''ভ্যানিস' ফোর্থ স্টেজের ক্যান্সার' এটাই বলছে মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন অংকোলজি বিভাগের ডাক্তার। মৃত্যু সজ্জা থেকে ফিরে এসেছে অমিত ও সোমা দোলুই। কর্কট রোগে আক্রান্ত হয়ে ফোর্থ স্টেজে পৌঁছে গিয়েছিলেন এই দুইজন। মেডিক্যাল কলেজের অংকলজি ডাক্তারদের ম্যাজিকে উধাও হয়ে গেল ফোর্থ স্টেজের ক্যান্সার। এমন বিরল ঘটনার সাক্ষীই এবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন অংকোলজি বিভাগ।
ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন হাওড়ার বাগনানের বাসিন্দা সোমা দোলুই। তখন তাঁর যা অবস্থা তাতে বাঁচার সম্ভাবনা প্রায় ছিল না বললেই চলে। কিন্তু, সেখান থেকেই তিনি ফিরে এলেন জীবনের স্রোতে।
আরও পড়ুন: মধ্যবিত্তের সাধ মেটাতে হাজার দশেক টাকায় রয়্যাল এনফিল্ড বুলেটের বুকিং শুরু
সোমা দলুইয়ের ফুসফুসে প্রথমে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার (ক্যান্সার) হয়। এরপর লিভার ও হাড়ের মধ্যে দিয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ। মেডিসিন অংকলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ শিবাশিষ ভট্টাচার্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা কে বলেন, "মেডিক্যাল কলেজে সোমাদেবীর বেশ কিছু টেস্ট হয় যাতে লিসান পাওয়া যায়। বেশ কিছুদিন চিকিৎসা চলার পর চেস্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে তাঁকে রেফার করা হয় মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন অংকলজি বিভাগে। সোমা যেহুতু কোনোদিন ধূমপান করেনি, তাই ফুসফুসে 'ইমিউনোহিস্ট্রি কেমেস্ট্রি টেস্ট' করা হয়। তাতে 'এএলক ট্রান্সলোকেশন' পজেটিভ পাওয়া যায়। তারপর 'ক্রিজোটিনিপ' ওষুধ দেওয়া হয় সোমাকে। প্রথম তিন মাস এই ওষুধ খাওয়ার পর টিউমারটি প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ উধাও হয়ে যায়। পরবর্তী আরও তিনমাস ওই ওষুধই চালিয়ে যাওয়া হয়। শেষে ছয় মাসের মাথায় দেখা যায়, সোমার শরীরে আর ক্যান্সারের চিহ্নই নেই"।
আরও পড়ুন:Realme X50 Pro নাকি iQOO 3, পয়সা উসুল হবে কোন ফোনে?
চিকিৎসা চলাকালীন প্রতি মাসে সোমার ওষুধের খরচ ছিল প্রায় দেড় লাখ টাকা। কিন্তু, 'স্বাস্থ্য সাথী' কার্ড থাকার কারণে তাতে পাঁচ লাখ টাকা পাওয়া গিয়েছে। সোমার ডাক্তারবাবুর কাছে এখন একটাই চ্যালেঞ্জ, তিনি বলছেন, "লড়াই চলছে যাতে এই ক্যান্সারটা ফের ফিরে না আসে তাঁর শরীরে।"
আরও পড়ুন: রানাঘাট ছাড়িয়ে ‘ভাইরাল’ রানু, তাঁর নিউ লুকে ছেয়ে গেছে নেটপাড়া
বুধবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র সঙ্গে কথা বলেন সোমা দলুই। তিনি জানান, "আমি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। আমি সব কাজ করতে পারছি। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে যে ওষুধ আমায় দেওয়া হয়েছে, সেই ওষুধ খেয়ে আমি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছি"। সোমার স্বামী হেমন্ত দোলুই বলেন, "সরকারের কাছ থেকে প্রায় নয় লাখ টাকার সাহায্য পেয়েছি। আমরা খুব গরিব। সরকার সাহায্য না করলে আমার স্ত্রীকে বাঁচানো সম্ভব হত না। হাসপাতালের ডাক্তারবাবুরাও খুব ভালো চিকিৎসা করেছেন"।
শুধু সোমা একাই নন, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করিয়ে ফোর্থ স্টেজ ক্যান্সার সম্পূর্ণভাবে সেরে গিয়েছে অমিত সরকারেরও। পেশায় প্রযুক্তিকর্মী, হালিশহরের বাসিন্দা অমিত এখন চাকরি সূত্রে প্রত্যেকদিন হালিশহর থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভে যাতায়াত করেন।