১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন। ১৮৬৩ সালে এই দিনে তিনি জন্মেছিলেন। দেড়শো বছর পার হয়ে গিয়েছে। বিবেকানন্দ নিয়ে আলোচনা ফুরোয়নি। রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীর পর তিনিই বোধহয় ভারতের সবথেকে বেশি আলোচিত ব্যক্তি।
সম্প্রতি একটা ঘটনা নজরে এসেছে, হিন্দুত্ববাদীরা বাঙালির নরেন বা বিলেকে সম্পূর্ণ ভুল ভাবে তুলে ধরে তার দখল নিয়েছে। প্রশ্ন হল বিবেকানন্দর মতো একজন সেকুলার, সমাজতান্ত্রিক ভাবনার মানুষকে কি আমরা কতিপয় হিন্দু মৌলবাদীর হাতে ছেড়ে দেব? না কি আমরা নতুন করে বিবেকানন্দ পড়তে শুরু করব! এই সপ্তাহের বেঙ্গল লাইনে লেখার এটাই বিষয়।
সরলাদেবী সম্পাদিত বৈশাখ সংখ্যা ভারতী পত্রিকায় ১৯০৯ সালে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘অল্পদিন পূর্বে বাংলাদেশে যে মহাত্মার মৃত্যু হইয়াছে সেই বিবেকানন্দ পূর্ব ও পশ্চিমকে দক্ষিণে ও বামে রাখিয়া মাঝখানে দাঁড়াইতে পারিয়াছিলেন। ভারতবর্ষের ইতিহাসে পাশ্চাত্যকে অস্বীকার করিয়া সংকীর্ণ সংস্কারের মধ্যে ভারতবর্ষকে সীমাবদ্ধ করা তাঁহার জীবনের শিক্ষা নহে। গ্রহণ করিবার সৃজন করিবার মিলন করিবার অপূর্ব প্রতিভা তাঁহার ছিল। তিনি ভারতের সাধনাকে পশ্চিমে, পশ্চিমের সাধনাকে ভারতে দিবার ও লইবার পথ রচনা করিতে গিয়া নিজের জীবনকে উৎসর্গ করিয়াছিলেন’।
দীপিকা পাড়ুকোনরা দেখিয়ে দিচ্ছেন বলিউডে মেয়েদের দমই বেশি
একটা কথা প্রথমেই বলে নেওয়া জরুরি। বিবেকানন্দের কর্মজীবন বছরের হিসেবে খুব ছোট। মাত্র ৩৯ বছর বয়সে তিনি মারা যান। তাঁর লেখার সঙ্গে তাঁকে বোঝার জন্য আমাদের আশ্রয় নিতে হয় তাঁর অসংখ্য চিঠি, বক্তৃতা ইত্যাদির। এবং যে কোনও সুস্থ মানুষের মতোই তাঁর লেখায় কখনও কখনও এমন কিছু খুঁজে পাওয়া যায়, যা দেখে মনে হতে পারে তিনি তো আগে এই নিয়ে অন্যরকম বলেছিলেন! একজন অতি প্রতিভাধর মানুষের কম বয়সে মৃত্যুর জন্য এমন হতেই পারে। সেখানে দেখা উচিত, তাঁর মূল বক্তব্যের স্পিরিট বা ঝোঁক কোন দিকে!
