10 Things you should know about Bengali Language: আজ ২১ ফেব্রুয়ারি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলা ভাষার স্বীকৃতির জন্য এদিন শহিদ হয়েছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার-সহ আরও অনেকে। গোটা বিশ্বের বাঙালি জাতি, বাংলা ভাষীদের জন্য এই দিনটি অনেক তাৎপর্যপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক। আজ মহান দিনে জেনে নিন বাংলা ভাষা সম্পর্কে ১০টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেটা প্রত্যেক বাঙালির জানা উচিত।
১. বিশ্বের অন্যতম প্রচলিত ভাষা
বাংলা বিশ্বের পঞ্চম সর্বাধিক কথিত মাতৃভাষা। মোট বাংলাভাষীর সংখ্যার নিরিখে বিশ্বের সপ্তম সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা।
২. ২৫ কোটি মানুষ বাংলায় কথা বলেন
বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং অসমের বরাক উপত্যকায় বাংলা প্রধান ভাষা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বাংলাভাষীর সংখ্যা প্রায় ২৫ কোটিরও বেশি। দিন দিন সংখ্যা বাড়ছে।
৩. ভারতের দ্বিতীয় সর্বাধিক ব্যবহৃত ভাষা
হিন্দির পরেই বাংলা ভারতের দ্বিতীয় সর্বাধিক ব্যবহৃত ভাষা। পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং অসমের বরাক ভ্যালিতে এটা প্রধান সরকারি ভাষা। ২০১১ সালে ঝাড়খণ্ড সরকার বাংলাকে দ্বিতীয় সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেয়।
৪. ভারতের দ্রুত বর্ধিষ্ণু ভাষা
২০১১ সালে ভারতের আদম শুমারির তথ্য অনুযায়ী, বাংলা হল দেশের দ্বিতীয় সর্বাধিক কথিত ভাষা এবং চতুর্থ দ্রুত ক্রমবর্ধমান ভাষা।
৫. বাংলা ভারতের ধ্রুপদী ভাষা
২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর ভারত সরকার বাংলাকে ক্লাসিক্যাল ল্যাঙ্গোয়েজ বা ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে। এই ভাষার ঐতিহাসিক এবং সাহিত্যে তাৎপর্যের গুরুত্বের উপর নির্ভর করে এই মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ইতিহাসে জড়িয়ে বাঙালির গর্ব, অহংকার!
৬. আধুনিক বাংলা ভাষার ভিত্তি
উনিশ এবং বিশ শতকে বাংলা ভাষার আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। প্রধান কলকাতাকে কেন্দ্র করে ভাষার বিবর্তন শুরু হয়। বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ভাষা মৃলত নদিয়া এবং কুষ্টিয়া জেলার উপভাষার উপর ভিত্তি করে তৈরি।
৭. পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের বাংলা ভাষার পার্থক্য
দুই বাংলার ভাষা একটু আলাদা। পশ্চিমবঙ্গের বাংলা এবং বাংলাদেশের বাংলা ভাষার মধ্যে কিছু কিছু আঞ্চলিক পার্থক্য রয়েছে। যেমন পশ্চিমবঙ্গে জলকে জল বলা হয় কিন্তু বাংলাদেশে জলকে পানি বলা হয়।
৮. বাংলা ভাষার ঐতিহাসিক গুরুত্ব
বাংলা ভাষার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে রাষ্ট্রভাষা বাংলার পরিবর্তে উর্দু করার সিদ্ধান্ত নেয় জিন্না সরকার। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। ভাষার জন্য শহিদ হয়েছিলেন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার-সহ অনেকে। তাঁদের বলিদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন রসে-বসে যদি আগ্রহ তৈরি করা যায় তাহলেই 'বাংলাটা ঠিক আসে না' বলার প্রবণতা কমবে: কবীর সুমন
৯. বাংলা সাহিত্যের স্বর্ণালী ইতিহাস
বাংলা সাহিত্যের স্বর্ণযুগ শুরু হয় উনিশ শতকে। যাকে বাঙালির রেনেসাঁ বা নবজাগরণ বলা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম বাঙালি হিসাবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। এছাড়াও কাজী নজরুল ইসলাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো বহু সাহিত্যিক এই সময়ে বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করেন।
১০. বাংলা ভাষার প্রাচীন ইতিহাস
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের তিনটি ভাগ রয়েছে। প্রাচীন ইতিহাস ১০০০-১৩৫০ খ্রিস্টাব্দ, তারপর মধ্যযুগ ১৩৫০-১৮০০ খ্রিস্টাব্দ এবং আধুনিক যুগ হল উনবিংশ শতক থেকে বর্তমান।