/indian-express-bangla/media/media_files/2025/02/17/GBxE51101PLZsam1qo9c.jpg)
মহাশিবরাত্রিতে এই ভাবে পুজোয় হাতে নাতে মিলবে ফল! জানুন পুজোর নিয়ম রীতি Photograph: (ফাইল চিত্র)
Maha Shivratri Rituals For Puja: ২৬শে ফেব্রুয়ারি মহাশিবরাত্রি।মহাশিবরাত্রির দিনটিকে হিন্দু ধর্মে 'অত্যন্ত শুভ' বলে বিবেচনা করা হয়। সনাতন ধর্মে মহাশিবরাত্রি উৎসবের বিশেষ আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় তাৎপর্য রয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই দিনে, ভগবান শিব এবং পার্বতীর যথাযথ ভাবে পূজো করলে, সকল মনস্কামনা পূর্ণ হয়।
যদিও মহাশিবরাত্রির পুরো দিনটিতেও শিবপূজার চল প্রচলিত রয়েছে, তবুও 'শুভ সময়ে' করা পূজো বিশেষ ফল প্রদান করে। মন্দিরে গিয়ে পুজো করতে না পারলে চিন্তা করার কোন দরকার নেই।
বাড়িতেও এদিন আপনি ভক্তিভরে শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। শিবরাত্রির বিশেষ দিনে শিবের পুজো করলে সকল প্রকার সমস্যার সমাধান হয়। পাশাপাশি পরিবারে সুখ শান্তি সমৃদ্ধি আসে বলেই বিশ্বাস। বিশেষ এই দিনে চার প্রহরের সময় দুধ, দই, গঙ্গা জল, ঘি এবং বেলপাতা দিয়ে শিবলিঙ্গে অভিষেক করার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক মহাশিবরাত্রির চারটি প্রহরের শুভ সময়।
রোজ খেলেই গায়েব মেদভুঁড়ি, ছিপছিপে কোমরের সহজ উপায় এই ৫ Detox Drink
মহাশিবরাত্রিতে শিবপূজার সবচেয়ে শুভ সময়
ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথি ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে সকাল ১১:০৮ মিনিটে শুরু হবে এবং পরের দিন অর্থাৎ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে সকাল ৮:৫৪ মিনিটে শেষ হবে। পূজোর শুভ মুহুর্ত: রাত ১২:০৯ থেকে রাত ১২:৫৯ মিনিট পর্যন্ত।
উপবাসের সময় সকাল ০৬:৪৮ থেকে ০৮:৫৪ পর্যন্ত। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, প্রতি বছর ফাল্গুন কৃষ্ণ চতুর্দশী তিথিতে মহাশিবরাত্রি পালিত হয়। মহাশিবরাত্রি উপলক্ষে, হাজার হাজার ভক্ত উপোস করে ভোলেনাথের পূজো করেন। এই দিনে জলাভিষেক এবং রুদ্রাভিষেক বিশেষ ফল দেয়। এই বছর মহাশিবরাত্রি উপলক্ষে ফাল্গুন কৃষ্ণ চতুর্দশী তিথি ২৬শে ফেব্রুয়ারি সকাল ১১:০৮ টা থেকে ২৭শে ফেব্রুয়ারি সকাল ৮:৫৪ টা পর্যন্ত।
মহাশিবরাত্রির চার প্রহর পূজার মুহুর্ত-
-মহাশিবরাত্রি প্রথম প্রহর পূজোর মুহুর্ত: সন্ধ্যা ০৬:১৯ থেকে রাত ০৯:২৬
-মহাশিবরাত্রি দ্বিতীয় প্রহর পূজোর মুহুর্ত: রাত ৯:২৬ থেকে রাত ১২:৩৪
-মহাশিবরাত্রি রাতের তৃতীয় প্রহর পূ্জোর মুহুর্ত: ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১২:৩৪ থেকে ০৩:৪১ পর্যন্ত
-মহাশিবরাত্রি রাতের চতুর্থ প্রহর পূজা মুহুর্ত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোর ৩:৪১ থেকে ভোর ৬:৪৮ পর্যন্ত।
মাথা থেকে পা পর্যন্ত বহু রোগের দাওয়াই এই ফল, রোজকার ডায়েটে রাখুন এর রস
এই বছর মহাশিবরাত্রির ব্রহ্ম মুহুর্ত ভোর ০৫:০৯ টা থেকে ভোর ০৫:৫৯ টা পর্যন্ত। শাস্ত্র অনুসারে, ব্রহ্ম মুহুর্তের সময় ভোর ০৩:৩০ থেকে ০৫:৩০ পর্যন্ত। মহাশিবরাত্রির দিনে, ভগবান শিবের উপাসনার নিশীথ কালের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। শিবপূজার নিশীথ মুহূর্ত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রাত ১২:০৯ টা থেকে মধ্যরাত ১২:৫৯ টা পর্যন্ত। নিশীথ কাল পূজোর মোট সময়কাল ৫০ মিনিট। শিবরাত্রির দিনে বিশেষ এই শুভ মুহূর্তে স্নান করুন (মহাশিবরাত্রি ২০২৫ মহাকুম্ভ স্নান: শুভ মুহুর্ত)। মহাশিবরাত্রির দিনে, মহাকুম্ভের শেষ স্নানের 'ব্রহ্ম মুহুর্ত' ২৬শে ফেব্রুয়ারি ভোর ০৫:০৯ মিনিটে শুরু হবে এবং ভোর ০৫:৫৯ মিনিটে শেষ হবে।
