Advertisment

আসামের পরিস্থিতি অতি উদ্বেগজনক, মানুষ বিভ্রান্ত, মানলেন বিজেপি সাংসদেরা

পরিস্থিতি উদ্বেগজনক দেখে বৃহস্পতিবার সন্ধে ৭টা পর্যন্ত কার্ফু জারি করা হয়েছে গুয়াহাটিতে। ত্রিপুরায় ২ কলাম সেনা মোতায়েন করা হয়েছে

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
cab, assam

ক্যাবের প্রতিবাদে জ্বলছে আসাম। এক্সপ্রেস ফোটো।

ক্রমশই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে আসাম। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (ক্যাব) বিরোধিতা ঘনীভূত হচ্ছে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যটিতে। ইতিমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পাঠানো হয়েছে সেনা। তবু আসামজুড়ে জ্বলছে ক্ষোভের আগুন। রাজ্যের অবস্থা যে ক্রমেই উদ্বেগজনক, মানুষ যে বিভ্রান্ত এবং চিন্তিত তাঁদের ভবিষ্যত নিয়ে, এ কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সে রাজ্যের পদ্মশিবিরের নেতারাও। গুয়াহাটির সাংসদ তথা বিজেপি নেতা কুইন ওঝা বলেন, "অবস্থা ভালো নয়। আগামীতে কী হতে চলেছে আমার জানা নেই। ভুল বোঝাবুঝি এবং ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে বিলটি নিয়ে। মানুষকে সঠিকভাবে বুঝতে হবে। তা নাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।"

Advertisment

আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (ক্যাব) কী?

তবে শুধু কুইন ওঝা নয়, আসামের তিন বিজেপি সাংসদের গলাতেও প্রায় একই সুর। সাংসদেরা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "ক্যাব নিয়ে মানুষের মধ্যে একটি ভুল বোঝার জায়গা তৈরি হয়েছে। তবে এটা প্রতিবাদের পথ নয়।" তেজপুরের সাংসদ পল্লব লোচন দাস বলেন, "ভুয়ো খবর প্রচার করা হচ্ছে যে লক্ষ লক্ষ বহিরাগতরা এসে এখানে থাকতে শুরু করছেন। বাংলাদেশের সীমানাও না কি ভেঙে দেওয়া হয়েছে সে দেশের মানুষের আগমনের জন্য। মানুষকে বিলটি সম্পর্কে অবগত করানো হচ্ছে না।" পরিস্থিতি উদ্বেগজনক দেখে বৃহস্পতিবার সন্ধে ৭টা পর্যন্ত কার্ফু জারি করা হয়েছে গুয়াহাটিতে। ত্রিপুরায় ২ কলাম সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। আসামে এক কলাম সেনাকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে খবর। এছাড়াও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ত্রিপুরা পুলিশ, ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস ও আসাম রাইফেলসও মোতায়েন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল: মোদী থেকে মমতা, কার কী মত?

পল্লববাবুর বক্তব্য, আসামের মানুষের মধ্যে এই ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে বহিরাগতরা এখানে আসলে বিলুপ্ত হবে অসমীয়া ভাষা। বদলে স্থান নেবে বাংলা। ফলস্বরূপ নিজেদের রাজ্যে নিজেরাই হয়ে পড়বে সংখ্যালঘু। তবে এই ভাবনা যে সঠিক নয় সে প্রসঙ্গে পল্লব লোচন দাস বলেন, "আমাদের বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রচার ছাড়াও, ভাষাটি রক্ষার জন্য কেন্দ্রের একটি আইন পাস করা উচিত। আসামে ছ'টি সম্প্রদায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হতে চেয়ে আবেদন করেছে, এর জন্য আমাদের বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে।"

আরও পড়ুন: ক্যাব প্রতিবাদ: বনধের ক্ষীণ প্রভাব বরাক উপত্যকায়, গ্রেফতার প্রায় ৪০০

চিন্তার সুর শোনা গেল বিজেপি সাংসদ কুইন ওঝার গলাতেও। আসামের এই মন্ত্রী বলেন, "আমি তাঁদের উদ্বেগের কারণ বুঝতে পারছি। আসলেই বিষয়টি চিন্তার। আমি তাঁদের প্রতিবাদের অধিকারকে সমর্থন করি কিন্তু যেভাবে প্রতিবাদ হচ্ছে তা সঠিক নয়।" কিন্তু কীভাবে শান্ত করবেন এই উতপ্ত পরিস্থিতিকে? দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রশ্নের উত্তরে কুইন ওঝা বলেন, "এই মুহুর্তে পরিস্থিতি উতপ্ত আমি জানি। খুব গরম লোহাকে হাত দিয়ে স্পর্শ করতে গেলে হাত পুড়বেই। এখন অপেক্ষা করব। পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে ধীরে ধীরে চেষ্টা করব নিয়ন্ত্রণে আনতে।" মঙ্গলদইয়ের সাংসদ দিলীপ সাইকিয়া বলেন, "মানুষের না পাওয়া দাবি থেকেই এই ক্ষোভের জন্ম হয়েছে। পূর্বের সরকার ব্যর্থ ছিল প্রতিশ্রুতি পূরণে। ১৯৮৫ সালে এনডিএ সরকার এসে আসাম চুক্তি কার্যকর করার কাজ শুরু করেছে। তা বাস্তবায়ণ করার জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও নিয়োগ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। আমরা নিজেরাও উদ্বিগ্ন। আমরাও চাই অসমীয়া ভাষা এ রাজ্যে থাকুক।"

Read the full story in English

Assam nrc
Advertisment