পরনে সাদা শার্ট, চোখেমুখে ‘চিন্তার ছাপ’ স্পষ্ট। প্রায় একমাস ধরে সিবিআই-এর সঙ্গে লুকোচুরি খেলার পর অবশেষে পুজোর মুখে ‘অন্তরাল’ থেকে প্রকাশ্যে এলেন কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। পঞ্চমীর দিন সকালে আইনজীবীদের সঙ্গে আলিপুর আদালতে যান বর্তমান গোয়েন্দা প্রধান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর এড়িয়েছেন এদিন। কার্যত মুখে কুলুপ এঁটে সাদা রঙের গাড়িতে উঠে আদালত চত্বর ছাড়েন রাজীব। উল্লেখ্য, ক’দিন আগেই ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে রাজীব কুমারের আগাম জামিন মঞ্জুর করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। সূত্রের খবর, আইনি প্রক্রিয়ার জন্যই এদিন আলিপুর আদালতে যান রাজীব।
প্রসঙ্গত, সারদাকাণ্ডে রাজীব কুমারের উপর হাইকোর্টের আইনি রক্ষাকবচ সরতেই কলকাতার প্রাক্তন সিপিকে হেফাজতে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে সিবিআই। হাইকোর্টের রক্ষাকবচ সরার পর রীতিমতো ‘গা ঢাকা’ দেন রাজীব। বেশ কয়েকবার হাজিরার জন্য রাজীবকে নোটিস পাঠায় সিবিআই। কিন্তু হাজিরা দেননি রাজীব। বরং আড়াল থেকে সুকৌশলে সিবিআই-এর সঙ্গে আইনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন এই দুঁদে আইপিএস। এমনকি, রাজীবের সন্ধান পেতে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজি-রও দ্বারস্থ হয় সিবিআই। পার্ক স্ট্রিটে রাজীবের সরকারি বাসভবনের পাশাপাশি কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাতে পুরোদমে তল্লাশি অভিযান চালান গোয়েন্দারা। কিন্তু রাজীব কুমারের নাগাল পায়নি সিবিআই।
আরও পড়ুন: রাজীব কুমারকে খুন করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: অর্জুন সিং
এর মধ্যে, আগাম জামিনের জন্য বারবার আদালতের দ্বারস্থ হন রাজীব। বারাসত বিশেষ আদালত, বারাসত আদালত, আলিপুর আদালতে তিন-তিনবার ধাক্কা খান কলকাতার প্রাক্তন নগরপাল। শেষমেশ ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এই আইপিএস। কয়েকদিন রুদ্ধদ্বার শুনানির পর হাইকোর্ট রাজীবের আগাম জামিন মঞ্জুর করে। আপাতত সারদা চিটফান্ড মামলায় কলকাতার প্রাক্তন নগরপালকে গ্রেফতার করতে পারবে না সিবিআই। আদালত জানায়, রাজীব কুমারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই। এছাড়া, রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইলে ৪৮ ঘণ্টা আগে নোটিস দিতে হবে সিবিআই-কে। তবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইলে রাজীব কুমারকে হাজিরা দিতে হবে বলেও জানিয়েছে আদালত। আপাতত, পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে গোয়েন্দা প্রধানকে।