সম্ভবত রামমোহনই প্রথম ভারতীয় যাঁর সঙ্গে ইউরোপিয় সমাজতন্ত্রীদের প্রথম পরিচয় হয়। শুধু পরিচয় নয়, ইংল্যান্ডের সমাজতন্ত্রী রবার্ট ওয়েনের সঙ্গে সমাজতন্ত্র এবং ধর্মের ভূমিকা নিয়ে বেশ তর্ক-বিতর্কও হয়। রামমোহন ধর্মশূন্য সমাজতন্ত্র মানতে পারেননি। সমাজতন্ত্র ধর্মশূন্য হবে, না ধর্মসহ হবে এই তর্ক আরও কয়েকশো বছর চলবে। ধর্মবিরোধী রুশ সমাজতন্ত্র বা পূর্ব ইওরোপের সমাজতন্ত্রের জন্ম ও মৃত্যু আমরা দেখেছি। সেই সব দেশে ধর্মের ফিরে আসাও দেখা গিয়েছে। ফিরে আসা বলা উচিত, না লুকিয়ে রাখা ধর্মের পুনঃপ্রকাশ বলা উচিত সেটা নিয়েও ভাবার আছে।
রুশ ভাষায় রবীন্দ্রনাথ পড়ে বিশ্বভারতী দেখতে এসেছিলেন লুদমিলা পাতাকি, বছর কুড়ির তরুণী। সেটা ১৯৯২-৯৩ হবে। ফেরার পথে কলকাতায় পরিচয় হয়েছিল। শীতকাল ছিল। সোয়েটারের উপর দিয়ে লুদমিলার চেনে ঝোলানো ‘ক্রশ’ দেখা যাচ্ছিল। প্রশ্ন করতে হেসে বলেছিল, ‘ছোটবেলায় মা বলতেন জামার ভিতরে লুকিয়ে রাখতে। এখন আমরা আর লুকোই না’।
তারও আগে, ১৯৮৬ সালে একদিন পূর্ণেন্দু পত্রী আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন পুতুলনাচের সেই বিখ্যাত মানুষ রঘুনাথ গোস্বামীর কাছে। আমি তখন ছিঁচকে সাংবাদিক। পূর্ণেন্দুদা ইনটারভিউ নেবেন, আমার কাজ সেটা টেপবন্দি করে শুনে লিখে দেওয়া। রঘুনাথ গোস্বামী তখন সবে সোভিয়েত রাশিয়ায় অনুষ্ঠান করে এসেছেন। কথা প্রসঙ্গে রঘুনাথ গোস্বামী জানিয়েছিলেন, মস্কোয় অনুষ্ঠান শেষে একটি মেয়ে তাঁকে আলাদা করে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁর আঁকা রাধা-কৃষ্ণের ছবি দেখিয়ে জানতে চেয়েছিল, হয়েছে কি না? তখনও ইন্টারনেট আসেনি।
প্রতিরোধের নতুন ভাষ্য
মেয়েটি নাকি রঘুনাথ গোস্বামীকে বলেছিল, সে বই পড়েছে, কিন্তু আগে কখনও রাধা-কৃষ্ণের ছবি দেখেনি। আদ্যন্ত সিপিআই ঘরানার বামপন্থী শিল্পী পূর্ণেন্দু পত্রীর গল্পটা শুনে মোটেও ভালো লাগেনি। তবে পরে প্রতিক্ষণে প্রকাশিত সেই সাক্ষাৎকারে তিনি ওই অংশ রেখেছিলেন কিনা সেটা আমার এতদিন পরে আর মনে নেই।
মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার পরে, ২০০৫ সালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য গণশক্তি শারদীয় সংখ্যায় একটি প্রবন্ধে লিখেছিলে, ‘রাশিয়া ঘুরে এসে রবীন্দ্রনাথ বুঝেছিলেন ছাঁচে ঢালা ব্যবস্থা টিকবে না। কিন্তু আমরা বুঝতে পারিনি’। এই নিয়ে তখন বেশ আলোচনাও হয়েছিল।
