Ayurvedic sleep tips: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকের রাতের ঘুম হারিয়ে যায়। আর সেই ঘুম হারানোর ফল ভোগ করতে হয় শরীর এবং মন দুই দিক থেকেই। আপনি যদি ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে কেউ হন এবং রাতে ঘুমাতে সমস্যা হয়, তাহলে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা হতে পারে আপনার জন্য নিখুঁত সমাধান।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ডা. আর. শিবকুমারের মতে, কম ঘুমের ব্যাধি শুধুমাত্র বয়সের জন্য নয়, বরং জীবনযাত্রার গাফিলতি, শারীরিক ব্যথা এবং মানসিক উদ্বেগের জন্যও হয়।
আরও পড়ুন- চ্যাটজিপিটি কি কমিয়ে দিচ্ছে বুদ্ধির বিকাশ? অভিভাবকদের জন্য সতর্কবার্তা উঠে এল MIT গবেষণায়
কেন বয়স্কদের ঘুম আসে না?
১. শারীরিক সমস্যা: জয়েন্টে ব্যথা, প্রোস্টেট সমস্যা, ডায়াবেটিস, স্লিপ অ্যাপনিয়া ঘুম ভাঙার কারণ।
২. ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: অনেক হৃদরোগ, প্রেসার ও বিষণ্ণতার ওষুধ ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়।
৩. জীবনযাত্রার পরিবর্তন: অবসর গ্রহণের পর সক্রিয়তা হ্রাস পায়, ফলে দিন-রাতের ঘুমচক্র ব্যাহত হয়।
৪. মানসিক চাপ: বয়সে মানসিক প্রশান্তি কমে যাওয়ার ফলে ঘুম কম হয়।
আরও পড়ুন- ভারতে এল ওয়েট লস ইনজেকশন Wegovy! কত দাম, কারা ব্যবহার করবেন? জানুন বিশেষজ্ঞের থেকে
ঘুমের সমস্যা মেটানোর আয়ুর্বেদিক পদ্ধতি
১. শিরোধারা
কপালে টানা সামান্য গরম ভেষজ তেল ঢালা একটি প্রাচীন পদ্ধতি। এটি স্নায়ুতন্ত্রকে প্রশান্ত করে এবং মনকে শান্ত রাখে।
২. নাস্য
নাকে ঔষধযুক্ত তেল ঢোকানো হয়, যা মস্তিষ্কে শান্তি আনে এবং শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ করে।
৩. তালম
মাথায় তেল লাগালে মন ও স্নায়ু-উদ্দীপনার কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
৪. অশ্বগন্ধা
একটি বিখ্যাত আয়ুর্বেদিক ভেষজ, যা স্নায়ুর শান্তি বজায় রাখে, মানসিক চাপ কমায় এবং ঘুমের গভীরতা বাড়ায়।
আরও পড়ুন- চুলে ঝলমলে ভাব চান? এই ৬টি কাজ করলেই চুল পড়া কমবে, বাড়বে ঘনত্ব আর উজ্জ্বলতা!
জীবনযাত্রা পরিবর্তনের কিছু কার্যকরী টিপস
১) দুপুরে দীর্ঘ ঘুম নয়, বরং ৩০-৪৫ মিনিট ঘুম হলে রাতের ঘুম ভালো হয়।
২) প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে যান এবং উঠুন – এটি বয়স বাড়ার সঙ্গে ঘুমের ছন্দও বজায় রাখে।
৩) শোবার ঘর হোক অন্ধকার, শান্ত, ঠান্ডা – যা মেলাটোনিন নিঃসরণ বাড়ায়।
৪) ঘুমানোর ২ ঘণ্টা আগে সব স্ক্রিন অফ করুন।
৫) ঘুমানোর আগে ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন।
৬) মৃদু সুরে গান, বই পড়া বা ধ্যান করা ঘুমের আগে ভালো।
৭) বিকেলে হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম ঘুম বাড়াতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন- ঘরে সাপ ঢুকলে কী করবেন? ভুল করলেই হতে পারে প্রাণঘাতী বিপদ, জানুন কী করতে হবে!
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে?
-
ঘুম ৩ সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় ধরে বাধা পেলে
-
মানসিক চাপ বা উদ্বেগের কারণে শারীরিক অস্বস্তি শুরু হলে
-
ঘুম ভেঙে গিয়ে বারবার প্রস্রাব চাপলে
বয়স যতই হোক না কেন, ঘুম একটি মৌলিক শারীরবৃত্তীয় চাহিদা। আয়ুর্বেদিক পদ্ধতি এবং সঠিক রুটিন মেনে চললে ৬০-এর পরও গভীর, আরামদায়ক ঘুম পাওয়া সম্ভব। ডা. শিবকুমার এই প্রসঙ্গে বলেছেন, 'প্রকৃতি কখনও ঘুম কেড়ে নেয় না, আপনাকে শুধু নিজেকে আর নিজের শরীরকে সঠিকভাবে মানিয়ে নিতে হবে।'