এনআরএস ডাক্তার নিগ্রহকাণ্ডে গ্রেফতার হল দুই অভিযুক্ত। ধৃতদের নাম শেখতাবির, নজিমউদ্দিন। এরা ট্যাংরা এলাকার বাসিন্দা। এর আগে পাঁচ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। কিন্তু আদালতে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিতে না পারায় তাদের জামিন হয়ে যায়। এরপরই ফের সরব হয় এনআরএসের আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁরা দাবি করেন, অবিলম্বে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে। এরপরই সোমবার দুই অভিযুক্ত গ্রেফতার করল এন্টালি থানার পুলিশ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে এনআরএসের আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার অর্চিষ্মান ভট্টাচার্য বলেন, "গতকাল দোষীদের গ্রেফতারের জন্য আমরা ৩০ জুলাই পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলাম, এরফলেই এই গ্রেফতারি"।
রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য, পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও ডিজিপি-র উপস্থিতিতে গত শনিবার বৈঠক করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। বৈঠক শেষে পথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন জুনিয়ার ডাক্তাররা। তাঁরা জানিয়েছেন, “রাজ্যের প্রশাসনকে ১১ জুনের রাতে ঘটে যাওয়া নিন্দনীয় ঘটনাকে ফের মনে করিয়ে দিতে চাই। ১৭ জুন নবান্নে ইতিবাচক বৈঠকের পর দেড় মাস কেটে গেলেও এখনও বহাল তবিয়তে ঘুরছে দোষীরা।” মূলত এই বৈঠকের পরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ১৫ জন কে সিসিটিভি ফুটেজে চিহ্নিত করা হয়েছে, পাশাপাশি তারা যাতে বাংলাদেশের সীমানা পার করে পালিয়ে যেতে না পারে তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সেই তথ্য মতই আজ সকালে হানা দেয় পুলিশ।
প্রসঙ্গত, এর আগে ধরপাকড় করে যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, গত ১ জুলাই এনআরএসকাণ্ডে ধৃত মহম্মদ শেহনওয়াজ, আদিল হাদুন, আদিল শেখ, মহম্মদ ইউসুফ ও মহম্মদ বাদলের জামিন মঞ্জুর করে শিয়ালদা আদালত। ২ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করা হয়।
কী হয়েছিল এনআরএসে?
গত ১০ জুন রাতে এনআরএসে মৃত্যু হয় ৭৪ বছর বয়সী মহম্মদ সঈদের। চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর চড়াও হন নিহতের পরিজনরা। মারধরে গুরুতর জখম হন জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখোপাধ্যায় ও যশ টেকওয়ানি। ডাক্তার নিগ্রহের অভিযোগ ১১ জুন গ্রেফতার করা হয়েছিল পাঁচজনকে। ডাক্তার নিগ্রহের প্রতিবাদে এক সপ্তাহ আন্দোলন চলার পর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেড় ঘণ্টার বৈঠকে বসেন ধর্মঘটী ডাক্তাররা। যে বৈঠকে জুনিয়ার ডাক্তারদের তরফে একাধিকবার তুলে ধরা হয়েছে নিরাপত্তার আবেদন। তারপর উঠে আসে এক এক করে ১২ দফার দাবি, যেখানে অভিযুক্তদের যথাযথ শাস্তি ও তদন্ত চেয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেদিন সব ব্যাপারেই বরাভয় দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।