ইএমএস নাম্বুদিরিপাদ পার্টির খবরের কাগজ দেশাভিমানী-তে ধারাবাহিক ভাবে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস লিখেছিলেন, পরে সেটা বই হয়ে প্রকাশিত হয় বিভিন্ন ভাষায়। সেখানে নাম্বুদিরিপাদ লিখেছেন, ‘বিবেকানন্দের ভাষণে, চিঠিপত্রে থাকতো- কিছুটা স্পষ্টাস্পষ্টিভাবেই – এমন সব মন্তব্য, যা আধুনিক বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদী আন্দোলন গড়ে তোলার পথে পরম সহায়ক। এমন সব কথাও তাঁর মুখ দিয়ে বেরোতো যা বাহ্যত ধর্ম প্রতিষ্ঠান, পুরোহিতদেরই বিরুদ্ধে যেত।
যেমন, তাঁর এক শিষ্যের কাছ থেকে শোনা – বিবেকানন্দ একবার এই কথা বলেছিলেন যে, দেশ যখন চরম দারিদ্রে, দুঃখ দুর্দশায় ডুবে আছে, তখন ধর্ম নিয়ে বাগাড়ম্বর করার সময় নয়।... মাঝে মাঝে তাঁর মুখে এমন কথাও প্রকাশ পেয়েছে যে, যারা গরিব, যারা নিঃস্ব, যারা দুর্বল, তারাই তো আসল দেবতা... তিনি যত ভাষণ দিয়েছেন তাদের সবেরই ভিতরে জাতির মুক্তিলাভের দুর্মর কামনা অনুভব করা যেত।
নিরাপদ বৃত্ত ছেড়ে বাইরে আসুন, প্রধানমন্ত্রী
এই বিবেকানন্দকে বাংলার কমিউনিস্টরা কিন্তু যে কোনও কারণেই হোক, এড়িয়ে চলেছেন। সেভাবে আলোচনার মধ্যেই আনেননি। বাংলার শীর্ষস্থানীয় কমিউনিস্টদের বিবেকানন্দচর্চা বা কোনও উল্লেখযোগ্য লেখা, আমার ভুলও হতে পারে, কিন্তু মনে পড়ছে না।
আজকের তরুণদের সামনে সমাজতন্ত্রের মডেল হিসেবে ভিয়েতনাম, উত্তরকোরিয়া বা চিনকে তুলে ধরলে তারা অনেকেই তাকে আদর্শ সমাজ বলে মানতে চাইবে না। আজকের ইন্টারনেট, ডিজিটাল লাইব্রেরির যুগে একনায়কতন্ত্রী-সমাজতন্ত্রের অন্ধকারমাখা ছবি আর চেপে রাখা যায় না। ফলে এইসব সমাজতন্ত্র নতুন যুগের মানুষদের চোখে আর কোনও স্বপ্ন তৈরি করে না। যদিও সাম্যের আদর্শের প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীতা সারা বিশ্বেই বাড়ছে। বামপন্থীদের এবং সমাজতন্ত্রের সংকটের অনেক কারণের মধ্যে এটা অন্যতম।
আমাদের সংবিধান যতটা সাম্যের কথা বলে, যতটা গণতন্ত্রের কথা বলে তার প্রতি নতুন করে আকর্ষণ বাড়ছে। সংবিধান আর শুধু সুপ্রিম কোর্ট আর সংসদের বিষয় নেই এই মুহূর্তে। সে কারণেই দেশ যখন সঙ্কটে, সংবিধান আর তেরঙা হাতে নিয়ে পথে পথে পথে গলা ফাটাচ্ছেন কমবয়সীরা।
একথা ঠিক বিবেকানন্দ কেন কোনও ভাবনাই একশো ভাগ অনুসরণযোগ্য যায় না। সেটাই স্বাভাবিক। ধর্মে বা রাজনীতিতে কোনও একটি নির্দিষ্ট ভাবনাকে ‘ইজম’ ইত্যাদি তকমা দিয়ে সব অসুখের মহাবটিকা বলে দাবি করা একধরনের মৌলবাদী আচরণ। বিবেকানন্দের মতে ভারত ধর্মপ্রাণ দেশ। এবং তাঁর অদ্বৈত-বেদান্ত নির্ভর মানবসেবার ভাবনা বলে, ‘সর্বভূতে ঈশ্বর বিদ্যমান’।
