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়ে শেষ আইনি পথে হাঁটে ফাঁসির আসামী বিনয় শর্মা ও মুকেশে সিং। মঙ্গলবার তাদের রুজু করা কিউরেটিভ পিটিশনের শুনানি খারিজ করে বিচারপতি এন ভি রমনা, অরুণ মিশ্র, আরএফ নরিম্যান, আর ভানুমতি এবং অশোক ভূষণের বিশেষ বেঞ্চ। তারপর শেষ ভরসা হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায় মুকেশ। ২০১২ সালে দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডের দোষীরা হল পবন গুপ্তা, মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা এবং অক্ষয় ঠাকুর সিং।
যদিও, বুধবার দিল্লি সরকার হাইকোর্টে জানায়, দোষীদের একজন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আর্জি জানিয়েছে। ফলে ২২ জানুয়ারি নির্ভয়াকাণ্ডের চার আসামীকে ফাঁসি দেওয়া যাবে না। এরপরই দিল্লির কেজরিওয়াল সরকারকে নিশানা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। তাঁর কথায়, দিল্লি সরকারের 'অবহেলার' কারণেই মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ কার্যকরে দেরি হচ্ছে। জবাবে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ শিসোদিয়া বলেন, 'দিল্লি পুলিশের নিয়ন্ত্রণ রাজ্য সরকারের হাতে এলেই তারা মৃত্যুদণ্ডের আদেশ কার্যকর করবে।'
Read the full story in English