Abdur Rezzak Mollah Dies: ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, নিরুপম সেন, অশোক ভট্টাচার্যরা গোহারা, এমনই অবস্থা রাজ্যের সিপিএমের তাবড় নেতাদের মুখ লুকানোর জায়গা নেই। তখনও রেজ্জাক মোল্লা ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্র থেকে জয় পেয়েছেন ২১ হাজার ১১৩ ভোটে। ওই কেন্দ্র থেকে টানা ৮ বারের বিধায়ক। দল বদলে ‘চাষার ব্যাটা’ আবার ২০১৬-তে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক। দীর্ঘ রোগভোগের পর ৮২ বছর বয়সে শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান ক্যানিং পূর্বের বাকড়ি গ্রামে। নিজের পৈতৃক ভিটেতেই দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন রেজ্জাক।
বামফ্রন্ট ও তৃণমূল কংগ্রেস দুই আমলেই রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন রেজ্জাক মোল্লা (Abdur Razzak Mollah)।
তিনি বামফ্রন্ট সরকারের ভূমি সংস্কার দফতরের মন্ত্রী ছিলেন, ২০১৬ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কৃষি বিপণন ও উদ্যান পালন দফতরের মন্ত্রী হয়েছিলেন। ‘হেলে ধরতে পারে না, কেউটে ধরতে এসেছে’। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের দিনেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, নিরুপম সেনদের নিশানা করে রেজ্জাক মোল্লার এই মন্তব্যে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল বাংলার রাজনীতিতে।
আরও পড়ুন- Abdur Razzak Mollah Death:বাংলার রাজনীতিতে নক্ষত্র পতন! প্রয়াত রেজ্জাক মোল্লা
রাজনৈতিক মহলের মতে, তিনি কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছিলেন কৃষকদের কাছ থেকে জোর করে জমি নিয়ে বামফ্রন্ট সরকারের চূড়ান্ত ভরাডুবি হয়েছে। তিনি মূলত রাজ্যের CPM নেতৃত্বকেই নিশানা করেছেন। একাধিকবার দলীয় বৈঠকে দলের নেতাদেরই কড়া সমালোচনা করেছেন রেজ্জাক। চাঁচাছোলা বক্তব্য রেখেছেন রাজ্য কমিটির বৈঠকেও। তাঁকে নিরস্ত করতে গিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তিনি তাঁর সমালোচনায় স্থির থাকতেন।
আরও পড়ুন- West Bengal News Live: চাকরি বাঁচাতে রাস্তাই পথ, SSC ভবন অভিযানে চাকরিহারারা
শেষমেশ ২০১৪ সালে দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য রাজ্য কমিটি থেকে রেজ্জাক মোল্লাকে বহিষ্কার করে সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি। তারপর 'ভারতীয় ন্যায় বিচার পার্টি' গঠন করেছিলেন রেজ্জাক মোল্লা। যদিও সেখানেও তিনি দীর্ঘস্থায়ী থাকেননি। তিনি ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। ভাঙড় বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে প্রার্থী করে। সদস্য হন মমতা মন্ত্রিসভার।
আরও পড়ুন- SSC Recruitment Case: 'একদিন জেলে যেতেই হবে', SSC-কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীকে চরম বার্তা দিলীপের!
ক্যানিং পূর্ব বিধানসভার মিলন বাজারের কাছে বাঁকড়া গ্রামে রেজ্জাক মোল্লার পৈতৃক ভিটেবাড়ি। অসুস্থ অবস্থায় গত চার-পাঁচ বছর ধরে ওই বাড়িতেই ছিলেন রেজ্জাক মোল্লা। সেখানে তাঁকে পালা করে দেখতে গিয়েছেন সিপিএম এবং তৃণমূলের নেতারা। তাতে আপ্লুত হয়েছিলেন রেজ্জাক। শুক্রবার রেজ্জাকের মৃত্যুর খবর পেয়ে ভাঙড় এবং ক্যানিং এলাকা থেকে একাধিক তৃণমূল ও বাম নেতারা ছুটে যান তাঁকে শেষবারের জন্য দেখতে। পৈতৃক ভিটেবাড়িতেই রেজ্জাকের দেহ সমাধিস্থ করা হবে বলে তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।