ChatGPT Impact: চ্যাটজিপিটিতেই কমছে বুদ্ধি? MIT-র গবেষণায় অভিভাবকদের কপালে ভাঁজ

ChatGPT Brain Impact: বর্তমানে ChatGPT এবং অন্যান্য AI টুল আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। লেখালেখি, অনুবাদ, কোডিং, এমনকী পরীক্ষার প্রস্তুতিতেও এগুলোর ব্যবহার এখন ব্যাপক। কিন্তু এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কী হতে পারে? MIT-এর মিডিয়া ল্যাব থেকে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণা চমকে দেওয়ার মতো তথ্য সামনে এসেছে।

গবেষণায় কী বলা হয়েছে?

MIT মিডিয়া ল্যাব ১৮ থেকে ৩৯ বছর বয়সি ৫৪ জনকে তিনটি দলে ভাগ করে গবেষণা চালিয়েছিল। যেখানে

• ১ম দল: ChatGPT ব্যবহার করে প্রবন্ধ লিখেছে।

• ২য় দল: Google সার্চ ব্যবহার করে লিখেছে।

• ৩য় দল: একেবারে কোনও টুল ছাড়া লিখেছে।

গবেষণাকালে তাঁদের মস্তিষ্কের ৩২টি অঞ্চলে EEG সেন্সর লাগিয়ে কার্যকলাপ রেকর্ড করা হয়েছে। ফলাফলে দেখা গিয়েছে, যাঁরা শুধুমাত্র ChatGPT ব্যবহার করেছিল তাঁদের মস্তিষ্কের স্নায়বিক, ভাষাগত এবং আচরণগত কার্যকলাপ ছিল সবচেয়ে কম।

আরও পড়ুন- ভারতে এল ওয়েট লস ইনজেকশন Wegovy! কত দাম, কারা ব্যবহার করবেন? জানুন বিশেষজ্ঞের থেকে

ChatGPT ব্যবহারে মস্তিষ্কের কী ক্ষতি হয়?

MIT গবেষণা অনুযায়ী:

1. কম চিন্তাভাবনা:
   AI উত্তর তৈরি করে দেওয়ায় ব্যবহারকারীর চিন্তা করার প্রয়োজন বোধ করেন না। এতে সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ ক্ষমতা কমে যায়।

2. স্মৃতিশক্তির অবনতি:
   ChatGPT ব্যবহারকারীরা প্রবন্ধ লিখলেও তা স্মরণে রাখতে পারেননি। কারণ তাঁরা নিজে ভাবেননি—তথ্য মস্তিষ্কে একীভূত হয়নি।

3. সৃজনশীলতার ঘাটতি:
   বারবার AI-এর সাহায্যে লেখার ফলে ব্যবহারকারীরা 'কপি-পেস্ট' ফাঁদে পড়ে গিয়েছেন এবং লেখায় নিজস্বতা হারিয়েছেন।

আরও পড়ুন- চুলে ঝলমলে ভাব চান? এই ৬টি কাজ করলেই চুল পড়া কমবে, বাড়বে ঘনত্ব আর উজ্জ্বলতা!

লেখার মান কমে যাওয়ার ঝুঁকি

গবেষণায় ChatGPT ব্যবহারকারীদের লেখায় প্রায়ই:

• উপযুক্ত যুক্তির অভাব

• আবেগ বা কল্পনার ঘাটতি

• প্রায় সম্পূর্ণ AI-নির্ভর কনটেন্ট

• সামান্য সম্পাদনা-সহ কপি-পেস্ট দেখা গিয়েছে

এছাড়াও, লেখকেরা বলছেন তাঁরা নিজের লেখা বলে ভাবতেই পারছেন না, যাকে বলা যায় 'loss of ownership'।

আরও পড়ুন- ঘরে সাপ ঢুকলে কী করবেন? ভুল করলেই হতে পারে প্রাণঘাতী বিপদ, জানুন কী করতে হবে!

AI কি তাহলে ক্ষতিকর?

একেবারে নয়। গবেষণাটি বলছে: টযখন AI ব্যবহার করা হয় মানুষের চিন্তার পরিপূরক হিসেবে, তখন এটি শেখার ক্ষেত্রে সাহায্য করে।' যাঁরা প্রথমে নিজেরা ভাবেন, পরে ChatGPT দিয়ে উন্নতি করেন, তাঁরা অনেক বেশি সক্রিয় মস্তিষ্কের অধিকারী হন। এ কারণেই AI টুলগুলিকে সম্পূর্ণ নির্ভরশীলতার বদলে সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। এমনটাই জানানো হয়েছে গবেষণায়।

আরও পড়ুন- ঘন ঘন ঢেকুর উঠছে? এই কারণেই সতর্ক করলেন ডা. রাজলক্ষ্মী

অভিভাবকদের জন্য করণীয় কী?

• শিশু বা তরুণরা লেখালেখির সময় যেন আগে নিজেরা ভাবার চেষ্টা করে

• AI টুল দিয়ে শুরু না করে, পরে প্রয়োজনে লেখার উন্নয়নের জন্য যেন এই টুল ব্যবহার করে

• স্কুল ও কলেজে AI ব্যবহারে গাইডলাইন থাকা দরকার

• শিশুদের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তা, যুক্তি এবং ভাষার বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন

ChatGPT একটি দুর্দান্ত টুল—যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়। তবে অন্ধ নির্ভরতা আপনার সন্তানের মস্তিষ্কের সক্ষমতা, সৃজনশীলতা এবং স্মৃতিশক্তিকে ক্ষয় করতে পারে। আজকের AI-সমৃদ্ধ জগতে, শেখার আসল মূল চাবিকাঠি হল: প্রথমে নিজে ভাবুন, তারপর প্রযুক্তিকে কাজে লাগান।