Advertisment

'ব্ল্যাক আউট'-এর পরই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট মহারাজের! কেন এমন হয়? হলে কী করা উচিত?

"কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের নেপথ্যে থাকে শারীরিক নানা কারণ। কার্ডিয়াক মায়োপ্যাথি, অক্সিজেন প্রবাহ কমে গেলে সিনকোপাল অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
sourav ganguly, sourav ganguly heart attack,

দিব্যি ছিলেন কিন্তু হঠাৎই চোখে ঝাপসা, মাথায় বনবন পাক, টাল সামলাতে না পেরে মাটিতে ধরাশায়ী। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একেই বলে- 'ব্ল্যাক আউট' (Black Out)। শনিবার ভারতীয় ক্রিকেটের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা বিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) ব্ল্যাক আউট হয়েই হাসপাতালে ভর্তি হন। বর্তমানে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে স্টেন বসানো হবে হার্টে এমনটাই জানা গিয়েছে। কিন্তু কেন এই ব্ল্যাক আউট হয়?

Advertisment

মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ডা: অসীম কুমার চক্রবর্তী বলেন, "বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্ল্যাক আউট হঠাৎ করেই হয়। প্রথমে মাথা ঘোরা, পরে চোখে ঝাপসা দেখা এবং এরপর অজ্ঞান হয়ে যান অনেকে। কয়েক সেকেন্ড সেই অবস্থাতেই থাকেন। মস্তিষ্কে এবং হৃদপিণ্ডে অক্সিজেন যদি ঠিক মত না পৌঁছয় সেক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটে থাকে।"

যদিও কোনও একটি কারণে নয় একাধিক কারণে এই ব্ল্যাক আউটের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে ব্ল্যাক আউট মানেই যে মারাত্মক কিছু তেমনটা নাও হতে পারে এমনটাই জানিয়েছেন কার্ডিওলজি বিভাগের এই চিকিৎসক। তাঁর মতে, অনেকসময় হাইপার টেনসন (উচ্চরক্তচাপ) রয়েছে তাঁদেরও প্রেসার বেড়ে গেলে কিংবা কমে গেলে এরকম উপসর্গ দেখা যায়। এছাড়াও যাঁদের হাইপার গ্লাইসেমিয়া বা ডায়াবেটিস মেলিটাস আছে তাঁদের রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে গেলে এ ধরণের ব্ল্যাক আউটের ঘটনা ঘটে।

ব্ল্যাক আউটের সঙ্গে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কোনও সম্পর্ক রয়েছে?

অসীমবাবু জানিয়েছেন, "কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের নেপথ্যে থাকে শারীরিক নানা কারণ। কার্ডিয়াক মায়োপ্যাথি, হৃদপেশিতে আঘাত, অক্সিজেন প্রবাহ কমে গেলে সিনকোপাল অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে হৃৎপিণ্ডের ধমনীর রক্তপ্রবাহে বিভিন্ন কারণে অবরোধের কারণে, কোনও ব্লক থাকলে হয়। তেমনই মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে টিউমার বা সেরিব্রাল ইস্কেমিয়া (মস্তিষ্কে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে) এমনটা ঘটনা ঘটতে পারে।"

কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের লক্ষণগুলি কী কী?

* বুকে অসহ্য চাপ, মোছড়ান, অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভব।
* হাত, গলা, পিঠ, চোয়াল বা পাকস্থলির উপরের অংশ ব্যথা বা অস্বস্তি।
* ঘন ঘন নিঃশ্বাস প্রশ্বাস।
* বমি বমি ভাব, বমি হওয়া।
* মাথা ঝিমঝিম করা।
* খুব ঘামতে থাকা।
* ঘুমে ব্যাঘাত ঘটা।
* শক্তিহীন বা শ্রান্তবোধ করা।

এরকম ব্ল্যাক আউটের পর বুকে ব্যথা হলে কী করা উচিত?

ডা: অসীম চক্রবর্তীর কথায়, "আমরা প্রথমেই বলি হাসপাতালে নিয়ে যেতে। ব্ল্যাক আউট হওয়ার পরবর্তী একঘন্টা সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। দেরি হলে খুব মুসকিল হয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় অক্সিজেন ও স্যালাইন দিয়ে নেওয়া ভাল। প্রাথমিকভাবে, নুন চিনি লেবুর জল খাওয়ানো উচিত। এরপর প্রাথমিক পরীক্ষার পর ইসিজি (ECG), ট্রপ টি (TROP T test) টেস্ট করা হয় হার্ট অ্যাটাকই হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করতে। তারপর কার্ডিয়াক এনজাইমের উপর বিভিন্ন টেস্ট করা হয়। এরপর অ্যাঞ্জিওগ্রাফি করে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।"

কোনও রোগীর ব্ল্যাক আউট হলে অক্সিজেন এবং স্যালাইন খুব জরুরি। তবে বেশিরভাগ চিকিৎসকদের মত রোগীকে বাড়িতে না রেখে এক ঘন্টার মধ্যে হাসপাতলে নিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের। সঠিক সময়ে সঠিকভাবে চিকিৎসা হলে রোগী যথাসময়ে সুস্থ হয়ে উঠতে সক্ষম হন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Sourav Ganguly health lifestyle
Advertisment