নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের দুই মসজিদে হওয়া সন্ত্রাসবাদী হামলায় ৪৯ জনের মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার দেশের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন জানান, "আগামী ১১ এপ্রিল থেকেই নয়া বন্দুক আইনের মাধ্যমে সব ধরনের সেমি অটোম্যাটিক বন্দুক ও অ্যাসল্ট রাইফেলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। যেসব যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে বন্দুকগুলিকে সামরিক স্টাইলের অনুকরণে বদলে দেওয়া হচ্ছে সেগুলোর ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে।"
আরো পড়ুন গুজরাত থেকে কেরালা, নিউজিল্যান্ডের জঙ্গি হামলার ক্ষতচিহ্ন ছড়িয়ে এ দেশেও
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন যে এই আইন পাসের সঙ্গে সঙ্গেই "বাই-ব্যাক স্কিমে"এর মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা সমস্ত অস্ত্র ফেরত নেওয়া হবে। তিনি মনে করেন যে দেশের বৈধ লাইসেন্সধারী বন্দুক মালিকেরা অবশ্যই বুঝতে পারবেন যে জাতীয় স্বার্থেই এই পদক্ষেপগুলি নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে হামলাকারী খ্রিস্টান জঙ্গি ব্রেনটন টেরেন্ট সেমি অটোম্যাটিক রাইফেল দিয়েই হামলা চালিয়েছিল এবং তারপরেই নিউজিল্যান্ডে অস্ত্র আইন কঠোর করার প্রক্রিয়াটি ঘোষণা করা হয়।
আরো পড়ুন: নিউজিল্যান্ডে জঙ্গি হামলায় হত ৪৯, অল্পের জন্য রক্ষা বাংলাদেশি ক্রিকেট দলের
নিউজিল্যান্ডের প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রেলিয়ায় ১৯৯৬ সালের পোর্ট আর্থার হত্যাকান্ডের পর সব ধরনের সেমি অটোম্যাটিক অস্ত্রের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে অস্ট্রেলিয়ার মতো নিউজিল্যান্ডেও কৃষকদের জন্য বন্দুক আইনে বাধ্যতামূলক কিছু ছাড় থাকছে। ফেডেরেটেড ফারমার্স নামক এক সংস্থার মুখপাত্র জানান, সব ধরনের আলোচনার মাধ্যমে এই আইনকে শ্রেষ্ঠ কার্যকারী সমাধান হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে সকলের তরফ থেকে।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন দেশের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, "১৫ মার্চ ছিল একটি কালো দিন, যা দেশের ইতিহাস বদলে দিয়েছে, এবার সময় আমাদের আইন বদলের। দেশবাসীর তরফ থেকে আমরাই আমাদের বন্দুক আইনকে আরো কঠোর ও শক্তিশালী করে দেশকে শান্তিপূর্ণ করে তুলব।"
নিউজিল্যান্ডের যে কোনো নাগরিক আইনতভাবে সেমি অটোম্যাটিক অস্ত্র রাখার অনুমতি পান ১৬ কিংবা ১৮ বছর বয়স থেকেই।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সমস্ত রকম পুলিশি উপস্থিতির মাধ্যমে ক্রাইস্টচার্চের আল-নূর মসজিদ খুলে দেওয়া হয় নমাজ পড়ার জন্য এবং তা সরাসরি সম্প্রচার করে জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা। দু মিনিট নীরবতা পালনও করা হয় মৃতদের আত্মার শান্তি কামনা করে।
Read the full story in English