'সংখ্যালঘু মুসলিমদের বেছে বেছে রাষ্ট্রহীন করার হাতিয়ার হল এনআরসি। আসাম এনআরসিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিশানা করা হয়েছে'। বিজেপি সরকারকে নিশানা করে এমনই অভিযোগ, আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কিত মার্কিন কমিশনের (উইএসসিআইআরএফ)। তবে, এক্ষেত্রে এনআরসি প্রক্রিয়াকে 'নিরপেক্ষ' বলে বর্ণনা করেছে ওই সংস্থা।
আরও পড়ুন : এনআরসি নিয়ে সমস্যা নেই হাসিনার
ভারতের বৈধ নাগরিকদের নথিবদ্ধ করণের প্রক্রিয়া এনআরসি। ২০১৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আসামে এনআরসি প্রক্রিয়া লাগু হয়। আসামে এনআরসি তালিকা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৫১ সালে। যা পরে আপডেটের করা হয়। এই পদ্ধতিতেই স্থির হয় কারা আইনগতভাবে ভারতীয় নাগরিক। আসামে ধার্য হয় ২৪ মার্চ, ১৯৭১। এই দিনের আগে যাঁরা এ দেশে এসেছিলেন এবং সে কথা প্রমাণ করার জন্য প্রয়োজনীয় নথি যাঁরা দাখিল করতে পেরেছেন, তাঁদের নাম এনআরসি-তে ঢুকবে তালিকাভূক্ত হয়েছে। চলতি বছরের ৩১ অগাস্ট প্রকাশিত হয় আসামের চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা। সেখান থেকে প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ে। এর মধ্যে বেশিরভাগই বাঙালি সংখ্যালঘু মুসলিম। আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কিত মার্কিন কমিশন মনে করছে, মুসলমানদের দেশচ্য়ূত করতে এনআরসিকে কৌশলে কাজে লাগানো হয়েছে।
আরও পড়ুন : নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ঘিরে সংসদ উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা
গত শুক্রবারই প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কিত মার্কিন কমিশনের রিপোর্ট (উইএসসিআইআরএফ)। সেখানে বলা হয়েছে, 'ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের টার্গেট করার হাতিয়ার এবং বিশেষত, ভারতীয় মুসলমানদের রাষ্ট্রহীন করে তোলায় প্রক্রিয়াতেই স্পষ্ট ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার নিম্নমুখী অবস্থা।' উইএসসিআইআরএফের নীতি বিশ্লেষক হ্যারিসম আকিনসের তৈরি রিপোর্টে বলা হয়েছে এনআরসি তালিকার-র মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে, মোদী সরকারের মুসলমান বিদ্বেষের চিত্র।
আরও পড়ুন : ‘ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগি চাই না’, এনআরসি ইস্যুতে ফের সরব মমতা
রিপোর্টে এও বলা হয়েছে, 'সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সরকারের নজরদারিতে এনআরসি প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতই তালিকা প্রকাশের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল।' একই সঙ্গে এনআরসিকে বৈজ্ঞানিক এক প্রথা বলা হয়েছে। এছাড়া বলা হয়েছে, এনআরসি প্রক্রিয়ায় কোথাও বঞ্চনার কথা তুলে ধরা হয়নি। ফলে পক্ষপাতিত্ব ও ন্যায্য বিচার না মেলারও কথা নয়। সেখানে কারোর ধর্ম উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই।
Read the full story in English