India’s Indus Treaty Suspension: ১৯৬০ সালের সই হওয়া ইন্দাস ওয়াটারস ট্রিটি (IWT)-কে ভারত এবার স্থগিত করল। ইতিহাসে এই ঘটনা প্রথম ঘটল। পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের দ্বারা কাশ্মীরের পাহেলগামে ২৬ জন পর্যটকের ওপর হামলার একদিন পরেই এই কূটনৈতিক ধাক্কা দিল দিল্লি। ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রি এই প্রসঙ্গে বলেন, 'পাকিস্তান যতদিন না সন্ত্রাসবাদকে সরাসরি পরিত্যাগ করে, ততদিন চুক্তিটি কার্যত স্থগিত থাকবে।' ইন্দাস চুক্তি কী?
এই চুক্তি অনুযায়ী:
- ভারত জল পাচ্ছে পূর্বাঞ্চলের নদীগুলি— সতলজ, বিয়াস এবং রবি-র
- পাকিস্তান পাচ্ছে পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলি— ইন্দাস, ঝেলম এবং চেনাব-এর জল
- এই জলচুক্তি একাধিক যুদ্ধ এবং দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনার মধ্যেও বহাল ছিল। এবার সেটাই প্রথমবার অব্যবহৃত (in abeyance) বা স্থগিত রাখা হলো।
আরও পড়ুন- দুটি দেশের ব্যবহৃত একমাত্র রেলস্টেশন! ভারতের এই স্টেশন কি আপনি চেনেন?
এতে ভারতের কী সুবিধা? চুক্তি স্থগিত হওয়ার পর ভারত কী করতে পারবে?:
- পাকিস্তানের সঙ্গে জলপ্রবাহ সংক্রান্ত তথ্য ভাগ করা বন্ধ করতে পারবে
- পশ্চিমাঞ্চলের নদীতে (ইন্দাস, ঝেলম, চেনাব) নতুন জলাধার তৈরি করতে পারবে
- পাকিস্তানি প্রতিনিধিদের ভারতীয় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে পরিদর্শনের অনুমতি না-ও দিতে পারে
- কিশনগঙ্গা ও রাতলে প্রকল্পে sediment flushing-এর মাধ্যমে কার্যক্ষমতা বাড়াতে পারবে
তবে, আপাতত ভারতের কাছে এমন পরিকাঠামো নেই যে তাৎক্ষণিকভাবে জলপ্রবাহ বন্ধ করে দেবে।
আরও পড়ুন- ভারতের প্রাচীনতম ট্রেন কোনটি জানেন? এর ঐতিহাসিক যাত্রা আর বিশেষত্বর কথা শুনলে অবাক হয়ে যাবেন
পাকিস্তানের কী প্রতিক্রিয়া?
চুক্তির কোনও এক্সিট ক্লজ নেই, অর্থাৎ একতরফাভাবে এই চুক্তি বাতিল করা যাবে না। এক্ষেত্রে পাকিস্তান যদি বিচার চায়, তাহলে তাকে যেতে হবে:
- পার্মানেন্ট ইন্দাস কমিশনের কাছে
- নিউট্রাল এক্সপার্ট বা সালিশি বোর্ডের কাছে
কিন্তু ২০১৬ সালে পাকিস্তানের এক প্রাক্তন আইনমন্ত্রী বলেছিলেন— 'যদি ভারত এই চুক্তি মেনে না চলে, তবে এই মেকানিজম কোনও উপকারেই আসবে না।'
আরও পড়ুন- প্রাণঘাতী ম্যালেরিয়া! প্রতিরোধে এবার 'সমতার লড়াই'-এর বার্তা
চুক্তির ভবিষ্যৎ কী?
- চুক্তির Article XII (3) অনুযায়ী, উভয় দেশের সম্মতিতেই শুধুমাত্র পরিমার্জন সম্ভব
- ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে ভারত পাকিস্তানকে 'পরিমার্জন নোটিশ' পাঠিয়েছে
- ২০২৫ সালে 'নিউট্রাল এক্সপার্ট' নিয়োগ করেছে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, সেই 'নিউট্রাল এক্সপার্ট' বর্তমানে বিষয়টি বিচার করছেন
আরও পড়ুন- সারারাত মশার কয়েল জ্বালিয়ে রাখেন? নিজের কী হাল করছেন সেটা অন্তত একবার জেনে নিন
এই চুক্তি কার্যত কার্যকর না থাকলে, পাকিস্তান (pakistan) তীব্র জলসংকটে পড়বে। কারণ, পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চল সিন্ধু নদের (Indus Waters Treaty) জলের ওপর নির্ভরশীল। জল না পেলে ওই সব অঞ্চল কার্যত মরুভূমির মত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বাসিন্দাদের অনেকেই।