আর বাপের বাড়িতে ফিরতে চান না পাকিস্তানের নানকানা সাহিবে শিখ তরুণী জগজিৎ কাউর। আদালতে এমনটাই জানিয়েছেন জগজিৎ। গত বছর আগস্টে ওই তরণীকে অপহরণ করে জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ উঠেছিল। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ঘরে ফেরায় পুলিশ। জানা গিয়েছে। ধর্মান্তরিত হওয়ার পর তরুণীর নাম হয় আয়েশা। তাঁর সঙ্গে বিয়ে দেওয়ায় হয় মহম্মদ হুসেনের।
কোর্টে কেন এমন বললেন জগজিৎ কাউর? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তরুণীর দাদা মনমোহন সিংয়ের দাবি, তাঁর বোনকে ভয় দেখিয়ে ভুল বোঝানো হয়েছে। তিনি বলেন, 'বোন ভয় পেয়েছে, ওকে ভুল বোঝানো হয়েছে। ওকে বলা হয়েছে নির্দেশ না মানলে ওর সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে।' আগামী ১১ জানুয়ারি কোর্টের নির্দেশ জগজিতের সঙ্গে দেখা হবে তাঁর সিং পরিবারের সদস্যদের। জগজিতের আইনজীবী শেখ সুলতান ফোনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, 'আগামী ২৩ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। তার আগে, কোর্টের নির্দেশে তাঁর পরিবারের লোকেদের সঙ্গে তরুণী দেখা করতে পারবেন।' তরুণী তাঁর স্বামীর সঙ্গে থাকবেন, নাকি পরিবারের কাছে ফিরে আসবেন। এই সময়ের মধ্যেই নিজের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে পারবে সে। ততদিন লাহোরে হোমেই থকবে তরুণী।
আরও পড়ুন: ‘পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে থাকতে চাই’, বললেন ইমরানের দলের প্রাক্তন বিধায়ক
গত সপ্তাহে নানকানা সাহিবে হামলা চালায় স্থানীয়রা। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন সেদেশের সংখ্যালঘু শিখরা। হামলাকারীদের মধ্যে অন্যতম ইমরান আলি চিস্তি সম্পর্কে জগজিতের বড় ভাসুর। আলি চিস্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এক ভিডিও দেখা যায়, নানকানা সাহিবে কোনও শিখকে থাকতে দেওয়া হবে না এবং সেই রাস্তারও নাম বদল হবে। তবে, গ্রেফতারের আগে পুলিশি হেনস্থার অভিযোগ করে সে। এই ঘটনার পরই বোনকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেন জগজিতের দাদা মনমোহন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের নানকানা সাহিবে হামলার মূলচক্রী গ্রেফতার
বছর ১৭-এর জগজিত নানকানা সাহিবের বাসিন্দা। তাঁর বাবা স্থানীয় একটি গুরুদ্বারের গ্রন্থি। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে তরুণীর পরিবার জানায়, বাড়িতে ঢুকে জগজিৎকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছে এক দল দুষ্কৃতী। জোর করে তাঁকে ধর্মান্তরিত করিয়ে স্থানীয় এক মুসলিম যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা অভিযোগ করেন, সব জেনেও সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে না পুলিশ। বোনকে না ফেরালে সপরিবার গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দেন ওই তরুণীর দাদা। পরে অবশ্য তরণীকে উদ্ধার করে ফেরায় পুলিশ।
জগজিতের আইনজীবী শেখ সুলতান সেই সময় দাবি করেন, স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন তাঁর মক্কেল। সুলতান জানান, জগজিতের পরিবার ও পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ এনে ইতিমধ্যেই লাহোর হাইকোর্টে আর্জি পেশ করা হয়েছে। তাতে জগজিৎ জানিয়েছেন, তিনি স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মহম্মদ হাসান নামে এক মুসলিম যুবককে বিয়ে করেছেন। তবে, জীবনহানির ভয় পাচ্ছে সে।
Read the full story in English