Tahawwur Rana extradition: এবারই হবে মুম্বই হামলার পর্দা ফাঁস। আজ সকাল ১০টা থেকে তাহাউর রানাকে ম্যারাথন জেরা শুরু করবে এনআইএ।
ইতিমধ্যে জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ আদালতে রানার বিরুদ্ধে জোরালো প্রমাণ উপস্থাপন করেছে, যার মধ্যে তার পাঠানো ইমেলগুলিও রয়েছে। সংস্থার তরফে বলা হয়েছে ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার পিছনে যে গভীর ষড়যন্ত্র ছিল সেই রহস্য উন্মোচনের জন্য রানাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন।
২৬/১১ মাস্টার মাইন্ড তাহাউর হুসেন রানাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বৃহস্পতিবার ভারতে আনা হয়েছে। এরপর তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয় এবং শুক্রবার সন্ধ্যায়, দিল্লির বিশেষ এনআইএ আদালত রানাকে ১৮ দিনের এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রানাকে আদালতে আনা হয়। হাজিরার আগে আদালত প্রাঙ্গণ সংবাদ মাধ্যম এবং সাধারণ জনগণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। নিরাপত্তার কারণেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে এনআইএ সূত্রে খবর।
এনআইএ আদালতে রানার বিরুদ্ধে জোরালো প্রমাণ উপস্থাপন করেছে, যার মধ্যে তার পাঠানো ইমেলগুলিও রয়েছে। সংস্থা বলছে যে ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার পিছনের গভীর ষড়যন্ত্র উন্মোচনের জন্য রানাকে হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
এনআইএ আদালতকে জানিয়েছে যে, অভিযুক্ত ডেভিড হেডলি, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাজা ভোগ করছেন, ভারতে আসার আগে রানার সাথে হামলার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। রানাকে আজ সকাল ১০ টায় এনআইএ ম্যারাথন কজেরা শুরু করবে। এনআইএ-র এসপি এবং ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিকরা রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। সম্পূর্ণ জেরা পর্ব রেকর্ডিং করা হবে।
আজ ফের চাকরিহারাদের মিছিল, রিলে অনশনের মঞ্চ থেকেই শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন
এনআইএ এখন জেরায় মুম্বই হামলা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করবে। যা তদন্তকে বড় দিক খুলে দিতে পারে। এনআইএ জানিয়েছে যে মার্কিন বিচার বিভাগ, মার্কিন স্কাই মার্শাল, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা, এনএসজি, বিদেশ মন্ত্রক এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রানাকে আমেরিকা থেকে প্রত্যর্পণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। রানা দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই আইনি প্রক্রিয়া অনুসারে গ্রেপ্তার করে।
তাহাউর রানা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত একজন কানাডিয়ান নাগরিক, যিনি আমেরিকার শিকাগোতে থাকতেন। তার বিরুদ্ধে ডেভিড হেডলি ওরফে দাউদ গিলানি এবং সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) এবং হরকাত-উল-জিহাদি ইসলামী (এইচইউজি) এর সাথে ২৬/১১ হামলার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। এই হামলায় ১৬৬ জন নিহত এবং ২৩৮ জনেরও বেশি আহত হন। ১৯৬৭ সালের বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের অধীনে ভারত সরকার লস্কর-ই-তৈবা এবং হুজি উভয়কেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।
২৬/১১ মুম্বই হামলার অভিযুক্ত তাহাউর হোসেন রানাকে আমেরিকা থেকে প্রত্যর্পণে ভারত সফল হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে রাজনীতিও তীব্র হয়ে উঠেছে। একদিকে, কংগ্রেস দাবি করেছে যে এই সাফল্য মোদী সরকারের ফল নয় বরং পূর্ববর্তী ইউপিএ সরকারের দীর্ঘ ও সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টার ফল।
কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা এবং প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বলেছেন যে এই মামলার শুনানি ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা উচিত কারণ ভারতের কাছে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রমাণ রয়েছে।
আসলে, চিদাম্বরম স্পষ্টভাবে বলেছেন যে এই প্রত্যর্পণ মোদী সরকারের কোনও নতুন সাফল্যের ফলাফল নয়। একটি বেসরকারি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি তিনি বলেন যে এই প্রক্রিয়াটি ২০০৯ সালেই শুরু হয়েছিল যখন এনআইএ একটি মামলা দায়ের করেছিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। কংগ্রেস নেতা আরও ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে ইউপিএ সরকার তার আইনি ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছিল, এনআইএ চার্জশিট পেশ করেছে এবং ইন্টারপোল একটি রেড কর্নার নোটিস জারি করা হয়। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারকে কৃতিত্ব দেওয়ার আগে, ইউপিএ সরকার কীভাবে ভিত্তি স্থাপন করেছিল তা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।