উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ে ধর্ষিতার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এই মৃত্যুকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক' আখ্যা দেন যোগী। পাশাপাশি, এই মামলাটির দ্রুত বিচারের জন্য ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে পাঠানোর কথাও ঘোষণাও করেন তিনি। যোগী আদিত্যনাথ বলেন, "ঘটনায় অভিযুক্ত সকলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটির দ্রুত বিচারের জন্য ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে পাঠানো হবে এবং দোষীদের যথোপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।"
আরও পড়ুন: জীবনযুদ্ধের লড়াইয়ে হার মানলেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতা, দিল্লির হাসপাতালে মৃত্যু
প্রসঙ্গত, হায়দরাবাদকাণ্ডের পর সারা দেশ যখন ক্ষোভে ফুঁসছে, তখনই উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের বিহার থানা এলাকায় ২৩ বছর বয়সী এক তরুণীকে গণধর্ষণ করে পুড়িয়ে খুন করার অভিযোগে পাঁচ যুবকের মধ্যে দু'জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছিল। শুক্রবার রাত ১১.৪০-এ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বছর ২৩-এর নির্যাতিতার। তাঁর শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল। লখনউয়ের হাসপাতালে প্রথমে চিকিৎসা শুরু হয় তাঁর। এরপর বিমানে দিল্লিতে এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় নির্যাতিতাকে। উল্লেখ্য, ধর্ষণকাণ্ডে এই দ্বিতীয়বারের জন্য খবরের শিরোনামে উঠে এল উন্নাওয়ের নাম। এর আগে বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারের বিরুদ্ধে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল।
সংবাদসংস্থা এএনআইকে উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য বলেন, "এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এই মুহুর্তে নির্যাতিতার পরিবার কোন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা আমি কল্পনাও করতে পারছি না। আমি তাঁদের আশ্বাস দিচ্ছি দোষীদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করব। কাউকে ছাড়া হবে না।"
আরও পড়ুন: দিল্লি গণধর্ষণে অভিযুক্তদের ক্ষমার আবেদন খারিজ করতে রাষ্ট্রপতিকে জানাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক
এদিকে, নির্যাতিতার ভাইয়ের বক্তব্য তাঁর বোনের মৃত্যু তখনই ন্যায়বিচার পাবে যখন একইভাবে (হায়দরাবাদের মতো) দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে। একরাশ কান্না গলায় চেপে নির্যাতিতার ভাই বলেন, "বোন আমাকে বলেছিল ওঁকে বাঁচাতে, কিন্তু আমি ওঁকে বাঁচাতে পারিনি। আমার আর কিছু বলার নেই। আমার বোনকে আমি হারিয়েছি। আমি চাই পাঁচ দোষীকে হয় এনকাউন্টার করা হোক কিংবা ফাঁসি দেওয়া হোক।"
জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রধান রেখা শর্মাও নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এদিন দিল্লির হাসপাতালে যান। এমনকী আজ নির্যাতিতার পরিবারের পাশে থাকতে উন্নাও যেতে পারেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা, এমনটাই জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার যোগী সরকারকে নিশানা করে টুইট করেন প্রিয়াঙ্কা। লেখেন, “উন্নাওয়ের আগের ঘটনার কথা মাথায় রেখে কেন নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি নির্যাতিতাকে? যে পুলিশকর্তা এফআইআর নিতে অস্বীকার করেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? মহিলারদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য এই অপরাধ বন্ধ করতে কী পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে?"
দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল উন্নাও মামলার অভিযুক্তদের এক মাসের মধ্যে ফাঁসি দেওয়ার আর্জি জানান। তিনি বলেন, "আমি এনডিএ সরকারের কাছে এই মামলাটি দ্রুত বিচার করার এবং অপরাধীদের এক মাসের মধ্যে ফাঁসি দেওয়ার আবেদন করছি"। ইতিমধ্যেই ধর্ষকদের ছয় মাসের মধ্যে ফাঁসির দাবিতে ৩ ডিসেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করেছেন স্বাতী মালিওয়াল।
Read the full story in English