Sukanta Bhattacharya: শতবার্ষিকীতে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য, দেখে নেওয়া যাক সাম্যের কবির জীবন, সাহিত্য ও উত্তরাধিকার

Sukanta Bhattacharya: কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ১০০তম জন্মদিন। সাম্যের কবির জীবন, সাহিত্যকর্ম ও উত্তরাধিকারের গল্প জানুন, যিনি মাত্র ২১ বছরে রেখে গেছেন অমর কাব্যঐতিহ্য।

Sukanta Bhattacharya: কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ১০০তম জন্মদিন। সাম্যের কবির জীবন, সাহিত্যকর্ম ও উত্তরাধিকারের গল্প জানুন, যিনি মাত্র ২১ বছরে রেখে গেছেন অমর কাব্যঐতিহ্য।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Sukanta Bhattacharya

Sukanta Bhattacharya: সুকান্ত ভট্টাচার্য।

Sukanta Bhattacharya Birthday: আজ শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫ — সাম্যের কবি হিসেবে খ্যাত সুকান্ত ভট্টাচার্যের ১০০তম জন্মদিন। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রগতিশীল কণ্ঠস্বর এই তরুণ কবি ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কলকাতার কালীঘাটের মহিমা হালদার স্ট্রিটে মামা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা নিবারণ ভট্টাচার্য এবং মা ছিলেন সুনীতি দেবী। জন্ম যদিও কলকাতায়, তবে কবির পূর্বপুরুষের নিবাস ছিল গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়া উপজেলার আমতলি ইউনিয়নের উনশিয়া গ্রামে।

Advertisment

বর্তমানে কবির পিতৃভিটায় সরকারিভাবে একটি অডিটোরিয়াম ও লাইব্রেরি নির্মাণ করা হয়েছে, যা কবির স্মৃতিকে অমর করে রেখেছে। প্রতিবছর কবির জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এখানে গ্রামীণ মেলার আয়োজন হয়, যেখানে ভারত-সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কবিপ্রেমীরা অংশ নেন। দর্শনার্থীরা তাঁর পৈতৃক বাড়ি দেখতে আসেন এবং কবির সাহিত্য ও আদর্শ সম্পর্কে জানেন।

আরও পড়ুন- স্বাধীনতা দিবস ২০২৫, কয়েকটি ডিজাইনে দেশপ্রেমের অনন্য আইডিয়া

জন্মবার্ষিকীর আয়োজন

এ বছরও সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কোটালিপাড়া উপজেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কবির প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা এবং আলোচনা সভা। বরেণ্য কবি ও সাহিত্যিকদের অংশগ্রহণে এই আলোচনা সভায় সুকান্তের সাহিত্য, জীবন ও সংগ্রামের গল্প উঠে আসবে।

Advertisment

আরও পড়ুন- জেনে নিন সৌন্দর্যের গোপন রহস্য! ত্বক আর চুল হবে উজ্জ্বল, ঝলমলে

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহম্মদ মাসুম বিল্লাহ বলেছেন, 'বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য। তাঁর অবদানকে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে আমরা বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করা হবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।'

আরও পড়ুন- স্বাধীনতা দিবসে আপনার অফিস, ঘর এভাবে সাজান, মুগ্ধ হবে সবাই

সাহিত্য ও আদর্শ

সুকান্ত ভট্টাচার্য বাংলা সাহিত্যে এসেছিলেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে। তাঁর কবিতায় ফুটে উঠেছে দারিদ্র্য, সংগ্রাম, সাম্য ও বিপ্লবের ডাক। তিনি বিশ্বাস করতেন, সাহিত্য শুধু নান্দনিকতার জন্য নয়, বরং সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে — 'ছাড়পত্র', 'ঘুম নেই', 'পূর্বাভাস', 'অভিযান', এবং 'হরতাল'। ‘ছাড়পত্র’ কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলো বিশেষভাবে জনপ্রিয়, যেখানে তিনি তরুণদের সংগ্রামে নামতে আহ্বান জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন- বিপ্লবী থেকে ঋষি, কতটুকু জানেন শ্রীঅরবিন্দকে?

সংক্ষিপ্ত জীবন, অমর অবদান

মাত্র ২১ বছর বয়সে, ১৯৪৭ সালের ১৩ মে, যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। এত অল্প বয়সে মৃত্যু হলেও তাঁর সাহিত্যিক অবদান বাংলা সাহিত্যে অম্লান হয়ে রয়েছে। সুকান্ত ছিলেন কাজি নজরুল ইসলামের পরবর্তী প্রজন্মের অন্যতম শক্তিশালী কবি, যিনি তাঁর সময়ের সমাজ, রাজনীতি ও সাধারণ মানুষের দুরবস্থাকে নিজের কাব্যে জীবন্ত করে তুলেছিলেন।

উত্তরাধিকার

আজও সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে। ছাত্র-যুব আন্দোলন, সামাজিক আন্দোলন বা যে কোনও ন্যায়ের সংগ্রামে তাঁর কবিতা স্লোগান হয়ে ওঠে। তাঁর কলমের শক্তি এখনও সমাজে পরিবর্তনের স্বপ্ন জাগায়।

আজ, তাঁর ১০০তম জন্মদিনে, তাঁকে স্মরণ করা মানে শুধু একজন কবিকে শ্রদ্ধা জানানো নয়, বরং সেই আদর্শকে মনে রাখা — যে আদর্শ আমাদের বলে, সত্য ও ন্যায়ের জন্য সাহসী হতে হবে।

Birthday Sukanta