Adhi Vinayaka Temple: বিশ্বের একমাত্র মন্দির, যেখানে গণেশের নরমুণ্ড দেখতে পাওয়া যায়!

Adi Vinayaka Temple: তামিলনাড়ুর কুঠানুরের আদি বিনায়ক মন্দিরে গণেশের বিরল মানবমুখী রূপ পূজিত হয়। জানুন এই অনন্য মন্দিরের ইতিহাস, তাৎপর্য। আর যাবেনই বা কীভাবে।

Adi Vinayaka Temple: তামিলনাড়ুর কুঠানুরের আদি বিনায়ক মন্দিরে গণেশের বিরল মানবমুখী রূপ পূজিত হয়। জানুন এই অনন্য মন্দিরের ইতিহাস, তাৎপর্য। আর যাবেনই বা কীভাবে।

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Narmukh Ganesh 1

Narmukh Ganesh: নরমুখের গণেশ।

Ganesh Chaturthi 2025: ভারতের মন্দির স্থাপত্য ও দেবতার রূপের বৈচিত্র্য সবসময়ই ভক্ত ও পর্যটকদের আকর্ষণ করে। তবে তামিলনাড়ুর কুঠানুরের কাছাকাছি অবস্থিত আধি বা আদি বিনায়ক মন্দির বা নরমুখ বিনায়ক মন্দির ভক্তদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এখানে গণেশ পূজিত হন মানবমুখী রূপে। যা বিশ্বের অন্য কোথাও খুব একটা দেখা যায় না। 

Advertisment

হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, দেবী পার্বতীর সৃষ্টি গণেশ প্রথমে মানুষের মুখমণ্ডলযুক্ত ছিলেন। পরে ভগবান শিব যখন ভুলবশত তাঁর মস্তক ছিন্ন করেন, তখন হাতির মাথা প্রতিস্থাপন করে তাঁকে নতুন জীবন দেন। সেই হাতিমুখী রূপই আজকের পরিচিত গজানন গণেশ। কিন্তু কুঠানুরের এই মন্দিরে পূজিত হয় তাঁর সেই বিরল আদি মানবমুখী গণপতি রূপ।

আরও পড়ুন- বাল গণপতি থেকে সংকথার্থ, ৩২ রূপে গণেশ, প্রতিটি রূপেরই রহস্য অলৌকিক

মন্দিরের মূর্তিটি

Advertisment

মূর্তির উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট। কোমরে দেখা যায় নাগভরনম (সাপের অলঙ্কার)। মূর্তি তৈরি হয়েছে ব্যাসল্ট পাথরে, যা দীর্ঘস্থায়ী এবং টেকসই।     মূর্তির মুখে রয়েছে মিষ্টি হাসি, করুণাময় দৃষ্টি ও শান্ত ভাব। সূক্ষ্ম খোদাই ও নিখুঁত অনুপাত মূর্তিটিকে একইসঙ্গে মানবিক এবং দৈবিক রূপ দিয়েছে। এই মন্দিরটি ৭ম শতাব্দীতে নির্মিত বলে মনে করা হয়। তাই এটি শুধু ভক্তির প্রতীকই নয়, বরং তামিলনাড়ুর অন্যতম প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই রূপে গণেশ জীবনের মানবিক গুণাবলি—সাহস, কর্তব্য, আবেগ এবং বিশ্বস্ততার প্রতিফলন ঘটান।    

আরও পড়ুন- এই গণপতি মন্দির জাগ্রত বলে পরিচিত, গণেশ চতুর্থীতে অসংখ্য ভক্ত ভিড় করেন এখানে

আদি বিনায়ক মন্দির বিশেষত পিতৃদোষ পূজা এবং পূর্বপুরুষের তর্পণের জন্য বিখ্যাত। ভক্তরা এখানে পিণ্ডদান করে তাঁদের পূর্বপুরুষদের শান্তি কামনা করেন। বিশ্বাস করা হয়, এই পূজার মাধ্যমে পারিবারিক সমস্যার অবসান হয় এবং মানসিক শান্তি আসে। বিশেষ আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভক্তরা আবেগগত নিরাময় ও আধ্যাত্মিক উন্নতির আশীর্বাদ পান। 

আরও পড়ুন- গণেশকে উৎসর্গ করা বলিউডের বিখ্যাত গান কোনগুলো, গণেশ চতুর্থীতে দেখে নিন

মন্দিরে পৌঁছনোর উপায়

  • রেলপথ: নিকটতম রেলস্টেশন মায়িলাদুথুরাই (২৪ কিমি দূরে)। সেখান থেকে বাস বা ট্যাক্সি নিয়ে থিলাথর্পনাপুরী পৌঁছনো যায়।

  • রাস্তা: মন্দিরটি কুম্বাকোনাম–মায়িলাদুথুরাই রোডে অবস্থিত। কুম্বাকোনাম থেকে ১৮ কিমি, মায়িলাদুথুরাই থেকে ২৪ কিমি দূরে।

  • বিমান: তিরুচিরাপল্লি বিমানবন্দর (১১০ কিমি দূরে) সবচেয়ে কাছের। সেখান থেকে গাড়িতে মন্দিরে পৌঁছনো যায়।

আরও পড়ুন- এই গল্প পাঠ ছাড়া গণেশ চতুর্থীর উপবাস অসম্পূর্ণ থাকে, সম্পূর্ণ পৌরাণিক গল্পটি পড়ুন এখানেই

আশপাশের দর্শনীয় স্থান

  • তিরুভারুর মন্দির: ভগবান শিবের উদ্দেশ্যে নিবেদিত, বিশাল রথ উৎসবের জন্য বিখ্যাত।

  • তিরুক্কান্নামাঙ্গাই মন্দির: ভগবান বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে নির্মিত, ১০৮ দিব্য দেশমের একটি।

  • তিরুথুরাইপুন্ডি শহর: প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পুকুরবেষ্টিত পরিবেশের জন্য খ্যাত।

এই মন্দির কেন গুরুত্বপূর্ণ?

বিশ্বের বেশিরভাগ গণেশ মন্দিরে হাতিমুখী গজানন রূপ দেখা গেলেও, কুঠানুরের আধি বিনায়ক মন্দিরে ভক্তরা পান বিরল মানবমুখী গণপতির দর্শন। এই কারণে মন্দিরটি শুধু ভক্তদের কাছেই নয়, ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে ভক্তদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। আর, এই কারণেই তামিলনাড়ুর কুঠানুরের আধি বিনায়ক মন্দির ভক্তদের কাছে কেবল পূজার স্থান নয়, বরং ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং আধ্যাত্মিকতার মিলনক্ষেত্র। এখানে পূজিত মানবমুখী গণেশ আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, দেবত্বের আসল অর্থ মানবিক গুণাবলিতেই রয়েছে। ভক্তি, আবেগ, কর্তব্য এবং সাহস—এই রূপেই গণপতি আমাদের জীবনকে আলোকিত করেন। 

Ganesh Chaturthi 2025