Advertisment

PAN কার্ড জালিয়াতির শিকার হয়ে তেরোটি কোম্পানির মালিক!

দিল্লির লক্ষ্মী নগর এলাকার বাসিন্দা অর্জুন হঠাৎই জানতে পারেন, তিনি নাকি ১৩টি কোম্পানির ডিরেক্টর। কয়েকমাস আগে তিনি প্রায় ২০ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

বিদেশী কোম্পানীর সঙ্গে বৃহৎ পরিণতিতে জড়িয়ে পড়েছে প্যান নম্বর।

এত পুঁজি কোনোদিন চোখেই দেখেননি । তাই আয়কর বিভাগের ভুল ভেবেই গা করেননি। একবার নয়, তিনবার একই নোটিস হাতে ধরায় আইটি ডিপার্টমেন্ট। তারপর আসতে শুরু করে ফোন। তখনই টনক নড়ে বছর ২৭ এর অর্জুন কুমার শ্রীবাস্তবের। দিল্লি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলে বেরিয়ে আসে কেঁচোর পরিবর্তে কেউটে। দিল্লির লক্ষ্মী নগর এলাকার বাসিন্দা এই যুবক হঠাৎই জানতে পারেন, তিনি নাকি ১৩টি কোম্পানির ডিরেক্টর। কয়েকমাস আগে তিনি প্রায় ২০ কোটি টাকার ট্রানজাকশন করেছেন। যার মধ্যে ৬১ লাখ টাকার লেনদেন করেছেন হংকংয়ের এক কোম্পানির সঙ্গে। এদিকে সে কথা বলেছে না তাঁর ব্যাঙ্ক আকাউন্ট। তাও, আপাতত আয়কর বিভাগের খপ্পরে পড়েছেন অর্জুন কুমার।

Advertisment

আরও পড়ুন: আলো, হাওয়া, বিনোদন, দেশের জেলখানায় বিজয় মালিয়ার জন্য রয়েছে সব ব্যবস্থাই, ধরা পড়ল সিবিআই-এর ভিডিওতে

সামান্য সেলস এক্সিকিউটিভ হয়ে এক ফার্মা কোম্পানিতে কর্মরত তিনি। মাসিক আয় মেরেকেটে হাজার পঁচিশ। অর্জুন বলেন, জানুয়ারিতে আয়কর বিভাগ কর্তৃক জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তি থেকে প্রথমবার তিনি তাঁর ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য সম্পর্কে জানতে পারেন। বিস্মিত হয়ে তড়িঘড়ি তিনি ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লি পুলিশ এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের কাছে অভিযোগ করেন, এবং জানান যে বিদেশী কোম্পানীর সঙ্গে বৃহৎ লেনদেনে জড়িয়ে পড়েছে তাঁর প্যান নম্বরটি। যারা সেটি ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করেছে।

ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করে দেখার জন্য দিল্লির এক আদালত দিল্লি পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছিল। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের পয়লা তারিখ ঘটনার একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পেশ হয়। অর্জুনের এখন ভরসা ভারতের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের ওপর। এই জটিল সমস্যার কুলকিনারা খুঁজে বার করবেন তারাই। মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট প্রধান সুমেশ কুমার শেঠী বলেন, "প্রতারণা এবং ২ কোটি টাকার বেশি অর্থ লেনদেনে জড়িত থাকার অভিযোগগুলি EOW কর্তৃক পরিচালিত হবে ... এই আদেশের কপি ইতিমধ্যে SHO, EOW কে পাঠানো হয়েছে।"

আরও পড়ুন: জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

"আমার বন্ধুরা আমাকে পুঁজিপতি বলে ডাকছে ... কল্পনা করুন। এদিকে আমার মূল আয়কর রিটার্ন ফর্মটি দেখার পর সমস্ত ব্যাংক আমার ৫ লাখ টাকার ব্যক্তিগত ঋণের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে," এমনটাই বলেন অর্জুন। "আয়কর বিভাগের নোটিসে লেখা ছিল, ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ সালে একটি লেনদেন করার জন্য আমার PAN কার্ড ব্যবহার করা হয়েছিল, যার মধ্যে ৬১.৩৭ লক্ষ টাকা ম্যাক্সকার্ট ইমপেক্স কোম্পানির কাছ থেকে মং কোক রোডের ব্রাইট ওয়ে টাওয়ারে অবস্থিত ডাইনামিক টেলিকন ট্রেডিং লিমিটেডকে পাঠানো হয়েছিল।

"আমি এক আইটি আধিকারিকের কাছ থেকে একটি ফোন পাই, তিনি আমাকে সে সময় জানান যে এই লেনদেনটি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের জনকপুরী শাখার মাধ্যমে হয়েছে। একটি সফটওয়্যার আমদানির কারণে করা হয়েছিল লেনদেন। যেখানে আমি ম্যাক্সকার্ট ইমপেক্স কোম্পানির মালিকানা পেয়েছি।"

তিনি আরও বলেন, "ব্যাঙ্ক ম্যানেজার আমার ভোটার আইডি কার্ড, প্যান কার্ড এবং আমার ছবির ফটোকপি দেখিয়েছেন, কিন্তু সেখানে মেলেনি স্বাক্ষর। তারপর, আমি একজন আইনজীবীর পরামর্শে দিল্লি পুলিশ এবং ইডির কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলাম, কিন্তু এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।"

আরও পড়ুন: রাজকোষ রক্ষা করবে কে? চাকরির পরীক্ষায় ডাহা ফেল সবাই!

ইতিমধ্যে বাড়িতে হাজির হয়েছে আয়কর ফর্ম। যেখানে বলা আছে মোটা অঙ্কের কর কাটা হবে । অগত্যা অর্জুন পুনরায় গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। তদন্তের ফলে খুঁজে পাওয়া গেছে তাঁর নামে রয়েছে প্রকান্ড একটি সাম্রাজ্য, যার মধ্যে রয়েছে ১৩ টি কোম্পানি, এবং গত সাত মাসে ২০ কোটি টাকার লেনদেন। ইকনোমিক অফেন্স উইঙ্গ এর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, "প্রাথমিকভাবে, বিষয়টি আয়কর বিভাগকে পাঠানো হয়েছিল কারণ পুরো ঘটনাটি তাদের সঙ্গেই সম্পর্কিত। কিন্তু সম্প্রতি আদালত আমাদের তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।"

cyber crime Cyber Security Fake Company
Advertisment