সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশ জোড়া প্রতিবাদের মাঝে উর্দু ভাষার বিশিষ্ট প্রহসন লেখক মুজতবা হুসেন পদ্মশ্রী সম্মান ফেরানোর কথা ঘোষণা করলেন। ৮৭ বছর বয়সী হুসেন গত কয়েক দশক ধরে উর্দুভাষায় প্রহসন ও হাস্যরসনির্ভর ২৫টিরও বেশি বই লিখেছেন। তিনি বলেছেন দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের এই অবক্ষয়ের সময়ে তিনি আর হাসতে পারছেন না।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন, "আমি সারাজীবন হিউমার লেখক। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আজকের সময়ে আমি আর হাসতে পারছি না। আমি হাসার অবস্থায় নেই। গরিব মানুষের হাসি কেড়ে নেওয়া হয়েছে, কৃষকরা আত্মহত্যা করছেন... আমি সাধারণ মানুষের দুর্দশা দেখতে পাচ্ছি। সকলে কষ্টে রয়েছেন। আমি হাসতে পারছি না।"
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং দেশভাগের সাক্ষী মুজতবা হুসেন বলেছেন, "এখনকার সময় আগে তাঁর দেখা কোনও সময়ের সঙ্গেই তুলনীয় নয়। গান্ধী, নেহরু, মৌলানা আজাদ, আম্বেদকরদের মত আমাদের পূর্বপুরুষরা আমাদের স্বাধীনতা ও সংবিধান দিয়েছেন এবং এত বছর ধরে গণতন্ত্রকে পোষণ করা হয়েছে। এখন হঠাৎ তাতে পতন দেখা যাচ্ছে।"
যেভাবে ধর্মের নামে মানুষ ভাগ করা হচ্ছে, তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, "সব আইন তৈরি করে প্রয়োগ করার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করার কি প্রয়োজন রয়েছে? এখন ঐক্যের কথা কম হয়, ভাগাভাগির কথা বেশি হয়। এখন কেউ একতার কথা বলতে চায় না। সকলের মনে এখন ঘৃণা ঢুকে গিয়েছে। আমাদের দেশ এ জিনিস মেনে নেবে না।"
সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পাচ্ছেন চিন্ময় গুহ
তিনি আরও বলেছেন, "আজ যে ভাবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস হচ্ছে, তার সঙ্গে বাবরি মসজিদ ধ্বংসও কোনওভাবেই তুলনীয় নয়। যে ভাবে নিঃশব্দে চটপট গণতন্ত্র ধ্বংস হচ্ছে তা অতীব দুঃখজনক।"
উর্দু সাহিত্যের হাস্যরসে অবদানের জন্য ২০০৭ সালে হুসেনের হাতে দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ সম্মান তুলে দেন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম।