কিছুদিন আগেই কাঠুয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, দেশের মেয়েরা বিচার পাবে। এবার দেশের মেয়েদের কথা মাথায় রেখেই ধর্ষণের মতো বর্বরোচিত ঘটনার শাস্তি আরও কড়া করার পথে এগোচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। ১২ বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুদের ধর্ষণ করলে, দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হতে পারে। এ সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্সে আজ সিলমোহর দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। দেশে শিশু ধর্ষণে দোষীদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন। দেশে শিশু ধর্ষণ ঠেকাতে এবার ধর্ষকদের সাজা মৃত্যদণ্ড করে সরকার কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সূত্র মারফৎ জানা গেছে, ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে দ্রুত তদন্ত ও বিচারের জন্যও বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অর্ডিন্যান্সে বলা হয়েছে, ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে হবে। অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী এ ধরনের সমস্ত মামলার তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া ২ মাসের মধ্যে শেষ করা বাধ্যতামূলক করা রয়েছে।
আরও পড়ুন, ফের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ, এবার ঘটনাস্থল মধ্যপ্রদেশ
এরপর থেকে দেশে ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীদের কমপক্ষে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হবে। নির্যাতিতার বয়স ১৬ বছরের কম হলে অপরাধীদের সাজার মেয়াদ এবার ১০ বছর থেকে বাড়িয়ে ২০ বছর করা হয়েছে। এবং নির্যাতিতার বয়স ১২ বছর বা তার কম হলে দোষীদের ২০ বছরের সশ্রম কারাদন্ডকে বদলে এবার থেকে আমৃত্যু কারাদন্ড অথবা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন, কাঠুয়াকাণ্ড: নারী সুরক্ষা নিয়ে মোদিকে পরামর্শ আইএমএফ প্রধানের
সম্প্রতি দেশে কাঠুয়া, উন্নাওয়ের ঘটনায় পর দেশজুড়ে শোরগোল পড়েছে। কাঠুয়ায় একটি ৮ বছরের শিশুকন্যাকে দেবালয়ে আটকে রেখে গণধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। যে ঘটনা সামনে আসতেই দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে গেছে। অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ে ১৭ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন এক বিজেপি বিধায়ক। এই দুই ঘটনাতেই প্রশাসনের ভূমিকা কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে। কাঠুয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগও উঠেছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন উন্নাওয়ের কিশোরী। এমনকি, বিজেপি বিধায়ককে গ্রেফতার করা নিয়েও দীর্ঘ টালবাহানার অভিযোগ ওঠে প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন, কাঠুয়া ও উন্নাওয়ের ঘটনায় এবার সরব অমিতাভ বচ্চন
এদিকে দেশে নারীদের সঙ্গে এমন জঘন্যতম ঘটনা ঘটতে থাকায় সম্প্রতি উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন আইএমএফ প্রধান। দেশের মেয়েদের সুরক্ষা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আরও যত্নবান হতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবও কাঠুয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে নিন্দা জানিয়েছেন। সম্প্রতি দেশের রাষ্ট্রপতি শ্রী রামনাথ কোবিন্দও এ ঘটনায় সরব হয়েছেন।