মহাশিবরাত্রির দিনে যদি আপনি আপনার বাড়িতে বা কর্মক্ষেত্রে কিছু বিশেষ 'বাস্তু টিপস' অনুসরণ করেন, তাহলে আপনার জীবনে সুখ, সমৃদ্ধি এবং শান্তিতে ভরে উঠবে। প্রথমত, এই দিন ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঘরে ইতিবাচক শক্তি আনে এবং নেতিবাচক শক্তি দূর করে। উত্তর-পূর্ব দিকটি শিবের উপাসনার জন্য সর্বোত্তম বলে মানা হয়। এই দিকে ভগবান শিবের একটি মূর্তি বা ছবি বসিয়ে শিবের পুজো করুন। পূজার স্থানে রুদ্রাক্ষ, বেলপত্র এবং গঙ্গা জল ব্যবহার করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।
মহাশিবরাত্রির দিন, সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে উঠুন, স্নান করুন, পরিষ্কার পোশাক পরুন এবং ভগবান শিবের পূজো করুন। এই দিনে, মহিলারা বিশেষ করে শিবলিঙ্গে জল, দুধ এবং মধু অর্পণ করে তাদের পরিবারের সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করতে পারেন। যারা মহাশিবরাত্রির উপবাস পালন করেন তাদের এই দিনে বিশেষ সংযত থাকতে হবে।
তুলসীর পাতার অনেক গুণ! রোজ সকালে খালি পেটে খেলেই ৫ সমস্যা থেকে মুক্তি
রুদ্রাক্ষ বিশেষ শুভ
রুদ্রাক্ষ ভগবান শিবের অশ্রু থেকে উৎপত্তি হয়েছে বলেই মানা হয়। মহাশিবরাত্রির আগে ঘরে রুদ্রাক্ষ আনলে ভগবান শিবের আশীর্বাদ আসে। রুদ্রাক্ষ ঘরে রাখলে রোগ, ব্যধি এবং দুঃখ দূর হয়। রিবারে সুখ ও সমৃদ্ধি বজায় থাকে।
মহাশিবরাত্রির আগে, আপনি একটি পারদ শিবলিঙ্গ এনে আপনার বাড়িতে স্থাপন করতে পারেন। প্রতিদিন রীতি মেনে এই শিবলিঙ্গের পূজা করলে বাস্তু দোষ সহ অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। মহাশিবরাত্রির আগে ভগবান শিবের আশীর্বাদ পেতে, আপনি আপনার বাড়িতে কিছু বিশেষ গাছ লাগাতে পারেন। এর মধ্যে বেল গাছ এবং লজ্জাবতী গাছ উল্লেখযোগ্য।
বেলপাতা ভগবান শিবের অত্যন্ত প্রিয় এবং এই পাতা পূজোয় ব্যবহৃত হয়। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও লজ্জাবতী গাছ ঘরে লাগালে ইতিবাচক শক্তিতে ঘর ভরে ওঠে। পাশাপাশি এটি শনি দোষ কাটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে, বাড়ির দক্ষিণ দিকে লজ্জাবতী গাছ লাগানো বিশেষ শুভ।
মহাশিবরাত্রির শুভ তিথিতে, তামার কলসি কিনে ঘরে রাখা বিশেষ শুভ বলে মনে করা হয়। এই দিনে, তামার পাত্র ব্যবহার করে শিবলিঙ্গে জল অর্পণ করাও অত্যন্ত শুভ বলে বিবেচিত হয়।
এবছর দোলযাত্রা-হোলি কবে? রঙের উৎসবের দিনক্ষণ এবং দোলপূর্ণিমার তিথি জানুন
জেনে নিন বাড়ির জন্য শিবলিঙ্গ কত বড় হওয়া উচিত?
যদি আপনি আপনার বাড়িতে শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করতে চান তবে শিবলিঙ্গের আকার খুব বেশি বড় যাতে না হয় সেটা মাথায় রাখুন। কারণ বড় শিবলিঙ্গগুলি কেবলমাত্র মন্দিরের জন্যই শুভ। বাড়ির জন্য ছোট শিবলিঙ্গ কিনে আনুন। শিবপুরাণে বলা হয়েছে যে, বৃদ্ধাঙ্গুলির প্রথম অংশের চেয়ে বড় শিবলিঙ্গ ঘরে রাখা উচিত নয়। শিবলিঙ্গের পাশাপাশি গণেশ, দেবী, নন্দীর ছোট মূর্তিও রাখা যেতে পারে ।
মহাশিবরাত্রিতে, সূর্য, বুধ এবং শনি একই সঙ্গে কুম্ভ রাশিতে গোচর করবে। এই বিরল যোগ এর আগে ১৯৬৫ সালে তৈরি হয়েছিল। বিশ্বাস করা হয় যে বিরল 'গ্রহসংযোগের' সময় শিবের পূজা করলে ভক্তদের ইচ্ছা দ্রুত পূরণ হয়। এই বছর শিবরাত্রিতে, ভগবান শিবের সাথে সূর্য, বুধ এবং শনির বিশেষ পূজা করার জন্য একটি শুভ সময় রয়েছে।