ঈশ্বর কেউ মানতে পারেন, নাও মানতে পারেন, কিন্তু এই কথার যে মূল অর্থ, তা কিন্তু সাম্যের কথা বলে। সব মানুষ এক। সবাই সমান। বিবেকানন্দ মনে করতেন সব মানুষের মধ্যে রয়েছে অনন্ত সম্ভাবনা। এই সম্ভাবনাকে রূপ দেওয়ার পথ হল, উন্নতমানের শিক্ষা সবার জন্য। কারণ তাঁর মতে সবার মধ্যে ঈশ্বর বিদ্যমান। অজ্ঞানতার জন্য প্রকাশের কম-বেশি হয়। এই ভাবনা বলে, বিবেকানন্দের মতে যিনি নাস্তিক তাঁর মধ্যেও ঈশ্বর বিদ্যমান। ফলে নাস্তিকের সঙ্গে তাঁর আদর্শের কোনও বিরোধ নেই।
একটু অতীত ঘুরে আসা যাক। রামায়ণে এই কারণেই চূড়ান্ত অবিশ্বাসী নাস্তিক জাবালি সম্মানের সঙ্গে পুজো পান। ভরত যে বনবাস থেকে রামকে ফেরাতে গিয়েছিলেন, সে দলে কিন্তু জাবালিও ছিলেন পরামর্শদাতা হিসেবে। জাবালি রামকে ‘ধর্মবিরুদ্ধ’ উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন, বাবাকে শ্রদ্ধা করা ভালো, কিন্তু বাবা যদি ভুলভাল বলেন, সেসব শোনার দরকার কী? অর্থাৎ পিতৃসত্য-টত্য বলে কিছু হয় না।
জাবালি রামকে বললেন, এই পৃথিবীতে জীব একা জন্মায়, একাই বিনষ্ট হয়। মাতা পিতা ভ্রাতা বন্ধু সব সম্পর্ক অস্থায়ী। একে সত্য ভেবে যারা তাতে আসক্ত হয়, তারা নির্বোধ। কারণ কেউ কারও নয়। মৃত্যুতেই সব কিছুর পরিসমাপ্তি। দশরথও রামচন্দ্রের পিতা নন। রামচন্দ্রও দশরথের পুত্র নন। প্রত্যেকেই স্বতন্ত্র ব্যক্তি। পিতা জীবনের বীজ মাত্র, ঋতুমতি মাতার গর্ভে একত্রে মিলিত শুক্র ও শোণিতই জন্মের মূল কারণ। মা বা মাতা সম্পর্কে এমন আবেগবিহীন মতও প্রকৃত হিন্দুত্বে সমাদরে গ্রহণযোগ্য। গ্রহণযোগ্য কারণ তিনি জ্ঞানী।
মমতা-মোদী বোঝাপড়া – গুজব, জল্পনা, সত্য
তাঁর সম্পর্কে তাই বশিষ্ঠ মুনিকে বলতে শোনা যায়, জাবালির সমস্তই জ্ঞাত। মহাতপস্বী এই জাবালিকে আমরা আবার পাই, রাবণ বধের পর রামের অভিষেকে। দেখা যাচ্ছে এই পরম নাস্তিকও সেখানে সমাদরে আমন্ত্রিত। বিবরণ এই রকম। সুগ্রীবের আজ্ঞায় হনুমান জাম্ববান বেগদর্শী ও ঋষভ রত্নভূষিত স্বর্ণকলস নিয়ে মহাবেগে যাত্রা করলেন এবং শীঘ্র চতুঃসাগরের জল নিয়ে ফিরে এলেন। পাঁচশো নদীর জলও আনা হল।
তার পর রাম সীতার সহিত রত্নময় পীঠে উপবিষ্ঠ হলে বৃদ্ধ বশিষ্ঠ, বিজয়, জাবালি প্রভৃতি পুরোহিতগণ যথাবিধি অভিষেক সম্পন্ন করলেন। জাবালি ভিন্ন মতের এক জন গুণী ঋষি। রামায়ণে তার প্রতি যে বিপুল সম্মান এবং সহিষ্ণুতা দেখা যায় তা অবাক করে দেয়।এমনই বৃহৎ পরিসর হিন্দু ধর্মের। অথচ এই সহিষ্ণুতার কোনও ছাপই নেই রাজনৈতিক আঙিনায় ক্ষমতা দখলে ব্যস্ত হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির আচরণে।
