Vishwakarma Puja 2025: বিশ্বকর্মার সঙ্গে পুজো পেতেন এই কলকাতায়, তাঁর ছেলেরা ছিলেন রামায়ণেও!

Vishwakarma Puja: বিশ্বকর্মা পুজো মানেই দেবশিল্পীর আরাধনা। বাংলার লোকাচারের সঙ্গে রয়েছে তাঁর সম্পর্ক। তাঁর দুই ছেলেকেও একসময় পুজো করত কলকাতা।

Vishwakarma Puja: বিশ্বকর্মা পুজো মানেই দেবশিল্পীর আরাধনা। বাংলার লোকাচারের সঙ্গে রয়েছে তাঁর সম্পর্ক। তাঁর দুই ছেলেকেও একসময় পুজো করত কলকাতা।

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Vishwakarma Puja 3

Vishwakarma Puja: বিশ্বকর্মা পুজো।

Vishwakarma Puja 2025: বিশ্বকর্মাকে বলা হয় দেবতাদের শিল্পী এবং নির্মাতা। ঋগ্বেদের বিশ্বকর্মা ছিলেন বৃদ্ধরূপী, কিন্তু বাংলার লোকাচারে তিনি যুবক ও কার্তিকের মত সুদর্শন। তাঁর হাতে থাকে দাঁড়িপাল্লা, হাতুড়ি, করাত, যন্ত্রপাতি—যা তাঁকে দেবশিল্পীর প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছে। ভাদ্র সংক্রান্তিতে বাংলায় বিশ্বকর্মা পুজো হয়। এদিন অনেকে ঘুড়ি ওড়ান, কেউ রান্না পুজো করেন।

Advertisment

বিশ্বকর্মার সন্তান

বাংলার পুরাণে ও লোকাচারে বিশ্বকর্মার দুই পুত্রের নাম নল ও নীল। এরা একসময় কলকাতার পুজোতেও বিশ্বকর্মার পাশে প্রতিমা হিসেবে উপস্থিত থাকতেন। কালের নিয়মে আজ তাঁরা প্রায় হারিয়ে গিয়েছেন। রামায়ণে বলা হয়, নল ও নীল বানররূপে জন্ম নেয় এবং তাঁরা কারিগরি দক্ষতায় পিতার মতোই পারদর্শী ছিলেন।

আরও পড়ুন- বাঙালি আর অবাঙালি বিশ্বকর্মার চেহারা একদম আলাদা, জানেন কেন?

কথিত আছে, ছোটবেলায় নল ও নীল মুনি-ঋষিদের জিনিস সাগরে ফেলে দিত। এতে এক ঋষি তাঁদের অভিশাপ দেন—'তোমরা সাগরে কিছু ফেললেও তা আর ডুববে না।' এই অভিশাপ পরবর্তীতে আশীর্বাদে পরিণত হয়, কারণ রামের সেতু নির্মাণে এই ক্ষমতাই কাজে লেগেছিল।

Advertisment

আরও পড়ুন- বিশ্বকর্মার সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ হয়েছিল বেহুলার? জানুন সে কাহিনি

সীতা উদ্ধারের জন্য রামচন্দ্র যখন সমুদ্রপাড়ে পৌঁছন, তখন সমুদ্র পার হওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। তখন নল ও নীল তাঁদের ক্ষমতা ব্যবহার করে সমুদ্রের ওপর ভাসমান পাথর বসিয়ে সেতু নির্মাণ শুরু করেন। এই সেতুই রামসেতু, যা দক্ষিণ ভারতের রামেশ্বরম থেকে শ্রীলঙ্কার মান্নার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

আরও পড়ুন- দুর্গাষ্টমীর সন্ধি পূজা, এর আচার-ভোগে থাকে বিশেষত্ব, মেলে বিরাট সুফল

নলকে বলা হয় বানরদের স্থপতি। তিনি ও তাঁর ভাই নীল শুধু সেতু নির্মাণেই নয়, যুদ্ধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। কৃত্তিবাসী রামায়ণে বলা হয়, নীল রাবণের যজ্ঞ ভঙ্গ করেছিলেন। আবার মহাভারত ও জৈন গ্রন্থেও নল-নীলের উল্লেখ আছে। তবে রামসেতুর কারিগর হিসেবেই তাঁদের সবচেয়ে বেশি পরিচিতি।

আরও পড়ুন- নবদ্বীপের লালদুর্গা পুজো, এই পুজোর অলৌকিক কাহিনি শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে!

লোকাচারে একসময় বিশ্বকর্মার প্রতিমার সঙ্গে নল ও নীলকেও দেখা যেত। মাঝে বিশ্বকর্মা, আর দুই পাশে তাঁর দুই পুত্র। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের উপস্থিতি কমে গিয়েছে। এখন বাংলায় মূলত একাই পূজিত হন বিশ্বকর্মা। নল ও নীলের কাহিনী শুধু পৌরাণিক নয়, তা কারিগরি জ্ঞান ও সৃজনশীলতার প্রতীকও। তাঁদের গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, বিশ্বাস, দক্ষতা ও ঐক্য থাকলে অসম্ভবও সম্ভব হতে পারে।

Vishwakarma Puja 2025