Ananda Mayee Ma: প্রয়াণের এত বছর পরও, আনন্দময়ী মা অসংখ্য ভক্তের অনুপ্রেরণা

Ananda Mayee Ma: আধ্যাত্মিক সাধিকা আনন্দময়ী মায়ের আজ ৪৩তম তিরোধান দিবস। ১৮৯৬ সালে তিনি জন্ম নিয়েছিলেন। তাঁর ঈশ্বরচেতনা অসংখ্য ভক্তকে অনুপ্রাণিত করেছে।

Ananda Mayee Ma: আধ্যাত্মিক সাধিকা আনন্দময়ী মায়ের আজ ৪৩তম তিরোধান দিবস। ১৮৯৬ সালে তিনি জন্ম নিয়েছিলেন। তাঁর ঈশ্বরচেতনা অসংখ্য ভক্তকে অনুপ্রাণিত করেছে।

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Anandamayee Maa

Ananda Mayee Ma: আজ আনন্দময়ী মায়ের তিরোধান দিবস।

Ananda Mayee Ma, Mahasamadhi: আজ, ২৭ আগস্ট, সাধিকা আনন্দময়ী মা-র ৪৩তম তিরোধান দিবস। ১৯৮২ সালের এই দিনে, রাধা অষ্টমী তিথিতে, ৮৬ বছর বয়সে তিনি মহাসমাধি গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু, তাঁর জীবনকাহিনি আজও ভক্তদের হৃদয়ে আলো জ্বালিয়ে রেখেছে।

জন্ম বাংলাদেশে

Advertisment

১৮৯৬ সালের ৩০ এপ্রিল, বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খেওড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নির্মলা সুন্দরী দেবী, যিনি পরবর্তীকালে বিশ্বজোড়া ভক্তদের কাছে পরিচিত হন আনন্দময়ী মা নামে। জন্মলগ্নেই তাঁর ব্যতিক্রমী অলৌকিকত্ব প্রকাশিত হয়—অন্যান্য নবজাতকের মত কাঁদার পরিবর্তে তিনি জন্মের পর প্রথমে হেসেছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তাঁর ঈশ্বরচেতনার লক্ষণ স্পষ্ট ছিল। হরিনামকীর্তন শুনলেই তিনি আত্মহারা হয়ে যেতেন।

আরও পড়ুন- বিশ্বের একমাত্র মন্দির, যেখানে গণেশের নরমুণ্ড দেখতে পাওয়া যায়!

Advertisment

মাত্র ১২ বছর বয়সে নির্মলার বিয়ে হয় রমনীমোহন চক্রবর্তীর সঙ্গে, যিনি পরবর্তীকালে সন্ন্যাস গ্রহণ করে ভোলানাথ নামে পরিচিত হন। সংসারজীবনেও নির্মলা এক ভিন্ন জগতে নিমগ্ন থাকতেন। স্বামীও একসময় তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তিকে উপলব্ধি করেন এবং ভক্তের মত তাঁকে পূজা করতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে ভক্তসমাজে নির্মলা রূপান্তরিত হন আনন্দময়ী মা-তে।

আরও পড়ুন- বাল গণপতি থেকে সংকথার্থ, ৩২ রূপে গণেশ, প্রতিটি রূপেরই রহস্য অলৌকিক

১৯২৪ সালে ভোলানাথ ঢাকায় নবাবের বাগানে চাকরি পেলে নির্মলা শাহবাগে চলে আসেন। সেখানেই সিদ্ধেশ্বরীতে কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। এই সময় তাঁর দিব্যভাব, যোগবিভূতি এবং অলৌকিক কীর্তি ভক্তদের মুগ্ধ করে। ভাইজি জ্যোতিষচন্দ্র রায় তাঁকে প্রথমে 'আনন্দময়ী মা' বলে সম্বোধন করেন।

আরও পড়ুন- এই গণপতি মন্দির জাগ্রত বলে পরিচিত, গণেশ চতুর্থীতে অসংখ্য ভক্ত ভিড় করেন এখানে

আনন্দময়ী মায়ের ভক্ত ছিলেন দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, কমলা নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী, পরমহংস যোগানন্দ, রাজেন্দ্রপ্রসাদ—সবাই তাঁর সান্নিধ্যে এসেছিলেন। ভক্তরা কখনও তাঁকে সরস্বতী, কখনও ছিন্নমস্তা, কখনও ভুবনেশ্বরী রূপে দর্শন করেছেন। যদিও মা নিজে আশ্রম গড়ার পক্ষে ছিলেন না, তবুও ভক্তদের উদ্যোগে তাঁর নামে অসংখ্য আশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা রমনা, খেওড়া, বারাণসী, হরিদ্বারের কাছে কনখল, বৃন্দাবন, তারাপীঠ, দেরাদুন-সহ ভারত-বাংলাদেশের নানা প্রান্তে। এসব আশ্রম আজও ভক্তদের কাছে শান্তি, ভক্তি ও সাধনার কেন্দ্র।

আরও পড়ুন- গণেশকে উৎসর্গ করা বলিউডের বিখ্যাত গান কোনগুলো, গণেশ চতুর্থীতে দেখে নিন

আনন্দময়ী মা বলতেন—'খণ্ড আনন্দে প্রাণ তৃপ্ত হয় না, মানুষ অখণ্ড আনন্দের সন্ধান করে।' তাঁর মতে, জগৎ এক নৃত্যময় সত্তা, যেখানে প্রতিটি জীবই পরমাত্মার সংগীতের অংশ। ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে তিনি সবাইকে সমানভাবে ভালোবাসতেন। ১৯৮২ সালের ২৭শে আগস্ট, শুক্রবার, রাধা অষ্টমী তিথিতে, দেরাদুনের কিষাণপুর আশ্রমে আনন্দময়ী মা মহাসমাধি গ্রহণ করেন। তাঁর দেহ কনখল আশ্রমে গঙ্গার তীরে সমাধিস্থ করা হয়। আজও লক্ষ লক্ষ ভক্ত সেখানে গিয়ে প্রার্থনা করেন।

আনন্দময়ী মা শুধু একজন সাধিকা ছিলেন না। তিনি ছিলেন কোটি ভক্তের কাছে আধ্যাত্মিক মাতা, শান্তির প্রতীক এবং জীবন্ত দেবী। তাঁর শিক্ষা আজও মানুষকে অনুপ্রেরণা দেয়। এই ৪৩তম তিরোধান দিবসে তাঁকে স্মরণ করা মানে ভক্তির অখণ্ড শিখায় নিজেকে পুনরায় উজ্জ্বল করা।

Mahasamadhi Ananda Mayee Ma