১৯৯২ সালে যেদিন বাবরি মসজিদ ভাঙা হল, সেদিন গাড়ি খুঁজে না পেয়ে সন্ধ্যার পর অযোধ্যা থেকে ফৈজাবাদ হেঁটে এসেছিলাম। রাস্তায় দেখেছিলাম ফ্রিতে খাবার-দাবার বিলোনো হচ্ছে। ঠিক যে ভাবে গান্ধীকে খুন করে এরা মিষ্টি বিলি করেছিল। সেই তথ্য যেমন পাওয়া যায় নেহরুকে লেখা প্যাটেলের চিঠি থেকে, তেমনি পাওয়া যায় সেই সময়ে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক অন্নদাশঙ্কর রায়ের ‘উত্তরবঙ্গের স্মৃতি’ বইয়ে।
এই হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িকতার বিপরীতে বিবেকানন্দ বলছেন, ‘আমি মানসচক্ষে দেখতে পাচ্ছি, এই বিবাদ বিশৃঙ্খলা ভেদ করে ভবিষ্যতের পূর্ণাঙ্গ ভারত বৈদান্তিক মস্তিষ্ক ও ইসলামীয় দেহ নিয়ে মহামহিমায় অপরাজেয় শক্তিতে জেগে উঠছে’।
ঐতিহাসিক অমলেন্দু দে ১৯৮৮ সালে চতুরঙ্গ পত্রিকায় প্রকাশিত স্বামী বিবেকানন্দের ‘সমাজ ভাবনা’ প্রবন্ধে লিখেছিলেন, ‘অদ্বৈত-বেদান্তের সূত্র ধরেই বিবেকানন্দ ভারতে “এক শ্রেণিহীন , বর্ণহীন সমাজ” গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কারা এই নতুন সমাজ গড়বেন? বিবেকানন্দের কথায়, “খাটি চরিত্র’, ‘সত্যকার জীবন’, দেবমানব’-ই পথ দেখাবেন। ‘অনন্ত প্রেম ও করুণাকে বুকে নিয়ে শত-শত বুদ্ধের আবির্ভাব প্রয়োজন’।
বুদ্ধ কেন? কারণ বুদ্ধ মানুষের কষ্টের কারণ জানতে সর্বস্ব ত্যাগ করেছিলেন। বিবেকানন্দ যখন বলেন ‘সর্বভূতে ঈশ্বর’ তখন বাবরি মসজিদেও ঈশরের অধিষ্ঠান, তাকে ভাঙা যায় না। এই খানেই হিন্দুত্বাদীদের সঙ্গে বিবেকান্দের হিন্দু ধর্মের ফারাক। বামপন্থীরাও সর্বত্যাগী নেতা-কর্মীদের ত্যাগের মধ্যে দিয়ে সাম্যবাদে পৌঁছতে চান। বিবেকানন্দও শত-শত বুদ্ধের সাধনার মধ্যে দিয়ে শ্রেণিহীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন।
লক্ষ্য এক, পথ আলাদা। বিবেকানন্দের থেকে অনেক কিছু নেওয়ার আছে বামপন্থীদের। তা না করে তাঁরা দূর সরে থেকেছেন। আর সঙ্কীর্ণ হিংসা-নির্ভর হিন্দুত্ববাদীরা দখল নিচ্ছে বিবেকানন্দের। যাদের সঙ্গে বিবেকানন্দের ভাবনার বিন্দুমাত্র মিল নেই।
(শুভাশিস মৈত্র বরিষ্ঠ সাংবাদিক, মতামত ব্যক্তিগত)
এই কলামের সব লেখা পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে